মেহেদী হাসান, খুলনা
দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পর ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়—কুয়েট। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে ক্যাম্পাসজুড়ে। শিক্ষার্থীরা হলে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন, আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেই পথে যেন শিক্ষার্থীরা না হাঁটেন—সেই চেষ্টায় ব্যস্ত।দীর্ঘ প্রায় দুই মাস ধরে বন্ধ রয়েছে কুয়েট ক্যাম্পাস। অথচ আজ রোববার শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন—তাঁরা হলে ফিরে যাবেন। সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ, বন্ধ রাখা হয়েছে প্রধান ফটক। পরিচয় নিশ্চিত করে শুধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে।বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিক সভা, বিজ্ঞপ্তি, এমনকি অভিভাবকদের মুঠোফোনে বার্তা পাঠিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে না ফেরার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে, এই উত্তেজনার মধ্যে নতুন করে আলোচনায় এসেছে একটি মামলা। হোচেন আলী নামে এক ব্যক্তি ২২ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। অভিযোগ, ১৮ ফেব্রুয়ারি তাঁকে মারধর করে সোনার চেইন ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। আদালত তদন্তের নির্দেশও দিয়েছেন।তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রশাসন পরিকল্পিতভাবে একজনকে দিয়ে এই মামলা করিয়ে তাঁদের আন্দোলন দমানোর চেষ্টা করছে।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘কুয়েট ১৯’ নামে একটি পেজ থেকে শিক্ষার্থীদের দুপুর ২টায় প্রধান ফটকে জমায়েত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। অন্যদিকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ‘লং মার্চ টু কুয়েট’ কর্মসূচি ঘোষণা করে আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে আহত হন শতাধিক শিক্ষার্থী। এরপর ক্যাম্পাসে তালা দেন শিক্ষার্থীরা, হয় রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত। অভিযোগ ওঠে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৪০০-৫০০ জনের নামে মামলা করার।কুয়েটের সংকট এখন শুধু একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ নেই—এটি ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশের শিক্ষার্থীদের মাঝেও। প্রশাসনের কঠোর অবস্থান ও শিক্ষার্থীদের অনড় মনোভাব—দুই মেরুর এই সংঘর্ষ এখন সময়ের অপেক্ষা—কোন পথে মোড় নেয় কুয়েটের ভবিষ্যৎ।