সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
সাতক্ষীরা শ্যামনগর থানায় গ্রেফতারী পরোয়ানা ছাড়াই এক ভুক্তভোগী কে আটক রাখার অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী ইউনিয়ন এর সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল করিম (৫৪) কে উপজেলা প্রেসক্লাব সংলগ্ন একটি চায়ের দোকানে বসে থাকা কালীন সময় ছাত্র সমন্বয়কদের একটি দল তাকে ধরে নিয়ে শ্যামনগর থানায় সোপর্দ করে।মঙ্গলবার ১৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিট সময় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগীর পরিবার সুত্রে জানা যায়, রেজাউল করিম ৫ নং কৈখালী ইউনিয়ন এর সাবেক চেয়ারম্যান হওয়ার সুবাদে একটি কুচক্রী মহল দীর্ঘদিন যাবত তাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করার নিমিত্তে প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিভ্রান্ত মুলক বিভিন্ন অপপ্রচারে সরব ছিলো। এ ছাড়া রেজাউল করিম কে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করা হবে বলেও তারা একাধিক মাধ্যমে হুমকি দিয়ে আসছিলো।একপর্যায় তার রেশ ধরে গত ১৭ সেপ্টেম্বর ছাত্র সমন্বয়ক পরিচয় দানকারী কিছু সংখ্যক যুবক রেজাউল করিম কে বে-আইনি ভাবে হয়রানি করার নিমিত্তে শ্যামনগর থানায় সোপর্দ করে। ভুক্তভোগী রেজাউল করিম এর ছেলে শাহারিয়ার সোহাগ বলেন, আমার বাবার বিরুদ্ধে কোন মামলা কিংবা কোন গ্রেফতারী পরোয়ানা নেই।অথচ শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মেহেদী হাসান আমার বাবাকে থানায় কেন আটক রেখেছেন তা আমার বোধগম্য নয়। তিনি বলেন, থানায় খোজ নিয়ে জানতে পারি, শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী ইউনিয়ন এর কে বা কাহারা আমার বাবা রেজাউল করিম এর নিকট টাকা পাবে এর প্রেক্ষিতে মৌখিক অভিযোগে আটক দেখানো হয়েছে।তার বিরুদ্ধে নাকি মামলার প্রস্তুতি চলছে। শাহারিয়ার সোহাগ বলেন, আমার বাবার কাছে জানা মতে কেউ টাকা পাবে না। তিনি আরও বলেন, যদি কেউ টাকা পেয়ে থাকে তার জন্য বিজ্ঞ আদালত আছে। বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তথ্য প্রমাণাদির ভিত্তিতে সে যদি দোষী হয় তার বিচার হবে।কোন প্রকার গ্রেফতারী পরোয়ানা ছাড়াই থানায় তাকে আটক রাখা হয়েছে। একটি কুচক্রী মহলকে শ্যামনগর থানায় আটকে রেখে মিথ্যা মামলার সুযোগ করে দিচ্ছে। এদিকে আটক হওয়া ভুক্তভোগী রেজাউল করিম শ্যামনগর উপজেলার ৫নং কৈখালী ইউনিয়ন এর সাবেক প্রয়াত করিম চেয়ারম্যান এর ছেলে রেজাউল করিম।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাব পাশ্ববর্তী চায়ের দোকান থেকে মাসুম নামে এক ছাত্র সমন্বয়ক এর নেতৃত্বে ৭/৮ জনের একটি দল এসে সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিট সময় রেজাউল করিম কে ধরে নিয়ে যায়। ভুক্তভোগী রেজাউল করিম কে ধরে নিয়ে যাওয়ার আগমুহূর্তে তার সাথে খারাপ আচরণ করে ঐ ছাত্ররা।এ বিষয় শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মেহেদী হাসান এর সাথে মুঠোফোনে আলাপকালে ভুক্তভোগী রেজাউল করিম কে মামলা এমনকি গ্রেফতারী পরোয়ানা ছাড়াই আটক করার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে শুনেছি আগে ৭ টি মামলা ছিলো, কিন্ত আমাদের থানা পুড়ে যাওয়ার কারনে মামলার কোন ফাইল নেই। তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে আপাতত কোন মামলা কিংবা গ্রেফতারী পরোয়ানা নেই। গ্রেফতারী পরোয়ানা ছাড়া থানায় আটক রাখা যায় কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছাত্ররা তাকে ধরে এনে থানায় সোপর্দ করেছে। তিনি আরও বলেন, কৈখালী ইউনিয়ন এর কিছু সংখ্যক মানুষ রেজাউল করিম এর নিকট টাকা পাবে তার প্রমান আছে। তার বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া হবে। এছাড়া ওসি মেহেদী হাসান বলেন, রেজাউল করিম কৈখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ এর ইউনিয়ন সভাপতি। এ বিষয় সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম মুঠোফোনে আলাপকালে বলেন, শনেছি রেজাউল করিম এর নিকট অনেকে টাকা পয়সা পাবে, সে অনেক অপকর্ম করে থাকে। গ্রেফতারী পরোয়ানা ছাড়াই আটক করা যায় কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছাত্ররা তাকে ধরে থানায় সোপর্দ করেছে পুলিশ করেনি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, টাকার ব্যাপারে বিজ্ঞ আদালতে নিষ্পত্তি হয় এ কথা সঠিক। টাকার অভিযোগ বিজ্ঞ আদালত ছাড়াই থানায় মামলা রেকর্ড করার আগে আটক রাখা কতটুকু যুক্তিসম্মত এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, থানায় রেজাউল করিম এর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হচ্ছে, আমি ভালোভাবে খোজ খবর নিয়ে আপনাকে ভালোভাবে জানাতে পারবো। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী রেজাউল করিম এর পরিবার ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য আইন আদালত সহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।