সাভার থেকে ফিরে তাজাম্মূল হুসাইন
আনন্দ বাড়াতে পরিবার নিয়ে অনেকেই ছুটছেন বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে। যাচ্ছেন বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। তবে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের ভরসা উন্মুক্ত দর্শনীয় স্থান। আর তাই ভিড় জমেছে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে। বরাবরই বৃদ্ধ থেকে শিশুর পছন্দের তালিকায় থাকে এ দর্শনীয় স্থানটি। স্মৃতিবিজাড়িত জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাতে ভিড় থাকে বরাবরই। তবে উন্মুক্ত থাকায় দর্শনার্থীদের ভিড় বেড়ে যায় কয়েকগুণ। সরেজমিনে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে দেখা যায়, জাতীয় স্মৃতিসৌধ ঢাকার সাভারে অবস্থিত। রাজধানী ঢাকা থেকে ৩৫ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে সাভার উপজেলায় ৪৪ হেক্টর জায়গা নিয়ে স্থাপন করা হয়েছে স্মৃতিসৌধ কমপ্লেক্স। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী বীর শহীদদের স্মরণে জাতির শ্রদ্ধা নিবেদনের চিরন্তন প্রতীক হিসেবে এই জাতীয় স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে মুক্তিযুদ্ধে নিহতদের দশটি গণকবর রয়েছে। জাতীয় স্মৃতিসৌধ নকশা প্রণয়ন করেছেন স্থপতি সৈয়দ মাইনুল হোসেন। এরপর থেকে দর্শনার্থীদের কথা চিন্ত করে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকে। স্মৃতিসৌধে গিয়ে দেখা যায়, হাজার হাজার দর্শনার্থী। অনেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধ ঘুরে বের হচ্ছেন, আবার কেউ প্রবেশ করছেন। তবে প্রবেশ করার সংখ্যাই বেশি। বেশিরভাগ বিনোদনপ্রেমীরা এসেছেন পরিবার নিয়ে। সাভারের ভাটপাড়া থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছেন আক্তারুজ্জামান। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চাকরির সুবাদে সাভারে বসবাস করি। পরিবার নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছি। এখানে বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র রয়েছে। কিন্তু সবগুলো বিনোদন কেন্দ্রে অতিরিক্ত খরচ করতে হয়। তবে জাতীয় স্মৃতিসৌধ সবার জন্য উন্মুক্ত। তাই জাতীয় স্মৃতিসৌধে পরিবার নিয়ে এসেছি। অপর দর্শনার্থী ফারহানা ইয়াসমিন হেনা বলেন, পোশাক কারখানায় কাজ করি। সময় পেলেই জাতীয় স্মৃতিসৌধে আসি। এখানে এলে পরাণ জুড়ে যায়। সারাদিন এখানে সময় কাটিয়ে বিকেলে বাসায় যাবো। এখানে মূলত নিম্ন আয়ের মানুষরাই বেশি আসে। এ এলাকায় থিম পার্ক ফ্যান্টাসি কিংডম ও নন্দন পার্ক রয়েছে। সেখানে ঘুরতে গেলে অতিরিক্ত টাকা গুণতে হয়। আর জাতীয় স্মৃতিসৌধে প্রবেশের কোনো টিকিট লাগে না। যে কারণে সবচেয়ে বেশি বিনোদনপ্রেমী জাতীয় স্মৃতিসৌধে আসে। এ ব্যাপারে দায়িত্বরত আনসার সদস্য বলেন, জাতীয় স্মৃতিসৌধ ছোট-বড় সবার জন্য নিরাপদ। এখানে কোনো সময় নিরাপত্তার কমতি থাকে না। এজন্য দর্শনার্থীদের সমাগম বেশি হয়। তবে দর্শনার্থী বেশি হলে বিভিন্ন স্থানে ময়লা ফেলে যায়। আমরা দর্শনার্থীদের অনুরোধ করবো, যাতে তারা জাতীয় স্মৃতিসৌধের সম্মান রাখেন। যত্রতত্র ময়লা না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলার অনুরোধ করেন তিনি। সাভার গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও জাতীয় স্মৃতিসৌধের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, জাতীয় স্মৃতিসৌধে সবসময় অসংখ্য দর্শনার্থীর সমাগম হয়। আমাদের আনসার সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়া ট্যুরিস্ট পুলিশও কাজ করছে।