সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
সনাতন ধর্মের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। সাতক্ষীরায় গত বছরের তুলনায় এবছর ৫৬ মণ্ডপে পূজা কমেছে। জেলার ৫৬২ মণ্ডপে রঙ ও প্রতিমা সাজানোর কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। ইতেমধ্যে মহালয়ের মধ্যদিয়ে দেবী পক্ষের আগমনি বার্তা দিয়েছেন মহিশাশুরুমন্দিনী মা দুর্গা। হাতে সময় নেই। তাই দিন রাত কাজ করছে প্রতিমা শিল্পিরা। মণ্ডপে মণ্ডপে নিরাপত্তার প্রস্তুতি নিচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। ৯ অক্টোবর ষষ্ঠীর মধ্যদিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হবে শারদীয় দুর্গোৎসব। সাতক্ষীরা জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের দেয়া তথ্যমতে, এবার সাতক্ষীরা জেলার সাত উপজেলা ও দুই পৌর সভায় ৫৬২ মণ্ডপ ও মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ৯৯, আশাশুনিতে ৯৫, দেবহাটায় ২১, কলারোয়ায় ৩৯, তালায় ১৯৬, কালীগঞ্জে ৪৯ ও শ্যামনগর উপজেলায় ৬৩ মণ্ডপে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষ। এখন চলছে রংতুলি আর সাজসজ্জার কাজ। তবে প্রতিবছর সাতক্ষীরায় দূর্গা পুজার সংখ্যা বাড়লেও এবছর কমেছে। গত বছর সাত উপজেলায় দেবীদূর্গা পূজা পেয়েছেন ৬১৮ মণ্ডপে। আর এবছর উদযাপিত হবে ৫৬২ মণ্ডপে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও জলাবদ্বতার কারণে মণ্ডপে পূজা কমেছে। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ সাতক্ষীরা জেলা শাখা সহ সভাপতি ও কাটিয়া কর্মকারপাড়া মন্দির কমিটির সভাপতি গৌর দত্ত বলেন, সাতক্ষীরা জেলায় ৫৬২ পূজা অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর সংখ্যালঘুদের উপর ব্যাপক অত্যাচার, দোকান ও বাড়ি ঘরে লুটপাট ও চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটেছে। ফলে আতংকিত হয়ে পড়েছে সংখ্যালঘুরা। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে শঙ্কা থাকায় এবং সাতক্ষীরা সদর ও তালা উপজেলার বিস্তৃর্ণ এলাকার বাড়ি ঘরে পানি থাকায় সাতক্ষীরা জেলায় গত বছরের তুলনায় ৫৬ মন্ডপে পূজা কমেছে। তার পরেও প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও জাকজমকপূর্ণ পরিবেশে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। নির্বিঘ্নে এবং আনন্দঘন পরিবেশে পূজা সম্পন্ন করতে বেশি বেশি করে প্রতিটা মণ্ডপে র্যাব, বিজিবি ও পুলিশ টহল জোরদার করতে পুলিশ সুপারসহ জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তিনি আরও জানান বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দরা সনাতন ধর্মাবলম্বীদেরকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।সাতক্ষীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রতিমা তৈরি, পূজা উদযাপন ও বিষর্জনকে ঘিরে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।সাতক্ষীরাস্থ বিজিবি ৩৩ ব্যাটেলিয়ানের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল আশরাফুল হক, বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং জনমনে আস্তা ও মনোবল বৃদ্ধিতে সীমান্তবর্তী এলাকার পূজা মণ্ডপগুলোতে নিরাপত্তা টহল কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। পূজা শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত বিজিবি টহল কার্যক্রম অব্যহত রাখবে। এদিকে দূর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাৎ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। এবছর দেবী দূর্গা মা আসছেন পালকিতে আর যাবেন ঘোড়ায় চড়ে।