খুলনা প্রতিনিধি

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল (বিএনপি)-এর খুলনা সরকারি মহিলা কলেজ শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমীন আরা নোভা সংগঠন থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি গত শনিবার (১২ জুলাই) বিকেলে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি ‘ঘধলসরহ অৎধ ঘড়াধ’-তে এক আবেগঘন পোস্টের মাধ্যমে এই ঘোষণা দেন।ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, আজ আমি আমার বিবেক, জ্ঞান, বুদ্ধি, আবেগ অনুভ‚তি কে বিসর্জন দিতে না পারায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল (বিএনপি) থেকে স্বেচ্ছায় অনির্দিষ্ট কালের জন্য পদত্যাগের ঘোষণা দিচ্ছি। নাজমীন নোভা তার দীর্ঘ পোস্টে রাজনীতি সম্পর্কে নিজের চেতনা ও অবস্থানের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, আমি সব সময় চেয়েছি একটি স্বাধীন, ন্যায়ভিত্তিক ও ম‚ল্যবোধসম্পন্ন রাজনীতি করতে। তিনি জানান, তিনি কোটা আন্দোলন ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন, এবং স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে রাজপথে ছিলেন। এছাড়াও তিনি ইসলামপন্থী বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার কথাও জানান। পদত্যাগের কারণ হিসেবে নাজমীন নোভা বলেন, আমি পাথর দিয়ে মানুষ হত্যা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজিকে ন্য‚নতম সমর্থন দিতেও রাজি নই। সত্যকে সত্য এবং মিথ্যাকে মিথ্যা বলার স্পষ্ট সাহস রাখতে চাই। তিনি আরও লেখেন, যারা পরিবর্তিত বাস্তবতাকে মেনে নিতে পারছেন না-তারা আজও শেখ হাসিনার দেখানো পথেই হেঁটে চলেছেন। তার রাজনৈতিক আদর্শ ও স্মৃতিকে সম্মান জানিয়ে তিনি বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ত্যাগ এবং দেশনায়ক তারেক রহমানের দেশের প্রতি ভালোবাসা আমি চিরকাল শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবো। তাঁদের প্রতি আমার বিনম্র শ্রদ্ধা ও শুভকামনা রইলো। অতঃপর তিনি ঘোষণা দেন- আজ থেকে আমি কোনো দলীয় পরিচয়ের ছায়ায় নয়—বরং একজন স্বাধীন মানুষ হিসেবে ভালোকে ভালো ও মন্দকে মন্দ বলার সাহস নিয়ে পথ চলতে চাই। মৃত্যুর আগপর্যন্ত এই নীতিতে অবিচল থাকবো বলে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। পোস্টের শেষে তিনি লেখেন, সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। বিএনপি সহ সকল রাজনৈতিক দলের ভাই ও বোনদের প্রতি আমার আন্তরিক ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা রইলো। নাজমীন নোভার পদত্যাগ সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই একে নীতিনিষ্ঠ রাজনৈতিক অবস্থানের সাহসী বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখছেন। ছাত্র রাজনীতিতে মতাদর্শিক দ্বন্দ্ব, ব্যক্তি বিবেক এবং ম‚ল্যবোধের জায়গা থেকে এই ধরণের পদক্ষেপ এখন বিরল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।