1. jitsolution24@gmail.com : admin :
  2. shantokh@gmail.com : Sharif Azibur Rahman : Sharif Azibur Rahman

ফের বৃষ্টিতে ডুবল খুলনা

  • প্রকাশের সময় মঙ্গলবার, ৮ জুলাই, ২০২৫
  • ৩ বার সংবাদটি পাঠিত

খুলনা অফিস

খুলনা মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে ২০১৮ সালে ৮২৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছিল সরকার। গত সাত বছরে ১৯৮টি নালা পুনর্নির্মাণ ও ময়ূর নদীসহ ১০টি খাল পুনঃখনন করে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি)। ২০২৪ সালের মে মাস পর্যন্ত প্রকল্পের প্রায় ৬৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ও হয়েছে। কিন্তু নগরবাসীর দুর্ভোগ কমেনি। গতকাল সোমবার থেকে আজ মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত টানা দুই দিনের ভারী বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে নগরের বাসিন্দাদের। অধিকাংশ সড়ক ও নিম্নাঞ্চল বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে পানি ঢুকে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।নগরবাসীর অভিযোগ, পানি নিষ্কাশনের মূল মাধ্যম হিসেবে পরিচিত নগরীর ২২টি খাল এখনো দখলমুক্ত ও সংস্কার করা হয়নি। নালা নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। অনেক জায়গায় নালা (ড্রেন) উঁচু করে নির্মাণ করা হয়েছে। জলাধার ভরাট হয়ে যাওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।আজ সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর বিকে রায় রোড, ডাকবাংলো মোড়, শামসুর রাহমান সড়কের বাইতিপাড়া মোড়, আহসান আহমেদ রোড, খানজাহান আলী সড়কের রয়্যাল মোড়, দোলখোলা মোড়, বয়রা পুলিশ লাইনস, নতুন রাস্তা মোড়, নতুন বাজার, টুটপাড়া ও লবণচরা এলাকায় হাঁটুপানি।যেসব সড়কে সংস্কারকাজ চলছে, সেখানে ভোগান্তি আরও বেশি। রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কর্মজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। সকালে অফিসগামী মানুষ ও শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি ছিল সবচেয়ে বেশি।খুলনা আজম খান কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী রাজিব হোসেন বলেন, ‘রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় হাঁটুপানিতে তলিয়ে গেছে। রিকশা ভাড়া বেশি দিয়ে আসতে হয়েছে।’রিকশাচালক আলম মিয়া বলেন, ‘একটু বৃষ্টি হলেই নগরীর বয়রা এলাকার সড়ক পানিতে তলিয়ে যায়। টানা বৃষ্টির কারণে গতকাল সোমবার থেকে রাস্তাঘাটে মানুষ খুব কম বের হচ্ছে। টাকা-পয়সা আয় না হওয়ায় এ দুই দিন খুব কষ্টে আছি।’খুলনা নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব বাবুল হাওলাদার বলেন, ভৈরব ও রূপসা নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি নদীতে নামতে পারছে না। উল্টো জোয়ারের সময় পানি শহরের দিকে উঠে আসছে। পানি নিষ্কাশনের মূল মাধ্যম হিসেবে পরিচিত নগরীর ২২টি খাল এখনো দখলমুক্ত বা সংস্কার হয়নি। নালা নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। অনেক জায়গায় সড়কের চেয়ে নালা উঁচু করে নির্মাণ করা হয়েছে। জলাধার ভরাট হওয়ায় দ্রুত জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। কেসিসি সূত্রে জানা গেছে, ‘খুলনা মহানগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন (প্রথম পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদন পায়। ৮২৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকার প্রকল্পের আওতায় গত সাত বছরে ১৯৮টি নালা পুনর্নির্মাণ ও ময়ূর নদীসহ ১০টি খাল পুনঃখনন করে সিটি করপোরেশন। ২০২৪ সালের মে মাস পর্যন্ত প্রকল্পে প্রায় ৬৩৪ কোটি টাকা ব্যয় হয়। তবে প্রকল্পের সব কাজ এখনো শেষ হয়নি।জানতে চাইলে কেসিসির ভারপ্রাপ্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কোহিনুর জাহানবলেন, খুলনা শহর বেশ নিচু। জোয়ারের সময় পানি ঢোকে। আবার যেসব জায়গা দিয়ে পানি নেমে যাওয়ার কথা, সেখানে গণপূর্ত বিভাগের কাজ চলছে। সড়কের কাজের জন্য যেসব বাঁধ দেওয়া হয়েছিল, সেগুলোর কিছু কিছু তারা কেটে দিয়েছে, যাতে পানি সরতে পারে।কোহিনুর জাহান আরও বলেন, ‘বৃষ্টির মধ্যে পূর্ত বিভাগের কাজ না করার জন্য ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। নালার উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় পাম্প স্টেশন ও স্লুইসগেট সংস্কারের কাজ চলছে। কাজ শেষ হলে জলজট অনেকটা কমে যাবে।’খুলনা আবহাওয়া কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ মিজানুর রহমান জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে গতকাল সকাল ৬টা থেকে আজ বেলা ৩টা পর্যন্ত খুলনায় ১০৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামীকাল বুধবার থেকে বৃষ্টিপাত কিছুটা কমতে পারে।

সংবাদটি সেয়ার করে পাশে থাকুন

একই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved  2024
Design by JIT SOLUTION