মেহেদী হাসান
খুলনার আকাশ যেন ভার হয়ে ছিল সকালে। তালতলা জামে মসজিদের সামনের রাস্তায় ছড়িয়ে ছিল শোকাবহ নীরবতা। প্রিয় সহকর্মী, ভাই, সন্তান, সহযোদ্ধাকে চোখের জলে শেষ বিদায় জানান সাংবাদিকরা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষ। বাংলাভিশনের ন্যাশনাল ডেস্ক ইনচার্জ শাফিন খান আর ফিরবেন না, এটা যেন বিশ্বাস করতে পারছিল না কেউ।
মঙ্গলবার সকাল ১০টায় মহানগরীর তালতলা জামে মসজিদে মরহুমের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে জানাজা পড়ান সরদার জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ সালমান বিন আমীন। চারপাশে স্তব্ধতা—শুধু কণ্ঠরুদ্ধ দোয়া আর ফুসফুস ভেঙে ওঠা কান্নার শব্দ।
জানাজায় অংশ নেন খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন, জামায়াতে ইসলামের আমীর মাওলানা মাহফুজুর রহমান, এনসিপি’র মুখ্য সংগঠক আহম্মদ হামিম রাহাত, বিএফইউজে ও প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বাংলাভিশনের সহকর্মী চিফ রিপোর্টার জাহাঙ্গীর আকন্দ, সিনিয়র সাংবাদিক দিদারুল আলম, বিশেষ প্রতিবেদক আহমেদ সারোয়ার, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর নিশান আব্দুল্লাহ, খুলনা ব্যুরো চিফ আতিয়ার পারভেজ, সময় টিভির সাংবাদিকরা, খুলনার স্থানীয় রিপোর্টিং পরিবার, ক্যামেরা পার্সন, ফটো সাংবাদিক, আইনজীবী, ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী ও শতাধিক শুভাকাঙ্ক্ষী।
জানাজা শেষে টুটপাড়া কবরস্থানে শাফিন খানের মরদেহ দাফন করা হয়। চোখের জলে পরিবারের সদস্যরা বিদায় জানান প্রাণপ্রিয় সন্তান ও ভাইকে। সহকর্মীরা ফুলেল শ্রদ্ধা জানান। কবরের পাশে দাঁড়িয়ে অনেকে বারবার বলছিলেন—“শাফিন ভাই ছিলেন সত্যিকারের একজন পেশাদার, বিনয়ী ও সংগ্রামী মানুষ।”
প্রতিদিন নিউজরুমে যিনি ছিলেন প্রাণ, ক্যামেরার পেছনে দৃঢ় ও নির্ভরতার প্রতীক, তার এমন হঠাৎ বিদায় সহকর্মী মহলে নেমে এসেছে গভীর শোক। একজন সংগঠক, একজন লেখক, একজন বন্ধু—সব মিলিয়ে আমরা হারালাম আমাদের ভরসা,—বলছিলেন এক সহকর্মী।
প্রসঙ্গত, শাফিন খান দীর্ঘদিন খুলনায় সাংবাদিকতা করেছেন। তিনি গণমাধ্যমে ন্যায়-সত্য ও মানুষের কথা তুলে ধরার অগ্রভাগের যোদ্ধা ছিলেন।
মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে জানাজার পর বিশেষ দোয়া করা হয়। খুলনার সাংবাদিক সমাজসহ বিভিন্ন মহল তার আত্মার শান্তি কামনায় শোক প্রকাশ করেছে।