⬛ ক্ষমতার অপব্যবহার
⬛ অপমান অপদস্ত হয়ে আত্মহত্যা
⬛ নয়নকে হারিয়ে দিশেহারা
⬛ ক্ষুব্ধ প্রতিবেশী ও স্বজনরা
⬛ তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি
মোঃ ইব্রাহিম খলিল
সাতক্ষীরায় “চেয়ারম্যান আজিজুরের” একতরফা বিচার ব্যবস্থায় অপমান অপদস্ত হয়ে এক যুবক আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, পারিবারিক কলহ কে কেন্দ্র করে কালিগঞ্জ উপজেলার ৬ নং নলতা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পরিষদে সালিশি বসান। এ সময় একতরফাভাবে সালিশি কার্যক্রম পরিচালনা করায় অপমানের শিকার হয় আরিফুল ইসলাম নয়ন ও তার পরিবারের লোকজন। সেকারণে সে অপমান সইতে না পেরে গত ১৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার আনুমানিক রাত ১ টার সময় নয়ন পরিবারের অগোচরে আমগাছের সাথে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে। আরিফুল ইসলাম নয়ন (২৩) দেবহাটা উপজেলার আস্কারপুর গ্রামের রেজাউল গাজীর ছেলে। নয়নের আত্মহত্যার কারণ হিসেবে তার পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী কালিগঞ্জ উপজেলার ৬নং নলতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান পাড়ের একতরফা বিচারকে দায়ী করছেন। নয়নের পিতা রেজাউল গাজী জানান, আমার ছোট ছেলে নয়নকে বিয়ে দিয়েছি নলতা মাঘুরালী গ্রামের প্রয়াত মোহাম্মাদ আলী সরদারের নাতনি জান্নাতুনের সাথে। মেয়েটি এতিম ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী জেনেও আমরা মেনে নিয়েছিলাম। আজ থেকে দুই সপ্তাহ আগে বৌমা আমার স্ত্রী ও বড় বৌমার সাথে ঝগড়া হয়। একপর্যায় তার মামা সাদ্দামকে খবর দিলে তারা ঐদিন এসে বৌমাকে নিয়ে যান। পরবর্তীতে তারা কালিগঞ্জ নলতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমানের কাছে বিচার দেয়। এর প্রেক্ষিতে চেয়ারম্যানের ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা ১৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে বসাবসি করি। সেখানে চেয়ারম্যান আমাদের কোন কথা না শুনে উল্টো শুধুমাত্র মেয়েদের পক্ষের কথা শুনে একতরফা বিচার করে। সালিশি বিচার কালীন সময় চেয়ারম্যান অনেক অপমানজনক কথা বার্তা বলে। এসব কারণে রাতে আমার ছেলে নয়ন আত্মহত্যা করেছে। নয়নের প্রতিবেশী শাকিল বলেন, চেয়ারম্যান কর্তৃক সালিশি বিচারে আমিও উপস্থিত ছিলাম। আমরা অনুরোধ করা সত্ত্বেও চেয়ারম্যান আমাদের কোন কথা শোনেনি। সবার সামনে নয়নকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার পাশাপাশি তার হাত-পা ভেঙ্গে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। নয়ন বিচার শেষে খুবই ভেঙ্গে পড়ে, চেয়ারম্যানের একপাক্ষিক বিচারের কারণে আমরা নয়নকে হারালাম। নয়নের চাচাতো ভাই বাদশা জানান, নয়নের বড় ভাই মোঃ আশরাফুল দুবাই তে কাজ করার সুবাদে গত রাতে নয়নের জন্য বড় ভাই আশরাফুল জামা, জুতা, মোবাইল, বডি স্প্রে সহ বিভিন্ন সামগ্রী পাঠিয়েছেন। আর সকালে আমরা নয়নের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পাচ্ছি। এইসব পোশাক সামগ্রী নয়নের আর ব্যবহার করা হলোনা। এদিকে, সকালে নয়নের পরিবারের লোকজন নয়নকে খুঁজে না পেয়ে বাগানের দিকে যেয়ে দেখতে পায় নয়ন রশিতে গলায় ফাঁস নিয়ে আমগাছের ডালে ঝুলছিল। নয়নের ঝুলন্ত মরদেহ দেখে দেবহাটা থানা পুলিশকে খবর দিলে সকাল ৯.৩০ মিনিট সময় পুলিশ নয়নের মরদেহের প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের লাশ সাতক্ষীরায় মর্গে প্রেরণ করেন। এ ঘটনায় নয়নের পরিবার এবং স্বজনরা সুষ্ঠু তদন্ত শেষে দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।