ইব্রাহিম খলিল,সাতক্ষীরা
সাতক্ষীরায় যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে মারপিট করা ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামি প্রকাশ্যে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। অভিযোগ আছে, আসামি আব্দুল বারী সাতক্ষীরা সদর থানার আশপাশ বাজারঘাট ঘুরে ফিরে চললেও কোন ভ্রুক্ষেপ নেই পুলিশ প্রশাসনের। সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে শুরু করে সড়কে মটর সাইকেল যোগে প্রতিদিন যাতায়াত করার পাশাপাশি নিজের প্রয়োজনের তাগিদে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে গ্রেফতারী পরোয়ানা ভুক্ত আসামি আব্দুল বারী। এমন অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী হাসনা হেনা। প্রসঙ্গত, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মিয়া সাহেবের ডাঙ্গা গ্রামের প্রয়াত হানিফ সরদার এর ছেলে আব্দুল বারী মুসলিম রীতি অনুযায়ী একই উপজেলার মিয়া সাহেবের ডাঙ্গা গ্রামের শেখ গোলাম রহমান এর কন্যা মোছাঃ হাসনা হেনা কে বিবাহ করেন। তাদের সংসার জীবনের এক পর্যায় নেমে আসে অশান্তি কলহ। কতক ব্যক্তির কুপরামর্শে আব্দুল বারী তার স্ত্রীর কাছে যৌতুকের টাকা দাবি করেন। দাবি পুরন না হওয়ায় স্ত্রী হাসনা হেনা কে বেধড়ক মারপিট করে। এ ঘটনায় সাতক্ষীরা থানায় গত ২৫-০৭-২৪ ইং তারিখ “২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধিত ২০২০ এর ১১ (গ) /৩০” ধারায় মামলা রুজু করা হয় যার মামলা নং ৪০। মামলা সুত্রে প্রকাশ, ভুক্তভোগী হাসনা হেনা ৩৬ বছর পূর্বে মুসলিম শরীয়ত মোতাবেক আব্দুল বারীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। ঘর সংসার করার কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর তাদের কোল জুড়ে আসে পুত্র সন্তান হাসানুর বোরহান। কিন্ত তাদের এই সুখ বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। স্বামী আব্দুল বারী (৬৭) পরিবারের অগোচরে গত ১৯-১১-২৩ ইং তারিখ সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাগানবাড়ি গ্রামের আব্দুল্লাহ গাজীর কন্যা সাকিলা খাতুন (৩৩) কে দ্বিতীয় বিবাহ করেন। দ্বিতীয় স্ত্রী সাকিলা খাতুন এবং একই উপজেলার মিয়া সাহেবের ডাঙ্গা গ্রামের প্রয়াত আব্দুল ওহাব এর স্ত্রী মাছুরা খাতুন এর পরামর্শে আব্দুল বারী প্রথম স্ত্রী হাসনা হেনার নিকট ৫ লক্ষ টাকা দাবি করেন। হাসনা হেনা যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আব্দুল বারী ও দ্বিতীয় স্ত্রী সাকিলা খাতুন এবং মাছুরা খাতুন ভুক্তভোগী কে মানসিক ভাবে নির্যাতন করা অব্যাহত রাখে। ঘটনার একপর্যায় গত ইং ১৫-০৭-২৪ তারিখ আব্দুল বারী প্রথম স্ত্রী হাসনা হেনার কাছে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করেন। দাবিকৃত টাকা না পেয়ে ভুক্তভোগী হাসনা হেনা কে বসত ঘরের মধ্যে তার স্বামী আব্দুল বারী লাঠিপেটা করে শরীরের বিভিন্ন অংশে ফুলা জখম করেন। এ সময় দ্বিতীয় স্ত্রী সাকিলা খাতুন ও মাছুরা খাতুন ভুক্তভোগী হাসনা হেনার বুকে পেটে পা দিয়ে দুবাইয়ে বেদনাদায়ক ফুলা জখম করে এবং চুল ধরে টানাটানি করে। এ ঘটনায় সাতক্ষীরা সদর থানার ৩ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। এদিকে মামলার প্রথম আইও সাব ইন্সপেক্টর নিরস্ত্র সেলিম রেজা পলাতক থাকা আসামি আব্দুল বারী কে ধরতে সক্ষম হয়নি। পরবর্তীতে উল্লেখিত মামলার আইও পরিবর্তন করে তার জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয় এস,আই আব্বাস কে। কিন্ত এস,আই আব্বাস অজ্ঞাত কারণে আসামি আব্দুল বারী কে ধরতে সক্ষম হয়নি। এ বিষয় সাতক্ষীরা সদর থানার দায়িত্বরত মামলার “আইও” এস,আই আব্বাস এর সাথে মুঠোফোনে আলাপকালে বলেন, আব্দুল বারী দীর্ঘদিন পলাতক থাকায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই মামলার প্রথম আইও ছিলেন এস,আই, নিরস্ত্র সেলিম রেজা। পরবর্তীতে আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, আব্দুল বারী প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানোর ব্যাপারে মামলার বাদী হাসনা হেনা আমাকে অবহিত করিনি। অপর এক প্রশ্নে তিনি বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামি আব্দুল বারী কে আটক করা হবে।