এনামুল কবীর লিটন
যশোরের মনিরামপুর উপজেলার পশ্চিম অঞ্চলের ৬টি ইউনিয়নের কৃষকরা আমন ধানে খোলপচা ও পাতামোড়া পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এ রোগ ও পোকা দমনে কীটনাশক ব্যবহার করেও সুফল মিলছে না। ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন চাষিরা। সরেজমিনে দেখা গেছে, জমিতে খোলপচা ও পাতা মোড়া পোকা ধান গাছের পাতার রস খেয়ে সাদা বর্ণ করে ফেলেছে এবং নিচের অংশে পচন ধরেছে। খালিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল মোতালেব, হাফিজুর রহমান, হানুয়ার গ্রামের টগর, কাদের, শফিকুল, মাহাবুর, ঝাঁপা গ্রামের বাবু, বাবুল আখতার ও খলিল জানান, কীটনাশক ব্যবহার করেও কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। চালুয়াহাটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য আবুল হোসেন জানান, তিনি ৫২ শতকের ৫ বিঘা ৫১ জাতের আমন ধানের চাষ করেছেন। ধান গাছের গঠনে জমি ভরপুর হয়ে গেছে। কিন্তু হঠাৎ ধান গাছের পাতামোড়া পোকায় খেয়ে সাদা বর্ণ করেছে। এছাড়া খোলপচা রোগও দেখা দিয়েছে। এতে করে উৎপাদন ব্যাহত হবার আশঙ্কা করছেন তিনি। মশ্মিমনগর ইউনিয়নের ফারুক, মিজানুর, হরিহরনগরের ইলিয়াস, নছিম, খেদাপাড়া ইউনিয়নের গালদা গ্রামের আজিজুর, মোশারফ ছিদ্দিকসহ অনেক কৃষক জানিয়েছেন, ঘন ঘন রোদ ও অতিবৃষ্টির কারণে তাদের ধান ক্ষেতে পচা ও পাতা মোড়া পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে মনিরামপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উদ্ভিদ সংরক্ষণ ও পোকামাকড় দমন কর্মকর্তা তরিবুর রহমান প্রতিদিনের কণ্ঠকে জানান, এ মৌসুমে ধানে এ পোকাগুলো দেখা যায়। তবে জমিতে গাছের ডাল ও পাতা পুতে রাখলে পাখি বসে ওই পোকাগুলো খেয়ে ফেলে। এ ছাড়া তিনি কৃষকদের কার্বারিল পাউডার (মাঝারি বিষাক্ত কার্বামেট কীটনাশক) ওষুধ জমিতে ছিটানোর জন্য পরামর্শ দেন। কৃষি বিভাগ প্রতিদিনের কণ্ঠকে জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২২ হাজার ৬৭০ হেক্টর জমি। কিন্তু চাষ হয়েছে ২২ হাজার ৬৪৫ হেক্টর জমিতে। গত দুই দফা বৃষ্টির পানিতে ধান তলিয়ে ক্ষতি হয়েছে ৪ হাজার ৪৬৭ হেক্টর জমির ফসল। তার মধ্যে ঝাঁপা ইউনিয়নের ৩টি ব্লকে হাইব্রিডসহ ৪৯, ৫১, ২৩, ৯৮, ৭৫ বি আর ১০ ও স্বর্ণ বিভিন্ন জাতের ১ হাজার ৯৮৬ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। এছাড়া রোহিতা ইউনিয়নে ১ হাজার ৫৭৩ হেক্টর, মশ্মিমনগর ইউনিয়নে ১ হাজার ২৬৬ হেক্টর, চালুয়াহাটি ইউনিয়নে ১ হাজার ৪৫১ হেক্টর, হরিহরনগর ইউনিয়নে ১ হাজার ৭৪০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।