1. jitsolution24@gmail.com : admin :
  2. shantokh@gmail.com : Sharif Azibur Rahman : Sharif Azibur Rahman

আটকে পড়া ১৩ ক্রুর ব্যয় দিচ্ছে না সৌদি এয়ারলাইনস

  • প্রকাশের সময় রবিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২০
  • ১০৩ বার সংবাদটি পাঠিত

কণ্ঠ ডেস্কঃ সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিমান সৌদি এয়ারলাইনসে কর্মরত ১৩ জন বাংলাদেশি নারী কেবিন ক্রুর হোটেল খরচ দিচ্ছে না প্রতিষ্ঠানটি। হোটেল খরচসহ অন্যান্য ব্যয় নির্বাহের কথা বলে ১৫ এপ্রিল ঢাকার একটি হোটেলে কোয়ারিন্টেনে রাখা হয় ওই কর্মীদের। বিপাকে থাকা কর্মীদের পাশে প্রতিষ্ঠানটি দাঁড়ায়নি।সৌদি এয়ারলাইনসের ঢাকা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে বলেছেন, চুক্তিভিত্তিক এসব কর্মীর ব্যয় বহন করার দায় নেই তাঁদের। যদিও ওই সব কর্মীর সঙ্গে গত মার্চে নতুন চুক্তি করেছে সৌদি এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ। এতেই সংকট আরও বেড়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে এই ১৩ জন কেবিন ক্রুর দায়িত্ব আসলে কে নেবে?করোনাভাইরাসের কারণে সৌদি এয়ারলাইনস প্রায় এক মাস ধরে ঢাকাসহ বিভিন্ন রুটে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ রেখেছে। তবে তাদের একটি বিশেষ ফ্লাইট ৩২২ জন যাত্রীকে নিয়ে গত ১৫ এপ্রিল জেদ্দা থেকে ঢাকায় আসে। ফিরতি ফ্লাইটে এর পাইলট ও কো-পাইলটেরা চলে গেলেও ১৩ জন বাংলাদেশি নারী কেবিন ক্রুকে কোয়ারেন্টিনে রাখার কথা বলে রাজধানীর উত্তরায় হোটেল মুনসুন ইনে রাখা হয়েছে। এর আগে সৌদি এয়ারলাইনসের ক্রুরা ঢাকায় এলে পাঁচ তারকা সমমানের হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করো হতো। তবে নিয়ম অনুযায়ী কোয়ারিন্টিনে থাকা অবস্থাকে অন ডিউটি বা দায়িত্বে কর্মরত আছেন এমনটি গণ্য করার কথা। এ সময় হোটেল ও খাবার খরচ সৌদি এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষের দেওয়ার কথা থাকলেও ক্রুরা নিজেরাই দিচ্ছেন এ ব্যয়। প্রতিদিন একজন ক্রুকে শুধু হোটেল ভাড়াই দিতে হচ্ছে সাড়ে তিন হাজার টাকা।
Lifebuoy Soapসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র প্রথম আলোকে জানিয়েছে, গত ৩০ মার্চ সৌদি এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঢাকা অফিসে যুক্ত এমন বেশ কয়েকজন ক্রুকে জেদ্দা কার্যালয় সংযুক্ত করে চিঠি দেয়। যে ১৩ জন নারী ক্রু ঢাকায় আটকা পড়েছেন তাঁরাও এই চিঠি পেয়েছেন। নতুন করা চুক্তি অনুযায়ী ক্রুদের চাকরির কার্যালয় হবে জেদ্দা। সে কারণে ঢাকায় কখনো এলে তাঁদের যাবতীয় থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করবে সৌদি এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ। চুক্তিভিত্তিক কর্মী বলেই হুট করে চাকরি থেকে ছাঁটাই করার সুযোগও নেই। আটকে পড়া ক্রুদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করার কোনো চিঠিও দেওয়া হয়নি বলে ওই সূত্রের দাবি। আর সে কারণে অভিযোগ উঠেছে আন্তর্জাতিক নিয়ম লঙ্ঘন করে সৌদি এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ অমানবিক আচরণ করছে বাংলাদেশি ১৩ নারী ক্রুর সঙ্গে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে সৌদি এয়ারলাইনসের ঢাকা অফিসের ব্যবস্থাপক (কেবিন ক্রু) তানজিনা আলম চৌধুরী আজ রোববার মুঠোফোনে আলোকে বলেন, ১৩ জন কেবিন ক্রু স্বেচ্ছায় ‘সাসপেন্ড অর্ডার’ (বরখাস্ত) নিয়ে ঢাকায় চলে এসেছেন। ১৩ জন ক্রু সবাই চুক্তিভিত্তিক। স্বেচ্ছায় ফ্লাইটে তাঁরা ঢাকায় এসেছেন। কোয়ারেন্টিনে তাঁরা হজ ক্যাম্পে থাকতে চাননি। তাঁরা নিজেরাই হোটেল মুনসুন ইনে থাকতে চেয়েছেন। তাই এই হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি রুমের ভাড়া দেড় হাজার টাকা। সাসপেন্ড থাকায় তাঁরা সৌদি এয়ারলাইনসের কোনো বেনিফিট (সুবিধা) পাবেন না।’এদিকে হোটেল মুনসুন ইন কর্তৃপক্ষ প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন প্রতিজন ক্রুর শুধু এক দিন থাকার ব্যয় বা হোটেল ভাড়া নিচ্ছেন সাড়ে তিন হাজার টাকা।এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বাংলাদেশ বেসামরিক কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল মোহাম্মদ মফিদুর রহমান বলেন, ১৩ জন কেবিন ক্রু সাসপেন্ড রয়েছেন বলে তাঁদের সৌদি এয়ারলাইনসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশে বিশেষ ফ্লাইটে এলেও তাঁদের সঙ্গে অনুমতিপত্র ছিল না। ওই রাতেই তাঁদের সৌদি আরব ফেরত পাঠানো হতো। পরে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা শর্তে হোটেলে পাঠানো হয়েছে। কোয়ারেন্টিনে থাকার বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে। কিন্তু অনুমতি ছাড়া বিশেষ ফ্লাইটে পাঠানোয় বেবিচকের পক্ষ থেকে সৌদি এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হবে। ঢাকায় হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার সময় সব দায়িত্ব সৌদি এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষের বহন করা উচিত বলে তিনি জানান।

জানা গেছে, জেদ্দা থেকে ১৫ এপ্রিল রাত ৮টা ২০ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইনসের এসভি ৩৮০৬ নম্বর বিশেষ ফ্লাইটে ১৩ জন ক্রুসহ ৩২২ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকা আসে। এসব যাত্রীর মধ্যে দুই শতাধিক যাত্রী ছিলেন সৌদি আরবে কারাবন্দী বাংলাদেশি। ১০০ জন ওমরাহ পালন করতে গিয়ে সৌদি আরবে আটকা পড়েন। বিশেষ ফ্লাইটে ১৩ জন কেবিন ক্রুর সবাই বাংলাদেশি হিসেবে সৌদি এয়ারলাইনসে বেশ কয়েক বছর ধরে কাজ করছেন। নিয়ম অনুযায়ী সৌদি এয়ারলাইনসের কেবিন ক্রুরা তাঁদের হোম স্টেশনে (নিজ দেশ) ফ্লাইটে এলে সৌদি এয়ারলাইনসের নির্ধারিত হোটেল (পাঁচ তারকা হোটেল) থাকতে দেওয়া হয়। কিন্তু হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার পর সৌদি এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ ১৩ জন ক্রুকে উত্তরার হোটেল মুনসুন ইনে নেয়। এর পর থেকে চার দিন ধরে হোটেল কর্তৃপক্ষকে প্রতিদিন একেকজন ক্রুকে রুম ভাড়া বাবদ ৩ হাজার ৫০০ টাকা বিল দিতে হচ্ছে। গত ৩০ মার্চের পর এসব ক্রু সৌদি এয়ারলাইনসের জেদ্দা কার্যালয়ের অধীনে কর্মরত ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মুনসুন হোটেলে ১৩জন ক্রু নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছেন। তাঁদের বাসা থেকে খাবার পাঠানো হলেও হোটেলের ভেতরে সেই খাবার নিতে দেওয়া হচ্ছে না।

হোটেল মুনসুন ইনের ব্যবস্থাপক এন. আরিয়ান প্রথম আলোকে বলেন, ১৫ এপ্রিল দিবাগত রাত একটার দিকে ১৩ জন ক্রু মুনসুন ইনে আসেন। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে হোটেলটি ২৫ মার্চ থেকে বন্ধ থাকলেও সৌদি এয়ারলাইনসের ঢাকা অফিসের কর্মকর্তা (ব্যবস্থাপক, কেবিন ক্রু) তানজিনা আলম চৌধুরী আন্ডারটেকেন (জিম্মায়) দেন। এ বিষয়ে একটি চিঠি পেয়ে প্রশাসন ও স্থানীয় থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে অনুমতি নিয়ে ১৩ জনকে হোটেলে থাকতে দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে পুলিশের উত্তরা জোনের সহকারী কমিশনার শচীন মল্লিক বলেন, সৌদি এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ মুনসুন ইন হোটেলে ১৩ জন ক্রুকে কোয়ারেন্টিনে রেখেছে। তাঁদের সব খরচ ওই বিমান সংস্থা বহন করবে বলে তাঁদের জানানো হয়েছে।

সংবাদটি সেয়ার করে পাশে থাকুন

একই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved  2024
Design by JIT SOLUTION