ইনামুল হক
চলতি পাট মৌসুমে মনিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পাট কাটা, পানিতে জাগ দেয়া ও পাটকাঠি থেকে পাটের আঁশ ছাড়ানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কিষাণ-কিষাণীরা। অন্য বছরের তুলনায় এবার পাটের দাম কম হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি নেই বললেই চলে। শনিবার দিনব্যাপী উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এ সপ্তাহে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় পাট কেটে তা বিভিন্ন জলাশয়ে জাগ দিচ্ছে কৃষকরা। চাষিরা পাট কেটে নদী, নালা, খাল, বিল ও ডোবায় জাগ দেয়া, আঁশ ছাড়ানো এবং হাট-বাজারে তা বিক্রিসহ সব মিলিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবার কোথাও কোথাও দেখা গেছে নারী-পুরুষের অংশ গ্রহনে পাট থেকে আঁশ ছাড়ানোর দৃশ্য। অনেক স্থানে কৃষক খরচ বাঁচাতে রিবোন রেটিং পদ্ধতিতে আঁশ ছাড়ানোর জন্য কৃষি বিভাগ কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করলেও কৃষকরা তাতে আগ্রহ নয়। মনিরামপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। পাট চাষের শুরুতে বৃষ্টিপাত কম থাকায় অনেক স্থানে চাষ কিছুটা দেরিতে শুরু হলেও ফলন ভালো হয়েছে। ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকরা খুশি হয়েছে। কৃষকের মুখে এখন হাঁসির ঝিলিক। উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে ভালো মানের পাটের মূল্য পনের শত টাকা মণ (৪০ কেজি)। ও নিম্ন মানের পাটের মূল্য চৌদ্দ শত টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ফলে ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। সে কারনে অনেক কৃষকরা বলেন পাটের দাম কম হওয়ায় বিপাকে পড়ে যাচ্ছি, কারন পাট চাষে খরচ প্রচুর যা পাটের আশ ও পাটকাটি বিক্রয় করে খরচ বাচবে না। সে কারনে পাট চাষীদের মাঝে এখন পাট চাষে আগ্রহ কমে যেতে পারে। । এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সহিত কথা বল্লে তিনি জানান এবার গত বছরের তুলনায় আমাদের এলাকায় পাটের আবাদ অনেক বেশি হয়েছে। আশা করছি বাম্পার ফলন হবে। এলাকার কৃষকরা যাতে পাট যথাযথভাবে উৎপাদন করতে পারে এবং স্বল্প খরচে উচ্চ ফলনশীল পাট উৎপাদন করতে পারে এ জন্য আমরা প্রতিনিয়ত কৃষকদের নিকট গিয়ে পরামর্শ প্রদান করছি। বিভিন্ন রোগবালাই থেকে পাটকে মুক্ত রাখতেও পরিমিত পরিমান ওষুধ প্রয়োগের পরামর্শ দিয়ে আসছি। গত বছরের চেয়ে এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি জমিতে পাট চাষ হয়েছে। পাটের ফলনও হয়েছে বাম্পার। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পাটের দাম ও অনেক বেশি। পাটের নায্য মূল্য পেলে চাষিদের মাঝে পাট চাষে আগ্রহ বাড়বে বলে তিনি মনে করেন।