1. jitsolution24@gmail.com : admin :
  2. shantokh@gmail.com : Sharif Azibur Rahman : Sharif Azibur Rahman

বাংলা নববর্ষ , আজ বাঙ্গালির প্রাণের উৎসব

  • প্রকাশের সময় সোমবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২০
  • ২০৪ বার সংবাদটি পাঠিত

মুস্তাকিম আল রাব্বি সাকিব: বাংলা সনের প্রথম মাস বৈশাখ। চৈত্রের শেষে বৈখাশের আগমনে প্রায় সব বাঙালির মাঝেই নতুন বছর বরণের নানা প্রস্তুতি ও অনুষ্ঠান ল্য করা যায়। আজ পহেলা বৈশাখ। প্রতি বছর নানা প্রকার আচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালিত হয়ে থাকে কিন্তু বর্তমান বিশ্ব সহ আমাদের প্রণের বাংলাদেশ আজ করোনা নামক অদৃশ্য ভয়াবহ এক জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করে চলেছি যার কারণে পুরো বাঙ্গালী জাতি আজ ঘরে বন্দি। নেই বড় সড় কোন অনুষ্ঠানের অঅয়োজন ছায়ানটে নেই আজ মানুষের কলরব,ঢাবি তে নেই আজ মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি,এ বছর হয়তো কারোর দেখা হবে না লাল শাড়ি ও সাদা পাঞ্জাবি পরিহিত কপোত কপোতি দের। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মত ঘরে থাকুন এবং ডিজিটাল মাধ্যমে পালন করুন পহেলা বৈশাখ নববর্ষ বরণের পূর্বে বাংলা সনের মাস, সপ্তাহ নামের উৎপত্তি সম্পর্কে সংপ্তি আকারে আলোচনা করা হলোঃ- ১৫৫৬ খ্রিষ্টাব্দের ৫ নভেম্বর সম্রাট আকবর দ্বিতীয় পানি পথের যুদ্ধে হিমুকে পরাজিত করে সিংহাসন লাভ করেন। তখন থেকেই রাজস্ব আদায়কে সহজ ও তার বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখার জন্য তিনি তারিখ-ই এলাহি সনটির প্রবর্তন করেন। প্রথমে এটি তারিখ-ই এলাহি নামে পরিচিতি লাভ করে এবং পরে তা বঙ্গাব্দ নামে পরিচিত হয়। সম্রাট আকবর ১৫৮৪ খ্রিষ্টাব্দে তার রাজত্বের ঊনত্রিশতম বর্ষে বাংলা বর্ষপঞ্জি প্রবর্তন করেন। ১৫৮৪ খ্রিষ্টাব্দের ১০ বা ১১ মার্চ নতুন এই সালটি তারিখ-ই এলাহি থেকে বঙ্গাব্দে পরিচিতি পায়।
বাংলা বর্ষপঞ্জি প্রবর্তনের ফলে বাংলায় এক নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়। এর আগে মোগল সম্রাটরা রাজস্ব আদায়ের জন্য হিজরী বর্ষপঞ্জি অনুসরণ করতেন। কিন্তু এতে কৃষকরা বিপাকে পরতেন। আবুল ফজল আকবরনামা গ্রন্থে বলেন, হিজরী বর্ষপঞ্জি অনুসরণ করা কৃষকদের জন্য খুবই সাংঘর্ষিক ছিল। কারণ চন্দ্র ও সৌর বর্ষের মধ্যে ১১ থেকে ১২ দিনের ব্যবধান ছিল, ফলে দেখা যায় ৩০ সৌরবর্ষ ৩১ চন্দ্র বর্ষের সমান ছিল। তখন কৃষকরা সৌরবর্ষ অনুযায়ী ফসল সংগ্রহ করত কিন্তু চন্দ্রবর্ষ অনুযায়ী তাদের কাছ থেকে রাজস্ব আদায় করা হতো।ফলে এটি কৃষকদের জন্য শুধুই বিড়ম্বনার ছিল। তাই আকবর তার রাজত্বের শুরু থেকেই দিন-তারিখ গণনার সুবিধার্থে একটি বিজ্ঞানভিত্তিক, আধুনিক ও যুগোপযোগী বর্ষপুঞ্জির প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করেন। এজন্য আকবর জ্যোতির্বিদ ও বিজ্ঞানী আমির ফতুল্লাহ শিরাজীকে হিজরী বর্ষপঞ্জি সংস্কার করে তা যুগোপযোগী করে তোলার দায়িত্ব অর্পণ করে। সে সময় বঙ্গে শক বর্ষপঞ্জি অনুসরণ করা হতো আর চৈত্র ছিল শক বর্ষের প্রথম মাস।বিজ্ঞানী শিরাজী ৯৬৩ হিজরী সালের শুরু থেকে বাংলা বর্ষ ৯৬৩ অব্দের সূচনা করেন। ৯৬৩ অব্দের পূর্বে বাংলা বর্ষে আর কোনো সন বিদ্যমান ছিল না। আরবি মুহাররম মাসের সাথে বাংলা বৈশাখ মাসের সামঞ্জস্য থাকায় বাংলা অব্দে চৈত্রের পরিবর্তে বৈশাখকে প্রথম মাস করা হয়। তারিখ-ই এলাহি’র সূচনা থেকে ৪৫৬ বছর পর বাংলা (১৪১৯) ও হিজরী (১৪৩৩) বর্ষপঞ্জিতে প্রায় ১৪ বছরের ব্যবধান পাওয়া যায়। অর্থাৎ হিজরী সাল বাংলা সন থেকে প্রায় ১৪ বছর এগিয়ে। তার কারণ হিজরী বর্ষ হচ্ছে চন্দ্র নির্ভর আর বাংলা বর্ষ হচ্ছে সূর্যনির্ভর। চন্দ্রবর্ষ হয় ৩৫৪ দিনে, আর সৌরবর্ষ হয় ৩৬৫ বা ৩৬৬ দিনে।অর্থাৎ চন্দ্র বর্ষ থেকে সৌরবর্ষ ১১ বা ১২ দিন এগিয়ে। তবে উভয়ই সৌরবর্ষ ভিত্তিক হওয়ায় বাংলা ও গ্রেগরিয়ান বর্ষের মধ্যে পার্থক্য নিতান্তই কম। তারিখ-ই এলাহি’র সূচনার সময় বাংলা ও গ্রেগরিযান বর্ষের মধ্যে পার্থক্য ছিল ১৫৫৬-৯৬৩ = ৫৯৩ বছর। অর্থাৎ বাংলা সনের সাথে ৫৯৩ যোগ করলে খ্রিষ্টীয় সন পাওয়া যায়।বঙ্গাব্দের বারো মাসের নামকরণ করা হয়েছে নত্রমন্ডলের চন্দ্রের আবর্তনে বিশেষ তারার অবস্থানের উপর ভিত্তি করে। এই নামসমূহ গৃহীত হয়েছে জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ক প্রাচীন গ্রন্থ ‘সূর্যসিদ্ধান্ত’ থেকে। বাংলা মাসের এই নামগুলো হলোঃ- বৈশাখ- বিশাখা নত্রের নাম অনুসারে, জ্যৈষ্ঠ- জ্যেষ্ঠা নত্রের নাম অনুসারে, আষাঢ়- উত্তর ও পূর্ব আষাঢ়া নেেত্রর নাম অনুসারে, শ্রাবণ- শ্রবণা নত্রের নাম অনুসারে, ভাদ্র- উত্তর ও পূর্ব ভাদ্রপদ নত্রের নাম অনুসারে, আশ্বিন- আশ্বিনী নত্রের নাম অনুসারে, কার্তিক- কৃত্তিকা নত্রের নাম অনুসারে, অগ্রহায়ণ (মার্গশীর্ষ) মৃগশিরা নত্রের নাম অনুসারে, পৌষ- পুষ্যা নত্রের নাম অনুসারে, মাঘ- মঘা নত্রের নাম অনুসারে, ফাগুন- উত্তর ও পূর্ব ফাল্গুনী নত্রের নাম অনুসারে, চৈত্র- চিত্রা নত্রের নাম অনুসারে।সম্রাট আকবর কর্তৃক প্রবর্তিত তারিখ-ই ইলাহীর মাসের নামগুলো প্রচলিত ছিল ফার্সি ভাষায়, যথা- ১. ফারওয়াদিন ২. আর্দি ৩. ভিহিসু ৪. খোরদাদ ৫. তির ৬. আমারদাদ ৭. শাহরিয়ার ৮. আবান ৯. আযুর ১০. দাই ১১. বহম ১২. ইসক্নদার মিজ।বাংলা সন অন্যান্য সনের মতোই সাত দিনকে গ্রহণ করেছে এবং এ দিনের নামগুলো অন্যান্য সনের মতোই তারকামন্ডলীর ওপর ভিত্তি করেই করা হয়েছে। শনিবার- শনি গ্রহের নাম অনুসারে, রবিবার- রবি বা সূর্য দেবতার নাম অনুসারে, সোমবার- সোম বা শিব দেবতার নাম অনুসারে, মঙ্গলবার- মঙ্গল গ্রহের নাম অনুসারে, বুধবার- বুধ গ্রহের নাম অনুসারে, বৃহস্পতিবার- বৃহস্পতি গ্রহের নাম অনুসারে, শুক্রবার- শুক্র গ্রহের নাম অনুসারে। বাংলা সনে দিনের শুরু ও শেষ হয় সূর্যোদয়ে। ইংরেজী বা গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জির শুরু হয় যেমন মধ্যরাত হতে।মানুষ তার প্রয়োজনে সময় ও কাল গণনার রীতি আবিষ্কার করে নিয়েছিল প্রাগৈতিহাসিক যুগে। এটি মানবজাতির আদিমকালের প্রবৃত্তি এবং মানুষের সহজাত সংস্কৃতির অংশ। পৃথিবীর দেশে দেশে জাতিতে জাতিতে নানা সন গণনার যে ঐতিহ্য গড়ে উঠেছে এর পেছনেও রয়েছে স্বয়ং আল্লাহ পাকের বিশ্বজনীন নিয়ম। আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেন- ‘আকাশ এবং পৃথিবী সৃষ্টির প্রথম দিন থেকেই বছর গণনার মাস বারটি’। কুরআন সে শাশ্বত ঘোষণার আলোকেই পৃথিবীর দেশে দেশে সন এবং বছর গণনার নানা পন্থা আবিষ্কৃত হয়েছে। আর পৃথিবীতে যত দেশে যত সন আছে সবগুলোরই ১২ মাসের বছর। অবশ্য সৌরমাস ভিত্তিক এবং চান্দ্রমাস ভিত্তিক গণনার ভিন্নতায় এসব সনের পরিধিগত বেশ কমও রয়েছে। সন গণনার সে বিশ্বজনীন সংস্কৃতির পথ ধরেই আমাদের বাংলাদেশেও নানা যুগে নানা সন প্রবর্তিত হয়েছে। প্রাচীন শক সনের পথ ধরে এখানে প্রবর্তিত হয়েছে সম্বৎ, মঘী সন, নেপাল সম্বৎ, ত্রিপুরাব্দ, লণ সম্বৎ, পরগণাতি সন, শাহুর সন, হিজরী সন, ঈসায়ী বা খৃষ্টিয় সন, বাংলা সন, জালালী সন ইত্যাদি। এর কোন কোনটা সৌরবর্ষে আবার কোন কোনটা চান্দ্রবর্ষে গণনা করা হয়ে থাকে।বাংলা সন প্রবর্তিত হয়েছে সম্রাট আকবরের (১৫৫৬-১৬০৫) আমলে। সম্রাট আকবরের সিংহাসন আরোহনের বছর ৯৬৩ হিজরী (১৫৫৬ ঈসায়ী) সনকে শুরুর বছর ধরে ফসলী সন নামে যে সব প্রবর্তন করা হয় কালে তাই বাংলাদেশে বাংলা সন নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। মূলত জমির খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে এ সন প্রবর্তন করা হয়। এর আগে এদেশের দেশীয় সন হিসেবে শকাব্দের প্রচলন থাকলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে হিজরী সন চালু ছিল গোটা ভারতবর্ষে। আর এ কারণেই হিজরী সনকে ভিত্তি বছর ধরে এ বাংলা সনেরও প্রবর্তন করা হয়। অন্যদিকে এ সনের মাসের নামগুলো নেয়া হয় শকাব্দ থেকে। এভাবে দেখা যায় সনটি প্রবর্তনে এখানকার প্রধান দু’টি ধর্ম অর্থাৎ হিন্দু এবং মুসলমান উভয় ধর্মের একটি প্রভাব সনটির ওপর পড়েছে। এেেত্র হিজরী সনকে যদি আমরা বাংলা সনের মায়ের মর্যাদা দেই তাহলে শকাব্দকে দিতে হয় খালার মর্যাদা। বাংলা সন ছাড়াও প্রায় সকল সনের েেত্রই এ ধর্মীয় প্রভাবের একটি দিক থাকে। বাংলা সনের েেত্র হিন্দু-মুসলিমের এ মিলিত স্রোত সনটিকে একটি অসাম্প্রদায়িক অবস্থানে এনে দাঁড় করিয়েছে যা উদার ইসলামী সংস্কৃতির পাশাপাশি বাংলাদেশী সংস্কৃতির সাথেও পুরোপুরি সামঞ্জস্যশীল।কৃষকের জমির খাজনা আদায়ের সুবিধার্থেই এ সন প্রবর্তন করা হয়েছিল। ফলে সন প্রবর্তনের সময় থেকেই সাধারণ মানুষের সাথে এ সনের পরিচয় ও সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আজও গ্রামের নিরর সাধারণ মানুষের কাছে আপনি যদি আজ কত তারিখ জানতে চান তাহলে তিনি হাতের আঙ্গুলে গুণে আপনাকে আজ বাংলা সনের কোন মাসের কত তারিখ তা বলে দেবেন। গ্রামের মানুষের কাছে বাংলা সনের পর দ্বিতীয় গুরুত্ব হচ্ছে হিজরী সন বা চান্দ্র মাসের হিসাব। ইংরেজী সন গ্রামের মানুষের কাছে আজও ব্যাপক হারে স্থান করে নিতে পারেনি। বাংলা সন প্রবর্তনের বছর থেকেই জমির খাজনা পরিশোধ করা হচ্ছে। এ সনের হিসাব মতে এবং তা আজ পর্যন্ত এ নিয়মেই চলছে।সমাজের সর্বনিম্ন স্তর পর্যন্ত বাংলা সন ব্যবহৃত হবার কারণে মানুষের প্রতিদিনের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনার সাথে হয়েছে এ সনটি। প্রাচীন আরবে ‘নওরোজ’ ও ‘মিহিরজান’ নামক যে দু’টি উৎসব ছিল এর প্রথমটি ছিল সন কেন্দ্রিক। এ দু’টি উৎসবের পরিবর্তেই মুসলমানদের জন্য নবী করিম (সা.)-এর নির্দেশনা চালু হয় দুই ঈদ উৎসব। ঈদ-উল-ফিতর ও ঈদ-উল-আযহা। উপ-মহাদেশে দীর্ঘদিন মোগল শাসন থাকায় এখানেও নওরোজ উৎসব হতো। কিন্তু বাংলা সন প্রবর্তনের পর নওরোজ উৎসবের স্থলে স্থান করে নিয়েছে পহেলা বৈশাখের উৎসব। বাংলা সনের ১ম দিনটি অর্থাৎ পহেলা বৈশাখকে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হয়ে থাকে। আমাদের দেশে পহেলা বৈশাখ এবং বাংলা সন কেন্দ্রিক যেসব উৎসব আয়োজন আছে সেগুলোর দিকে একটু নজর দেয়া যাক।গ্রামের কোন বটতলায় বা নির্দিষ্ট কোন মাঠে বা রাস্তার মোড়ে সপ্তাহের নির্দিষ্ট কোন বারে বা একাধিক নির্দিষ্ট বারগুলোতে বেচা-কেনার যে আয়োজন হয় তাকেই বলে হাট। সপ্তাহের সাত দিনই যদি বেচা- কেনা হয় তাকে বলে বাজার। বাংলাদেশের এ হাটগুলো বসে বাংলা মাসের বারগুলোর হিসেবে। এটি বাংলা সনের একটি প্রত্য প্রভাব। গ্রামের মানুষের একত্রে মিলনের এটি একটি প্রাচীন চলমান ধারা।হাটের বিপরীতে মেলা হলো আরেকটু ভিন্ন মেজাজের। হাট যেখানে সপ্তাহের কোন নির্দিষ্ট দিনে বসে সেখানে মেলা বসে বছরের কোন নির্দিষ্ট দিনে বা নির্দিষ্ট একাধিক দিন ধরে। বিভিন্ন বিষয়কে উপল করে মেলা বসে থাকে। এসব উপলরে মধ্যে বৎসরের শুরুর দিন হিসেবে পহেলা বৈশাখ দেশের বিভিন্ন জায়গায় মেলা বসে থাকে যাকে বলা হয় বৈশাখী মেলা। মেলায় বিশেষ করে হাতে তৈরী কুটির শিল্পের নানা জিনিস যেমন- চেয়ার, টেবিল, চৌপায়া, বেলাইন, পিঁড়ি, রেহেল, লাঠি, ইঁদুর ধরার ফাঁদ, নারিকেল কুড়ানি, গাঁইল, চেগাইট, খড়ম, পাউডি, ডাল ঘুটনি, ঘুড়ির নাটাই, মাটির তৈরী রকমারি জিনিস, খেলনা, মুড়ি, কৈ, মন্ডা, মিঠাই, জিলাপি, বাতাসা, তিলা ইত্যাদি খাবার দ্রব্য, ঘুড়ি বাঁশি, পুতুল, পাখি ইত্যাদি বেচাকেনার পাশাপাশি এবং হাট-বাজারে বেচাকেনার জিনিসপত্রও বিক্রি হয়। এসব মেলার মাধ্যমে মূলত দেশীয় দ্রব্যাদি বেচা-কেনার কারণে দেশীয় শিল্প বিশেষ করে কুটির শিল্পের ব্যাপক প্রচার ও প্রসার হয় এবং দেশীয় চেতনা জাগ্রত হয়। এসব মেলায় চরক গাছ, নাচ, গান, নাগরদোলা, পুতুল নাচ, সার্কাস ইত্যাদির আয়োজনও হয়ে থাকে।আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মদ সা. বলেছেন, ‘সেই লোকই ভাল যার লেন-দেন ভাল’ এ কথাটি হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে সকল ধর্মের লোকই কম-বেশ পালন করার চেষ্টা করে। ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসার হিসাব রাখে খাতায়। ব্যবসা চালাতে গিয়ে অনেক সময় বাকীতে মালামাল বিক্রি করতে হয়। কিন্তু এটি সকলেরই জানা যে, পহেলা বৈশাখের আগে যার কাছে যা পাওনা আছে তা পরিশোধ করে দিতে হবে। কেননা ব্যবসায়ী পুরনো খাতার বকেয়া নতুন খাতায় তুলতে চাননা। বছরের প্রথম দিন থেকে খোলা হয় নতুন খাতা যাকে বলা হয় হালখাতা। আর এ খাতা খোলার দিনই আয়োজন করা হয় হালখাতা নামক অনুষ্ঠানের। এ ধরনের অনুষ্ঠানে ব্যবসায়ের সাথে জড়িত লোকজন সবাইকে দাওয়াত দেয়া হয়। যাদের বকেয়া আছে তারা বকেয়া পরিশোধ করেন আর যাদের বকেয়া নাই তারাও কুশল বিনিময় করতে আসেন। এ ধরনের অনুষ্ঠানে আগতদের মিষ্টি মুখ করা হয়। ইদানিং বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এবং আরো কিছু ব্যাংক তাদের বকেয়া আদায়ে হালখাতা অনুষ্ঠানের প্রথা অনুসরণ করছে যা সচেতনতার পরিচয় বহন করে।
‘আল্লাহ ব্যবসাকে করেছেন হালাল আর সুদকে করেছেন হারাম’। আল্লাহর রাসূল নিজে ছিলেন ব্যবসায়ী। এ জন্যেই মুসলমান মাত্রই ব্যবসাকে হালাল রুজির একটি পবিত্র মাধ্যম মনে করে। বাংলাদেশে বাংলা মাসের হিসেবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চলার কারণে অনেক নতুন ব্যবসায়ী তার ব্যবসা শুরুর দিন হিসেবে বেছে নেয় পহেলা বৈশাখকে। এ দিন ঐ দোকানে আয়োজন করা হয় অনুষ্ঠানের এতে নবীর (সা:) জীবনচরিত আলোচনা করা হয়। তাই এটাকে সীরাত মাহফিল বলাই সঙ্গত। নবী (সা.) নিজে একজন ব্যবসায়ী ছিলেন তাই ব্যবসা শুরুর দিন নবীর জীবন বৃত্তান্ত আলোচনার মাধ্যমে পবিত্র জ্ঞানে ব্যবসা শুরুর জন্যই সম্ভবত আয়োজন করা হয় এই অনুষ্ঠানের। এ ধরনের অনুষ্ঠানে আলোচনার পর দোয়া ও মোনাজাত করে মিষ্টি বিতরণের মাধ্যমে শেষ হয়। পহেলা বৈশাখে এ ধরনের অনুষ্ঠান একটি পবিত্রতার আমেজ এনে দেয়।বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে গত কয়েক বছর যাবত যুক্ত হয়েছে একটি নতুন ধারা আর তাহলো বইমেলা। পহেলা বৈশাখ উপলে নানা স্থানে বিভিন্ন কাব বা পাঠাগারের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় বইমেলার। এছাড়া দেশের প্রধানমন্ত্রীর প থেকে নববর্ষ উপলে প্রিয়জনকে বই উপহার দেবার আহ্বান ও এ বিষয়ে লোকদের অনুপ্রাণিত করেছে। জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র, বাংলা একাডেমী এসব প্রতিষ্ঠান ‘বাংলা নববর্ষে প্রিয়জনকে বই উপহার’ দেবার বিষয়টিকে প্রমোট করার ফলে ঐদিন বই কেনা এবং প্রিয়জনকে বই উপহার দেয়া আস্তে আস্তে একটি রীতিতে পরিণত হতে চলেছে।
নতুন বছর একজন লোকের ভাল যাক এটা তার বন্ধু-বান্ধব, শুভাকাঙ্খীরা অবশ্যই কামনা করে। আর এ শুভ কামনা আমরা ল্য করি নববর্ষের শুভেচ্ছা কার্ড বিতরণের মাধ্যমে। নববর্ষের আরও পূর্বেই দোকান থেকে বিষয়ভিত্তিক শুভেচ্ছা কার্ড সংগ্রহ করে আপনজনের ঠিকানায় ডাকযোগে পাঠানো হয়। দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী বড় বড় রাজনৈতিক দলগুলো জনগণকে শুভেচ্ছা বাণী দিয়ে থাকে যা পত্র-পত্রিকায় এবং রেডিও-টেলিভিশনে প্রচার করা হয়। আধুনিককালে মোবাইল ফোনে এসএমএস-এর মাধ্যমে এবং ইন্টারনেটে ই-মেইলের মাধ্যমে এবং কেউ কেউ সরাসরি ফোন করেও নববর্ষের শুভেচ্ছা জানায়।পহেলা বৈশাখ উদযাপনে রাষ্ট্রীয়ভাবে ঐদিন সরকারী ছুটি থাকে। ফলে লোকজন ছুটির দিন কাটানোর আমেজ নিয়ে ঘর থেকে বের হয়। আবার রাষ্ট্রীয় বেতার ও টেলিভিশনে এবং বেসরকারী চ্যানেলগুলো ও পত্র-পত্রিকায় ঐদিন নববর্ষ উপলে বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। পত্র-পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশের সুবাদে লেখক-কবি-সাহিত্যিকগণ নানা নিবন্ধ, প্রবন্ধ, কবিতা ইত্যাদি রচনা করে থাকেন। বিশেষ সাময়িকপত্রও প্রকাশিত হয় এ উপল।ে বেতার-টিভিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানের মধ্যে টকশো, আলোচনা, আবৃত্তি, সরেজমিন প্রতিবেদন ইত্যাদি নানা মাত্রার আয়োজন থাকে। আমার লেখা প্রতিটা হতিহাস,তারিখ,সন পেতে আমি সাহায্য পেয়েছি গুগল থেকে

সংবাদটি সেয়ার করে পাশে থাকুন

একই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved  2024
Design by JIT SOLUTION