বাবলু মিয়া
ফল প্রকাশের পর নিয়োগ বঞ্চিতরা অবরোধ করে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও এক শিক্ষক’কে গণধোলাই দেন,পুলিশ এসে রক্ষা করেন।(২৮শে-জুন) শুক্রবার বিকালে ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার কুশনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।জানা যায়,কুশনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৫ জন জনবল নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন বিদ্যালয় কতৃপক্ষ। যার মধ্যে ছিল অফিস সহকারি,অফিস সহায়ক,নৈশ্য প্রহরী,
পরিছন্ন কর্মী,আয়া।এ সব পদে চাকুরীর জন্য ৭৭ জন আবেদন করেন,তবে পরিক্ষায় অংশ গ্রহন করেন ৪৩ জন।শুক্রবার ছিল নিয়োগ পরিক্ষা। পরিক্ষা সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হলেও ফলাফল ঘোষণার পর বাদে বিপত্তি। চলে দফায় দফায় নিয়োগ বঞ্চিতদের হামলা ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি ও কৃষক লীগ নেতা আব্দুর রশিদ ও শিক্ষক গোলাম কিবরিয়া বিপ্লবের উপর।তাদের অভিযোগ বিদ্যালয়ের সভাপতি,প্রধান শিক্ষক মিলে চাকুরী দেবার কথা বলে ৫ পদে অর্ধ কোটি টাকার নিয়োগ বানিজ্য করেছেন। এরপর তারা ওই সভাপতি ও এক শিক্ষককে ঘন্টাব্যাপী অবরুদ্ধ করে রাখেন।পরে পুলিশের সহায়তায় তারা বিদ্যালয় মাঠ ত্যাগ করেন।ভুক্তভোগী পরিক্ষার্থী শিহাব হোসেন চাকুরী দেবার কথা বলে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক আমার কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা নিয়েছেন। এখন আমাকে নিয়োগ না দিয়ে আরো বেশি টাকা নিয়ে অন্য একজনকে নিয়োগ দিয়েছেন। একই কথা বলেন,আরেক পরিক্ষার্থী রোকন হোসেন। তিনি বলেন,আমার পিতা দরিদ্র মানুষ। নগদ টাকা আমাদের নাই। চাকুরির জন্য জমি বিক্রি করে আমার পিতার কাছ থেকে বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুর রশিদ ৮ লাখ টাকা নিয়েছেন।অথচ আজ পরিক্ষার পর জানতে পারলাম আমার পরিবর্তে বেশি টাকা নিয়ে অন্য একজন’ কে নিয়োগ দিয়েছেন।এব্যাপারে কুশনা মাধ্যমে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন,আমার পরিক্ষার্থী থাকায় আমি বোডের কোন দায়িত্বে ছিলাম না। আর নিয়োগে বানিজ্য হয়নি।
তিনি বলেন,যারা চাকুরী পাননি,তারা এ অপপ্রচার করছেন। তারাই সভাপতি, আমার এক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেছেন। এ ছাড়া আমার বাড়িতে ও এসে তারা হামলা চালিয়েছেন।তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিবেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,এটা সময়ের ব্যাপার। আমরা বসে ব্যবস্থা নেবার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবো।একই সুরে কথা বললেন,
বিদ্যালয়ের সভাপতি ও কৃষকলীগ নেতা আব্দুর রশিদ। তিনি বলেন,নিয়োগ স্বচ্চ হয়েছে। আমি কারোর কাছ থেকে কোন টাকা নেয়নি।পরিক্ষায় যারা ভাল করেছেন,তারা চাকুরী পেয়েছেন।তবে আপনার উপর হামলা কেন,এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,যারা নিয়োগ পাননি তারা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। এবং হামলাও চালিয়েছেন।উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অশোক কুমার বলেন,আমি এই নিয়োগ বোডের সদস্য মাত্র। আমার জানামতে নিয়োগ পরিক্ষা সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তবে টাকা নেওয়ার ব্যাপারটা আমার জানা নাই।পরিক্ষার ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন,কমিটির সভাপতিই নিয়োগ বোডের সবকিছু। আমরা ফলাফল তৈরি করে দিয়েছি,প্রকাশ করবেন তিনি। এরপর তিনি নিয়োগ পরিক্ষার ফলাফল না দিয়েই বিদ্যালয়ের মাঠ ত্যাগ করেন।
একইভাবে বিদ্যালয়ের মাঠ ছাড়েন,
ঝিনাইদহ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত)নাজমা সাফায়াত। তিনি বলেন,আমি এখানে ডিজির প্রতিনিধি হিসেবে চিঠি পেয়েছি। এ নিয়োগ বোডের আমরা ৫ সদস্য ছিলাম। ওই ৫ মিলে প্রশ্ন করেছি। এরপর সেই প্রশ্নে পরিক্ষা নেয়া হয়। পরে খাতা দেখে ফলাফলের তালিকা করে দিয়েছি। বিদ্যালয়ের স্যারেরা একটু ব্যস্ত আছেন। কিছুক্ষন পরেই ফলাফলের তালিকা টানিয়ে দিবেন।এখানে কোন নিয়োগ বানিজ্য হয়েছে কিনা এমন প্রশ্ন তিনি বলেন,সেটা আমার জানা নাই। এখানে স্বচ্ছ পরিক্ষা হয়েছে। পরিক্ষায় যারা ভাল করেছেন আমরা সেভাবে তালিকা করে দিয়েছি।বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি সহকারী কমিশনার( এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্টেট) নৌশিনা আরিফের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। কারন তিনি আগেই বিদ্যালয়ের মাঠ ত্যাগ করেছিলেন।কোটচাঁদপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) সৈয়দ আল- মামুন বলেন,ঘটনাটি শুনেছি। তবে এখনও পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে থানায় কেউ কোন অভিযোগ বা জিডি করেননি। অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।