(নেই কোন উৎপাদন,মেয়াদের তারিখ ও দাম)
মোস্তাকিম আল রাব্বি সাকিব
বাঙ্গালী মানেই মুখোচোরক খাবারের পরসা, চায়ের দোকান হোক বা আড্ডা চানাচুর পছন্দকরে না এমন মানুষ কমই আছে হয়তো। ধরেন হাতে এক মুট চানাচুর নিয়ে খুব সাধ করে খাচ্ছেন আর ফোনে ভিডিও দেখছেন সামনে অস্বাস্থকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে চানাচুর এমন একটি প্রতিবেদন আসলো কেমন লাগবে তখন আপনার.?। হ্যা ঠিক এমন ভাবেই প্রতিনিয়ত মানহীন অস্বাস্থকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে মনিরামপুরের নামকরা নূর চানাচুর ও মুড়ি। তাদের প্রস্তুতকৃত চানাচুরের মোড়কে নেই কোন উৎপাদন তারিখ,মেয়াদ উত্তিন্যেও তারিখ। এছাড়াও নাই কোন প্যনের গায়ে নেই মূল্য তালিকা। ঈদকে পুজি করে এমন ভাবেই ভোক্তাদেরকে ঠকাচ্ছেন নূর চানাচুর কম্পানির মালিক আব্দুল মালেক। সরেজমিনে তার কারখানায় গেলে দেখা যায়, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে পোড়া তেল দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের চনাচুর। পরিবেশ অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) অনুমোদন ও ট্রেড লাইসেন্স ছাড়াই চলছে এ চানাচুর কারখানা। ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে কারখানা বন্ধ করার কিছু দিন পর আবার শুরু হয় এ উৎপাদন। নূর চানাচুর কম্পানির মালিক আব্দুল মালেক মনিরামপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়ন পরিষদের পাশে সাতনল নামক স্থানে গড়ে তুলেছেন এ চানাচুর ফ্যন্টরি, যেখানে আগে শুধু চানাচুর তৈরি হলেও এখন কথিত হাতে ভাজা মুড়ি যেটা আসলে তৈরি হচ্ছে মেশিনের মাধ্যমে, ঠিক একই ভাবে চিড়ার মিল তৈরি করছেন বলে জানাগেছে। বড় একটি গোডাউন ঘরের মধ্যে রাখা কাচামালের বস্তার পাশেই বড় একটি কড়ায়ে ভাজা হয় চানাচুর সেখান থেকে তুলে রাখা হচ্ছে সারাসরি ফ্লোরের উপরে। আবার সেখানেই খোলা হাতে মেশানো হচ্ছে মশলা,বুট,বাদাম সহ আরো অনেক ধরনের অনুমোদিত ক্যমিক্যাল। সেখান থেকে বস্তায় করে নিয়ে ছোট ছোট প্যকেটে করে বাজারজাত করেন এই চানচুর । ভেতরে নোংরা পরিবেশ। সেখানেই তৈরি করা চানাচুর,মুড়ি সহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য। নেই হালনাগাদ অনুমোদন। যাও অনুমোদন ছিল তার থেকে পণ্য উৎপাদন করছিল একাধিক রকমের। এমন নানান তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে যশোরের মনিরামপুরের নূর ফুড নামের একটি কারখানার বিরুদ্ধে। উল্লেখ্য ২০২২ সালের ২২ সেপ্টম্বর দুপুরে সাতনল বাজারের কারখানাটিতে অভিযান চালান তৎকালীন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হাসান।এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে কারখানার মালিক আব্দুল মালেককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কারখানার পরিবেশ মানসম্মত করাসহ সব রকমের ত্রুটি সংশোধনের জন্য ২০ দিনের সময় বেঁধে দেন তৎকালীন ইউএনও সৈয়দ জাকির হাসান। কিন্তু কোন নিয়মের তোয়াক্কা না করেই নিজের পেশিশক্তি দিয়ে অবৈধ ভাবে ব্যবসা করে যাচ্ছেন নূর ফুডের মালিক আব্দুল মালেক। সাতনাল বাজারে আব্দুল মালেক প্রতিষ্ঠিত নূর স্টোরের সামনের একটি মুদিখানর দোকান থেকে ৫০০ গ্রামের চানাচুরের প্যকেট কিনলে দেখা গেছে সে পন্যের গায়ে ও নেই কোন উৎপাদন তারিখ নেই কোন মূল্য। অস্বাস্থকর পরিবেশে চানাচুর তৈরির বিষয় জানতে চাইলে আব্দুল মালেক বলেন, আমার সব ধরনের কাগজপাতি আছে তাই আমি ব্যবসা করি আর এখন কোন ব্যবসায়ীই ভালো না কখন কোন মালের দাম বাড়াই ঠিক নাই এ জন্য আমার মালে আমি কোন দাম দি না । বিএসটিআই প্রতিটা পণ্যে উৎপাদন থেকে ৬ মাসের মেয়াদ দিতে বলেছে তাই দিয়েছি এর মধ্যে মালে সমস্যা হলে আমি কি করবো। তিনি আরো জানান, তার কারখানার পরিবেশ পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্না । কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে যে ফ্লোরে চানাচুর রাখা হয় সেখানে ধূলা ময়লা ও অপরিচ্ছন্ন। জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের যশোরের সহকারী পরিচালক সৈয়াদা তামান্না তাসনীম বলেন, আব্দুল মালেক যে কাজ করছেন একটি ভোক্তা অধিকার আইনের লঙ্ঘন। কোন পন্য যখন কৌটার মধ্যে যাবে বা প্যকেজিং হবে তার গায়ে অবশ্যই উৎপাদন ও মেয়াদ উত্তিনের তারিখ এবং ক্রয় মূল্য বাধ্যতামূলক দিতে হবে। তিনি যেহেতু এ গুলো ব্যবহার করেন নাই অবশ্যই তিনি জাতীয় ভোক্তা অধিকার আইনের লঙ্ঘন করেছেন এ ধরনের অপরারে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা , ১ বছরের জেল বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হতে পারে। তিনি আরো বলেন, আমারা জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের যশোর গত তিন মাস আগে গিয়ে তাকে সতর্ক করেছি কিন্তু তিনি যেহেতু কথা রাখেনি আবারো তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে