1. jitsolution24@gmail.com : admin :
  2. shantokh@gmail.com : Sharif Azibur Rahman : Sharif Azibur Rahman

বিএসএমএমইউয়ে করোনা পরীক্ষার ফল মাত্র ৪ ঘণ্টায়

  • প্রকাশের সময় বুধবার, ১ এপ্রিল, ২০২০
  • ১৪৫ বার সংবাদটি পাঠিত

কণ্ঠ ডেস্কঃ এখন অনেকেই গলাব্যথা, সর্দি, কাশি কিংবা জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। বিগত বছরের মার্চের মাসের তুলনায় এ বছরের মার্চে এসব রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ১৪ গুণ। করোনাভাইরাসে আক্রান্তের লণের সঙ্গে এই লণের মিল আছে। এ কারণে এই ধরনের লণ দেখা দিলে অনেকেই ভয় পাচ্ছেন তিনি হয়তো করোনায় আক্রান্ত। কিন্তু খুব সহজেই যেকেউ চাইলেই পরীা করতে পারবেন না।বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) করোনায় আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন—এমন সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের পরীা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল বুধবার থেকে এই পরীা শুরু হচ্ছে। সেখানকার চিকিৎসকেরা রোগীর সঙ্গে কথা বলবেন এবং লণ বিচার করবেন। চিকিৎসকের যদি সন্দেহ হয় ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত, তাহলেই কেবল তাঁকে পরীা করবেন। রোগীর নমুনা সংগ্রহের পর চার ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল জানানো হবে। অর্থাৎ দিনে দিনেই ব্যক্তি জানতে পারবেন, তিনি করোনায় আক্রান্ত কি না।সকাল ৮টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত এখানে রোগীদের পরীা করা হবে। রোগীরা বিনা মূল্যে পরীা করাতে পারবেন।বিএসএমএমইউর ভাইরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এস এম রাশেদ উল ইসলাম জানান, করোনাভাইরাসের লণ নিয়ে আসা ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহের পর চার ঘণ্টার মধ্যে জানা যাবে, নমুনা নেওয়া ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কি না।করোনা ভাইরাসের লণ নিয়ে আসা ব্যক্তির মুখের লালা বা নাকের সোয়াব সংগ্রহ করা হয়। ছবি: আসাদুজ্জামানকরোনাভাইরাসের লণ নিয়ে আসা ব্যক্তির মুখের লালা বা নাকের সোয়াব সংগ্রহ করা হয়। ছবি: আসাদুজ্জামানআগামীকাল থেকে বিএসএমএমইউয়ে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের পরীা শুরু হবে। এই প্রতিষ্ঠানে স্থাপন করা হয়েছে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের ল্যাবরেটরি।বিএসএমএমইউর উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘যাঁরা সর্দি, কাশি, জ্বরে আক্রান্ত, তাঁদের চিকিৎসার জন্য আমরা ফিভার কিনিক নামে আলাদা বিভাগ চালু করেছি। যেকেউ আমাদের হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিতে পারবেন। আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে যাঁদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে সন্দেহ করা হবে, তাঁদের পরীা করা হবে।’
যেভাবে করোনাভাইরাসের পরীাবিএসএমএমইউর ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সাইফ উল্লাহ মুন্সি প্রথম আলোকে বলেন, ‘করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে আমাদের চিকিৎসক যাঁকে সন্দেহ করবেন, যাঁর নমুনা পরীা করার সুপারিশ করা হবে, শুধু সেই ব্যক্তির নমুনা আমরা সংগ্রহ করব। করোনাভাইরাস শনাক্তের এই পরীা করার জন্য সন্দেহভাজন ব্যক্তির মুখের লালা কিংবা নাকের সোয়াব নমুনা হিসিবে সংগ্রহ করা হয়।’নমুনাগুলো প্রসেসিং করার পর করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণের কিটসের মাধ্যমে রাইবো নিউকিক এসিড (আরএনএ) বের করে আনা হয়। ছবি: আসাদুজ্জামাননমুনাগুলো প্রসেসিং করার পর করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের কিটের মাধ্যমে রাইবো নিউকিক এসিড (আরএনএ) বের করে আনা হয়। ছবি: আসাদুজ্জামানকরোনাভাইরাস শনাক্তের পরীা হবে বিএসএমএমইউর ভাইরোলজি বিভাগের তত্ত্বাবধানে।বিএসএমএমইউর ল্যাবরেটরি ঘুরে এবং পরীার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ভাইরোলজি বিভাগের একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের জন্য দুটি মেশিন (যন্ত্র) ব্যবহার করা হয়। একটি যন্ত্রের নাম এস কো বায়োসেপটিক্যাল প্লাস টু মেশিন এবং রিয়েল টাইম পিসিআর মেশিন। প্রথমে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত থাকা সন্দেহভাজন ব্যক্তির মুখের লালা বা নাকের সোয়াব সংগ্রহ করবেন দায়িত্বপ্রাপ্ত ল্যাব টেকনোলোজিস্ট। ওই নমুনা নিয়ে আসা হয় ল্যাবরেটরির করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের এস কো বায়োসেপটিক্যাল প্লাস টু মেশিনে। নমুনাগুলো প্রথমে ইনঅ্যাক্টিভেশন করা হয়। এই মেশিনে নমুনা আসার পর তা বিভিন্ন রিএজেন্টের মাধ্যমে তা প্রসেসিং করা হয়।বায়োসেপটিক্যাল প্লাস টু মেশিনে প্রস্তুত করা নমুনা নিয়ে আসা হয় রিয়েল টাইম পিসিআর মেশিনে। ছবি: আসাদুজ্জামানবায়োসেপটিক্যাল প্লাস টু মেশিনে প্রস্তুত করা নমুনা নিয়ে আসা হয় রিয়েল টাইম পিসিআর মেশিনে। ছবি: আসাদুজ্জামাননমুনাগুলো প্রসেসিং করার পর করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের কিটের মাধ্যমে রাইবো নিউকিক অ্যাসিড (আরএনএ) বের করে আনা হয়। এরপর আরএনএ-এ কোষের নমুনা ল্যাবরেটরিতে রাখা আরেকটি এস কো বায়োসেপটিক্যাল প্লাস টু মেশিনের রাখা হয়। সংযুক্ত করা হয় বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য। এরপর বায়োসেপটিক্যাল প্লাস টু মেশিনে প্রস্তুত করা নমুনা নিয়ে আসা হয় রিয়েল টাইম পিসিআর মেশিনে। এই মেশিনের সঙ্গে কম্পিউটার সংযুক্ত রয়েছে। কম্পিউটারে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের সফটওয়্যার চালু করা হয়। যদি নমুনা কোষে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি মেলে, তখন কম্পিউটারের পর্দায় ভেসে ওঠে, করোনাভাইরাস পজিটিভ। আর যদি নমুনা কোষে করোনাভাইরাস না পাওয়া যায়, তখন করোনাভাইরাস নেগেটিভ লেখা ভেসে ওঠে।ভাইরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এস এম রাশেদ উল ইসলাম বলেন, ‘একজন ব্যক্তির কোষের আরএনএ–তেকরোনাভাইরাস থাকলেই তিনি করোনাভাইরাস পজিটিভ বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। ল্যাবরেটরির পিসিআর মেশিনের যুক্ত কম্পিউটার স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, ওই ব্যক্তির করোনাভাইরাস পজিটিভ। আমাদের হাসপাতালে করোনাভাইরাস শনাক্ত করার ল্যাবরেটরিতে যে কিট ব্যবহার করা হয়, তা চীনের একটি কোম্পানির। কোম্পানির নাম সানশিউর বায়োটেক লিমিটেড। এই কোম্পানির কিট ব্যবহার করে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হচ্ছে।’

এস কো বায়োসেপটিক্যাল প্লাস টু মেশিন। ছবি: আসাদুজ্জামানএস কো বায়োসেপটিক্যাল প্লাস টু মেশিন। ছবি: আসাদুজ্জামানভাইরোলজি বিভাগের এস এম রাশেদ উল ইসলাম জানান, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের ল্যাবরেটরিতে বায়োসেপটিক্যাল প্লাস টু মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে। ব্যাকটেরিয়া কিংবা ভাইরাস রিস্ক লেবেল যখন দুইয়ের ওপরে হয়, তখন বায়োসেপটিক্যাল প্লাস টু মেশিনটি ব্যবহার করা হয়। ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের চার ধরনের রিস্ক লেবেল রয়েছে। রিস্ক এক, রিস্ক দুই, রিস্ক তিন, রিস্ক চার। করোনাভাইরাস রিস্ক দুইয়ের ওপরে। যে কারণে বায়োসেপটিক্যাল প্লাস টু মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে। এই মেশিন ছাড়া কোনোভাবে করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে থাকা ব্যক্তির নমুনা আইসোলেশন কিংবা প্রসেসিং করা সম্ভব নয়।’

বিএসএমএমইউর ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান সাইফ উল্লাহ মুন্সি বলেন, ‘যে পদ্ধতিতে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হচ্ছে, সেটি হলো পিসিআর পদ্ধতিতে মলিকুলার টেস্ট। এটা রক্তের পরীা নয়। যেকোনো ব্যক্তি আমাদের হাসপাতালে এসে করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণের পরীা করতে পারবেন।’

এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে ৩৭ হাজার ৬৩৯ জন মারা গেছেন। বাংলাদেশে মারা গেছেন পাঁচজন, আক্রান্ত হয়েছেন ৫১ জন।

সংবাদটি সেয়ার করে পাশে থাকুন

একই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved  2024
Design by JIT SOLUTION