স্টাফ রিপোর্টারঃ বাঘারপাড়ায় সোলায়মান হোসেন নামে এক ব্যবসায়ীকে হত্যার অভিযোগে তার স্ত্রীসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। স্ত্রীর পরকিয়া এবং পাওনা টাকা আদায়কে কেন্দ্র করে বিরোধে তাকে হত্যার পর লাশ গলায় রশি দিয়ে দোকানের ঝুলিয়ে রাখে আসামিরা। মৃত সোলায়মান হোসেনের ভাগ্নে একই উপজেলার মালি গ্রামের সোহেল হোসেন যশোর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই মামলা করেন। বিচারক মো: মাহাদী হাসান এই ব্যবপারে থানায় কোন মামলা হয়েছে কিনা আর হয়ে থাকলে কি অবস্থায় আছে সেই বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বাঘারপাড়া থানার ওসিকে আদেশ দিয়েছেন।
আসামিরা হলো, একই উপজেলার মাহামুদপুর গ্রামের জমির উদ্দিনের মেয়ে এবং মৃত সোলায়মান হোসেনের স্ত্রী কাকলী বেগম, কাকলীর পিতা জমির উদ্দিন, মাতা পারভিন বেগম এবং সাইটখালি গ্রামের দাউদ মোল্যার ছেলে হাফিজুর রহমান।
বাদী মামলার বিবরণে উল্লেখ করেছেন, মৃত সোলায়মান হোসেন তার মামা হন। ১৭ বছর আগে আসামি কাকলীর বেগমের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর দাম্পত্য জীবনে তাদের দুইটি সন্তানের জন্ম হয়। এরপর ১০ বছর তিনি বিদেশে ছিলেন। বিদেশ থেকে আয় করা অর্থের মধ্যে থেকে সোলায়মানের শ্বশুর জমির উদ্দিন এবং ৪ নম্বর আসামি হাফিজুর রহমান তার কাছ থেকে সাত লাখ টাকা ধার নেন। এরই মধ্যে সোলায়মান বিদেশে থাকাকালিন সময় থেকে তার স্ত্রী কাকলী বেগম পরোকিয়ায় জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি তিনি বিদেশ থাকাকালিন জানতে পারেন। যে কারণে তিনি বিদেশ থেকে দেশে ফিরে চলে আসেন। এরপর আসামিদের পরামর্শে পৈত্রিক ভিটা মালি থেকে শ্রীরামপুর গ্রামে এসে বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করেন। পাশাপাশি সোলায়মান চাড়াভিটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে এস বিপণী নামে একটা দোকান লিজ নিয়ে সেখানে মুদি দোকানের ব্যবসা করেন। এরপরেও স্ত্রীর পরোকিয়া কয়েকবার হাতে নাতে ধরে ফেলেন। বিষয়টি তিনি শ্বশুর শাশুড়িসহ অন্য আসামিদের অবহিত করেন। এরই মধ্যে সোলায়মান দোকান ও বাড়ি বিক্রি করে আবার পৈত্রিক ভিটা মালি গ্রামে চলে যাবেন বলে মনন্থ্য করেন। এছাড়া তার কাছ থেকে ধার নেয়া সাত লাখ টাকা আসামিদের কাছ থেকে ফেরৎ চান। এতে আসামিরা তার টাকা ফেরতে তালবাহানা করাসহ বিভিন্ন লোকের কাছে প্রকাশ করেন মালি গ্রামে গেলে সোলায়মানের লাশ যাবে। এরপর আসামিরা শুরু করে সোলায়মানকে হত্যার পরিকল্পনা। গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে নিখোঁজ হন সোলায়মান। ৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দোকানের মধ্যে থেকে ফ্যানের সাথে গলায় রশি দিয়ে ঝুলানো অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ব্যাপারে থানা পুলিশ মামলা গ্রহণে সময় ক্ষেপণ করায় আদালতে এই মামলা করা হয়েছে। বিচারক এই সংক্রান্তে থানায় কোন মামলা হয়েছে কিনা আর হয়ে থাকলে কোন অবস্থায় আছে সেই ব্যাপারে আগামি ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বাঘারপাড়া থানার ওসিকে আদেশ দিয়েছেন।