কণ্ঠ ডেস্ক
পুরোপুরি সংকট না কাটলেও আগের তুলনায় কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে বোতলজাত সয়াবিন তেলের বাজার। অধিকাংশ দোকানেই এখন কম-বেশি বিভিন্ন কোম্পানির সয়াবিন তেলের বোতল পাওয়া যাচ্ছে। তবে এখনও বেশিরভাগ জায়গায় দৃশ্যমান হয়নি সয়াবিনের ৫ লিটারের বোতল। শুক্রবার (৭ মার্চ) সকালে রাজধানীর মিরপুরের মানিকদী বাজার, মাটিকাটা বাজার এবং ইসিবি চত্বরসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় এমন চিত্রই দেখা গেছে। বিভিন্ন মুদি দোকান, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, সুপারশপ ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ জায়গায় ৫০০ মিলিগ্রাম, ১ ও ২ লিটার সয়াবিন তেলের বোতল কম-বেশি পাওয়া যাচ্ছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বোতলজাত সয়াবিন তেলের ব্ল্যাকআউটের মতো যে অবস্থা তৈরি হয়েছিল সেটি এখন তেমন নেই। প্রায় দোকানগুলোতেই ক্রেতারা সয়াবিন তেলের বোতল চাইলে পাচ্ছেন। তবে এখনও অদৃশ্য ৫ লিটারের বোতল। দোকানিরা জানান, বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ আগের তুলনায় কিছুটা স্বাভাবিক হচ্ছে। পরিবেশকরা চাহিদা অনুযায়ী তেল সরবরাহ আগের তুলনায় বাড়িয়েছেন। ফলে, তেলের বোতল আগের তুলনায় মার্কেটে বেড়েছে। তবে এখনও ৫ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল বেশি পাওয়া যাচ্ছে না। নিয়মিত পরিবেশকদের চাহিদা জানানোর পরও তারা কালেভদ্রে সরবরাহ করছেন। কয়েকদিন পরপর ২-৫টি করে বোতল দিচ্ছেন। সেগুলো আবার ক্রেতারা সাথে সাথেই কিনে নিয়ে যান।আব্দুল হান্নান নামের এক দোকানি বলেন, ১ ও ২ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল পাওয়া যাচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে, বোতল দেখলেই একজন ক্রেতা ২-৩টা করে কিনতে চাচ্ছেন। না দিলে আবার রাগ করছেন। এখন সরবরাহ যেহেতু আগের তুলনায় বেড়েছে সে হিসেবে আশা করা যায় আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আরও স্বাভাবিক হবে। শরিফুল ইসলাম নামের আরেক দোকানি বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বোতলজাত সয়াবিন তেল একেবারেই সরবরাহ বন্ধ ছিল। প্রায় দোকানগুলোই সয়াবিন তেল শূন্য ছিল। গত ২ দিন ধরে আবারও সরবরাহ বাড়তে শুরু করেছে। এখন কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। আশা করছি, এই সরবরাহ বজায় থাকলে দ্রুতই বোতলজাত সয়াবিনের বাজার আরও স্বাভাবিক হবে। এদিকে ক্রেতারা বলছেন, শুধু রোজা উপলক্ষ্যে অসাধু ব্যবসায়ীরা পরিকল্পিতভাবে দাম বাড়াতে সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছেন। যা ভোক্তাদের মধ্যে যথেষ্ট উদ্বেগ ও ভোগান্তির সৃষ্টি করেছে। এ সংকটের প্রধান কারণ হিসেবে বাজার বিশ্লেষকরা সিন্ডিকেটের কারসাজি, বিশ্ববাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি এবং সরবরাহ ব্যবস্থার দুর্বলতাকেও দায়ী করেছেন।নুরুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা বলেন, আগেভাগেই বাজার মনিটরিং জোরদার করা দরকার। যাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মূল্য আদায় বা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে না পারেন। গত কয়েকদিনের তুলনায় এখন বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে। দামও আগের মতোই। কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, এ বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ আরও জোরালো হওয়ার দরকার ছিল। সিন্ডিকেট চিহ্নিত করতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। তারপরও আশার কথা হচ্ছে, এখন সংকট কাটিয়ে আবারও বাজারে বোতলজাত তেলের সরবরাহ বাড়তে শুরু করেছে। সরকারের উচিত হবে, এই সরবরাহের ধারা যেন বজায় থাকে সেদিকে খেয়াল রাখা। এর আগে ৩ মার্চ (সোমবার) রাজধানীর মোহাম্মদপুরে কাঁচাবাজার পরিদর্শন শেষে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছিলেন, আগামী দুইদিনের মধ্যে সয়াবিন তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। তিনি আরও বলেন, সয়াবিন তেল বেশি দামে যেমন বিক্রি হচ্ছে, তেমনি পামওয়েল সরকার নির্ধারিত দাম থেকে ২৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। আমাদের মোট ভোজ্যতেলের ৬০ শতাংশ পামওয়েল। বাজারে তেলের দাম একই সঙ্গে কমেছে এবং বেড়েছে। সয়াবিন তেলের দামও কমে আসবে।