আব্দুল্লাহ আল হাসিব: বাংলাদেশের বৃহৎ উপজেলা যশোরের মণিরামপুর। সর্বমোট প্রায় ৫লক্ষ জন লোকের বসবাস এ উপজেলাতে। বৃহৎ উপজেলার রয়েছে নানা রকম স্মৃতি।
মুক্তিযুদ্ধের সময় উপজেলার মনোহরপুর গ্রামে পাক সেনাবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে মুখোমুখি যুদ্ধ হয়। এসময় পাকিস্তানী বাহিনী ২৩ জন নিরীহ ও নিরাপরাধ গ্রামবাসীকে হত্যা করে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে এ উপজেলায় রয়েছে ‘শহীদ আকরাম সড়ক’। এছাড়াও ঝাপা বাওড়, দমদম পীরের ডিভি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
অনেক রাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গের জন্ম এ উপজেলাতে। মণিরামপুর উপজেলা পরিষদে ১৯৮৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত সর্বমোট ২২ জন নির্বাহী কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করেছেন। তার মধ্যে একজন আহসান উল্লাহ শরিফী। তিনি ২০১৮ সালের ৯ আগষ্ট থেকে মণিরামপুরের উপজেলা পরিষদের নির্বাহী অফিসার হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। দীর্ঘ এ সময় দায়িত্ব পালন কালে তিনি জয় করেছেন মণিরামপুরের জনমানুষের মন।
সবার শেষ আস্থার নাম এখন মণিরামপুরের ইউএনও। যেকোন ধরনের পরামর্শ এবং সমস্যার সমাধান করতে এই কর্মকর্তার কাছে ছুটে আসেন সাধারণ জনগণ। আর তিনিও আন্তরিকতার সহিত সকলের সাথে মিশে সমস্যা গুলোর সমাধান করার চেষ্টা করেন।
কখনো বাজারে, কখনো ইউনিয়নে, কখনো বা হাসপাতালে মানুষের সেবাই ছুটে চলেছেন তিনি। আবার কখনো দিন রাত্র ছুটে চলেছেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে। কখনো বা ছুটে চলেছেন মধ্যরাতে বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে। মানুষকে ভালো কাজে উৎসাহ এবং খারাপ কাজে নিরুৎসাহিত করে চলেছেন মণিরামপুরের ইউএনও।
তার এমন কাজকে সাধুবাদ জানিয়েছেন মণিরামপুরেন সুশিল সমাজ। মণিরামপুরের সৌন্দর্যবর্ধন শহিদ মিনার স্থাপিত হয় তার হাত ধরে। স্কুল/কলেজে ছাত্র ছাত্রিদের শতভাগ উপস্থিতি নিশ্চিত সহ শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করতে দেখা গেছে তাকে। রাস্তার দুইপাশে অবৈধভাবে গড়ে ওঠে দোকানগুলো অপসারণ সহ সকল প্রকার আইনের বিরুদ্ধে হওয়া কাজগুলো বন্ধ করে মণিরামপুর বাসির মধ্যে স্বস্তির নিশ্বাস উপহার দেন তিনি।
বর্তমান যশোর- ৫ মণিরামপুর আসন থেকে নির্বাচিত মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব বাবু স্বপন ভট্টাচার্য্য এর সাথে দিক নির্দেশনা মূলক বৈঠক করে মণিরামপুর পৌর মেয়রের সমন্বয়ে কাজ করে চলেছেন জনাব মোঃ আহসান উল্লাহ শরিফী।
বর্তমান এক আতংকের নাম কোভিড-১৯। পুরো বিশ্বব্যাপি এখন মহামারি ধারন করছে করোনা ভাইরাস। বাংলাদেশের অবস্থাও এখন আশঙ্কাজনক। লাশের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এমতাবস্থায় যশোরের মণিরামপুরের স্বনামধন্য নির্বাহী অফিসার গঠণ করেছেন ২৩০সদস্য বিশিষ্ট স্বেচ্ছাসেবী টিম।
করোনাভাইরাস জনিত দূর্যোগ মোকাবেলায় নিয়োজিত এই স্বেচ্ছাসেবীরা মণিরামপুর পৌরসভা সহ ১৭টি ইউনিয়নে কাজ করে চলেছেন। তাছাড়া সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে মণিরামপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে বসিয়েছেন কাচাবাজার। জরুরি প্রয়োজনে বা রোগি বহনের কাজে প্রতি ইউনিয়ন থেকে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের সমন্বয়ে ওয়ার্ড ব্যাপি ১০টি করে ভ্যান ও মটর সাইকেল নির্ধারণ করে দিয়েছেন তিনি।
ইউনিয়নের হত দরিদ্র মানুষের তালিকা করে যাচাই বাচাই করে ত্রাণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছন এই স্বনামধন্য ইউএনও। জনমানুষের এমন প্রিয় হয়ে ওঠার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি শুধুমাত্র মানুষের কল্যাণে কাজ করে চলেছি এবং যতদিন মণিরামপুর থাকছি ততদিন আমি জনমানুষের জন্য কাজ করে যাব ইনশাআল্লাহ। ”
মণিরামপুরের মত জায়গায় কাজ করতে পেরে তিনি গর্বিত বলে মনে করেন এবং দেশের এমন পরিস্থিতি থেকে সকল আধাঁর কেটে আলো আসবেই সে প্রত্যাশা করেন তিনি।