নিজস্ব প্রতিবেদক
সরল বিশ্বাসে নিজের হজ লাইসেন্স ব্যবসায়িক চুক্তির আওতায় লুৎফুর রহমান ফারুকী নামের একজনকে দিয়ে নানাবিধ হয়রানি, বদনাম ও মামলার শিকার হয়েছেন গ্র্যান্ড সিকদার এয়ার ট্রাভেলসের মালিক মো. নাসির উদ্দিন সিকদার। জানা গেছে, নাসির উদ্দিন সিকদারের মালিকাধীন হজ এজেন্সির বিপরীতে হজযাত্রী নিবন্ধনের টাকা দেখিয়ে পাঁচ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ না করে তালবাহানা করছেন লুৎফুর রহমান ফারুকী।এ বিষয়ে প্রতারণার শিকার মো. নাসির উদ্দিন সিকদার বলেন, ‘আমি সরল বিশ্বাস লুৎফুর রহমান ফারুকীকে লাইসেন্স পরিচালনার জন্য দিয়ে বিপদের শিকার, তার কূটচালে সামাজিকভাবে হেয় হচ্ছি; আমার ব্যবসায়িক সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে।’ তিনি জানান, ফারুকীর কারণে আমার গ্র্যান্ড সিকদার এয়ার ট্রাভেলসের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকায় এখনও বৈধ তালিকায় নাম আসেনি। ফলে হজযাত্রী নিবন্ধন করতে পারছি না। এটা নিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে ঘুরেও কোনো প্রতিকার মেলেনি। উল্টো ব্যাংক কর্তৃপক্ষ পাঁচ কোটি টাকা ঋণ আদায়ের জন্য আমার নামে মামলা করেছেন। গ্র্যান্ড সিকদার এয়ার ট্রাভেলস (হজ লাইসেন্স নং-৯২৯) হজ ও উম ব্যবস্থাপনা বিধিমালা অনুযায়ী ২০২৩ সালের ৭ মার্চ গাজীপুর এয়ার ট্রাভেলস (হজ লাইসেন্স নং-৭৮২)-এর মালিক লুৎফুর রহমান ফারুকীর সঙ্গে হজ এজেন্সি নিবন্ধন সনদ হস্তান্তরের আদলে একটি ব্যবসায়িক চুক্তি করেন। চুক্তির শর্তানুযায়ী গ্র্যান্ড সিকদার এয়ার ট্রাভেলসের নামে প্রিমিয়ার ব্যাংক মহাখালী শাখায় একটি ব্যাংক হিসাব খোলা হয়। হিসাবটি হজকালীন সময়ে পরিচালনার জন্য লুৎফুর রহমান ফারুকীকে অথরাইজড করা হয়। পরে লুৎফুর রহমান ওই হজ লাইসেন্সের বিপরীতে প্রিমিয়ার ব্যাংক মহাখালী শাখা থেকে পাঁচ কোটি টাকার একটি মূলধন ঋণ নেন। ওই ঋণের টাকায় ৪৪৮ জন হজযাত্রীর মূল রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নিদের্শনানুযায়ী ফ্লাইট ভাড়া বাবদ গ্র্যান্ড সিকদার এয়ার ট্রাভেলসের ব্যাংক হিসাবে লিয়েন করে রাখা হয়। হজ লাইসেন্সের বিপরীতে ঋণগ্রহণের কথা জেনে নাসির উদ্দিন সিকদার ব্যাংকে চিঠি দিয়ে লুৎফুর রহমান ফারুকীর হিসাব পরিচালনার ক্ষমতা প্রত্যাহার ও ব্যাংক হিসাব স্থগিত করার অনুরোধ করেন। অন্যদিকে হজযাত্রীদের বিপরীতে ব্যাংক ঋণের জটিলতা নিরসন না করে লুৎফুর রহমান ফারুকী রেজিস্ট্রেনকৃত ৪৪৮ জন হজযাত্রীকে আল রিসান ট্রাভেলস (হজ লাইসেন্স নং ৬৭২) স্থানান্তর করা হয়। এই লাইসেন্সটিও লুৎফুর রহমান ফারুকী অন্যের কাছ থেকে ব্যবসায়িকভাবে পরিচালনার জন্য গ্রহণ করেছেন।এভাবে মূল এজেন্সির মালিকের অনুমতি ছাড়া স্থানান্তরের ফলে ৪৪৮ হজযাত্রীর উড়োজাহাজ ভাড়া পরিশোধের বিষয়টি আরও জটিল হয়। এটা নিয়ে পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি হয়। এমনকি লুৎফুর রহমান ফারুকীর হজ রেজিস্ট্রেশন, হজযাত্রী স্থানান্তর, হজযাত্রীর উড়োজাহাজ ভাড়া সংক্রান্ত নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা, হজযাত্রীদের বাংলাদেশে রেখে সৌদি আরবে চলে যাওয়া, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একাধিক চিঠি এবং হজ কার্যক্রমে তাকে নিষিদ্ধ করার কথা গণমাধ্যমে মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়।