1. jitsolution24@gmail.com : admin :
  2. shantokh@gmail.com : Sharif Azibur Rahman : Sharif Azibur Rahman
শিরোনামঃ

“চিকিৎসক ফয়সাল” কর্তৃক রোগীকে জুতাপেটা অতঃপর পায়ে ধরে রেহাই

  • প্রকাশের সময় বুধবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৪৯ বার সংবাদটি পাঠিত
“চিকিৎসক ফয়সাল” কর্তৃক রোগীকে জুতাপেটা অতঃপর পায়ে ধরে রেহাই
মোঃ ইব্রাহিম খলিল,সাতক্ষীরা 
সাতক্ষীরায় চিকিৎসক ফয়সালের বিরুদ্ধে রোগীকে জুতাপেটা, কান ধরে উঠবস, সিরিয়াল নিয়ে দূর্নীতি সহ একাধিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশের পর অভিযুক্তরা নিজেদেরকে বাঁচাতে ভুক্তভোগী রোগী ও তার স্বজনদের কাছে প্রথমে ক্ষমা প্রার্থনা এবং পরে পায়ে ধরে তবেই রেহাই পায়। প্রসঙ্গত, সিরিয়াল না মেনে রোগী দেখার প্রতিবাদ করায় এক নারী রোগীকে জুতা দিয়ে পিটিয়ে কান ধরে উঠবস করিয়েছেন সাতক্ষীরা হার্ট ফাউন্ডেশনের পরিচালক ডা. ফয়সাল আহমেদ। একপর্যায় ভুক্তভোগী রোগী বিউটি বেগমকে বাঁচাতে গিয়ে তার মেয়ে শ্লীলতাহানির শিকার হন। গত ৯ নভেম্বর দুপুরে হার্ট ফাউন্ডেশনের পরিচালক চিকিৎসক ফয়সাল আহমেদের কাটিয়া আমতলা বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। মারপিটের শিকার নারী বিউটি বেগম (৫৫) সাতক্ষীরা কলারোয়া থানার শাকদাহ গ্রামের মোকাজ্জেল হোসেনের স্ত্রী। এ ঘটনায় সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী বিউটি বেগম। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৮ নভেম্বর হার্ট ফাউন্ডেশনে সিরিয়াল দেন বিউটি বেগম। পরদিন ৯ নভেম্বর দুপুরে চিকিৎসা নিতে প্রথমে হার্ট ফাউন্ডেশনে গেলে সেখানকার কর্মকর্তারা চিকিৎসক ফয়সাল আহমেদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। সেখানে  সিরিয়াল অনুযায়ী দীর্ঘ সময় অপেক্ষারত কালীন  ভুক্তভোগী দেখেন সিরিয়াল ভেঙে অনিয়ম করে ডাক্তার অন্য রোগী দেখছেন। এসময় ভুক্তভোগী নারী বিউটি বেগম ডাক্তারের চেম্বারে গিয়ে বিষয়টি অবহিত করায় চিকিৎসক তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার একপর্যায় এলোপাতাড়ি কিলঘুষি ও চড় থাপ্পড় মারতে থাকেন। পরে মাথার চুলের মুঠি ধরে টানা হেঁচড়া করে পা থেকে জুতা খুলে ভুক্তভোগীর চোখে মুখে কানে ও মাথায় মারেন। মারপিট শেষে উপস্থিত রোগীদের সামনে ভুক্তভোগী বিউটি বেগমকে কান ধরে উঠবস করান। কান ধরে উঠবস কালীন সময় বিউটি বেগমের মেয়ে থামাতে গেলে ডাক্তার ক্ষিপ্ত হয়ে ভুক্তভোগীর মেয়েকেও মারধর করেন। এছাড়া শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানি ঘটান। শ্লীলতাহানির শিকার ওই তরুণী বলেন, আমি আম্মুর ওখানে গিয়ে দেখি তাকে চুলের মুঠো ধরে নিচে নামিয়ে ফেলেছে। আমি বাঁচাতে গেলে আমাকেও মারধর করে খারাপ স্পর্শ করেছে। এসময় ডাক্তার আমাকে ও আম্মুকে জুতা দিয়ে পিটিয়েছে। এর পর ডাক্তার আম্মুকে বলছে- তুই এখানে তিনবার সরি বলবি আর কান ধরে ওঠবস করবি। আম্মু বলছে- আমি তো কোনো অন্যায় করিনি কেন সরি বলবো, কান ধরে উঠবস করবো। এ কথা বলা মাত্র আবার আম্মুকে জুতা দিয়ে মুখে জুতার বাড়ি মেরেছে। ডাক্তার লাথি মেরে বলেছে- এই ভিখারি বাচ্চারে এখান থেকে সরা। ঘাড় ধরে এখান থেকে বের করে দে। ভুক্তভোগী ঐ নারী বলেন, ডাক্তারের এসব অপকর্ম আমি ফোনে ভিডিও করলে আমার ফোন কেড়ে নিয়ে রিসেট দিয়ে দেয়। পরে আমার মুখের উপর ফোন ছুড়ে মারে। ডাক্তারের নির্দেশে আল আমিন নামে এক কর্মচারী আমাদের গলা টিপে ধরে তাড়িয়ে দেন। এ নিয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। চিকিৎসক ফয়সাল সহ হার্ট ফাউন্ডেশনে কর্মরত অভিযুক্তদের এমন জঘন্য অপকর্মে সাতক্ষীরায় ব্যপক আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বইছে। সচেতন মহল ও সুশীল সমাজের ব্যক্তিদের মতে, একজন চিকিৎসক হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং দাপট প্রদর্শন খুবই নিন্দনীয় কাজ। এদিকে, চিকিৎসক ফয়সাল আহমেদ কর্তৃক রোগীর কান ধরে উঠবস, মারপিট ও শ্লীলতাহানির বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ায় দোড় ঝাপ শুরু করেন অভিযুক্তরা। এর প্রেক্ষিতে হার্ট ফাউন্ডেশনের অভিযুক্তরা নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে ভুক্তভোগী বিউটি বেগম ও তার স্বজনদের পা ধরে ক্ষমা চেয়ে রেহাই পেয়েছেন। ভুক্তভোগী বিউটি বেগম বলেন, চিকিৎসক ফয়সাল আহমেদের পক্ষ থেকে দেব্রত কুমার আমাদেরকে বারবার কল দেয় এবং বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য হার্ট ফাউন্ডেশনে যাওয়ার অনুরোধ করেন। আমরা মীমাংসার জন্য হার্ট ফাউন্ডেশনে গেলে দেবব্রত ডাক্তার শেখ ফয়সাল আহমেদর হয়ে আমার পা জড়িয়ে ধরে ক্ষমা চায়।  এ বিষয়ে তাদের মান সম্মান খুন্ন হচ্ছে এজন্য একটি আপসনামায় স্বাক্ষর করতে বলেন। ভুক্তভোগী বিউটি বেগম বলেন, ক্ষমা চাওয়ায় আমি আপসনামায় স্বাক্ষর করেছি। বিউটি বেগমের মেয়ে বলেন, সেদিন আমি মাকে বাঁচাতে গেলে আমাকেও মারধর করে খারাপ স্পর্শ করেছে। এ সময় ডাক্তার আমাকে ও আম্মুকে জুতা দিয়ে পিটিয়েছিলো। এ ঘটনায় সংবাদ প্রকাশের পর মীমাংসার জন্য বারবার আকুতি -মিনতি করার কারণে আমি সহ আমার আম্মার সাথে হার্ট ফাউন্ডেশনে যাই। হার্ট ফাউন্ডেশন ম্যানেজার দেবব্রত আমার মায়ের পা ধরে ক্ষমা চায়। এছাড়া আমার সাথে ডাক্তারের নির্দেশে খারাপ ব্যবহার করা আল আমিন সহ আরেক স্টাফকে চড়-থাপ্পর মারে। পরে আমরা ১২ নভেম্বর মীমাংসা করে নিয়েছি।
এ বিষয় সাতক্ষীরা হার্ট ফাউন্ডেশন পরিচালক ডা. ফয়সাল আহমেদকে একাধিকবার মুঠোফোনে  আলাপের চেষ্টাকালে আলাপ কলটি গ্রহণ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ বিষয় সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মোঃ শামিনুল ইসলাম বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছিল। রোগীর স্বজনরা নাকি মিটমাট করে নিয়েছেন। এ বিষয় সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. মোঃ আব্দুস সালাম মুঠোফোনে আলাপকালে বলেন, রোগীর স্বজনরা অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদটি সেয়ার করে পাশে থাকুন

একই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved  2024
Design by JIT SOLUTION