বাংলাদেশ || ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

দেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো আলু উৎসব

দেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো আলু উৎসব

ছবিঃ প্রতিদিনের কণ্ঠ।

কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:৫৭, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫

আলু চাষিদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ডিসেম্বর পর্যন্ত কোল্ড স্টোরেজে পুরাতন আলু সংরক্ষণ করতে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনকে অনুরোধ জানিয়েছেন কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক প্রথমবারের মতো আয়োজিত আলু উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অনুরোধ জানান।উপদেষ্টা বলেন, এ বছর রেকর্ড পরিমাণ প্রায় ১ কোটি ১২ লাখ মেট্রিক টন আলু উৎপাদিত হয়েছে; যা চাহিদার তুলনায় প্রায় ২২ লাখ মেট্রিক টন বেশি। ২০২৫ সালে আলু উৎপাদন খরচ কেজিপ্রতি স্থানভেদে ১৪ থেকে ১৭ টাকা। হিমাগারে সংরক্ষণ খরচ, পরিবহণ, বস্তা, লেবার ও অন্যান্য খরচসহ কেজিপ্রতি আলুর হিমাগার গেটে খরচ দাঁড়িয়েছে ২০-২৫ টাকা। বিপরীতে আলু চাষি কৃষকরা হিমাগার গেটে ৮ থেকে ১৬ টাকা কেজি মূল্যে আলু বিক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছেন। যা তাদের উৎপাদন খরচের চেয়েও অনেক কম। এর ফলে আলু চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।তিনি বলেন, এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ডিসেম্বর পর্যন্ত কোল্ড স্টোরেজে পুরাতন আলু সংরক্ষণ করতে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। তাছাড়া এ বছর নতুন আলু বাজারে আসতে ১৫ দিন বেশি সময় লাগবে। তাই কৃষকদের বৃহত্তর স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে কোল্ড স্টোরেজ মালিকরা হয়তো সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হবে। তবে খাদ্য উৎপাদনের কারিগর কৃষকরা লাভবান হবেন। তিনি এ সময় কেজিপ্রতি আলু উৎপাদনের খরচ কমিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, দেশে বিপুল পরিমাণে আলু উৎপাদিত হলেও প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে আমরা পিছিয়ে রয়েছি। বাংলাদেশে মাত্র ২% আলু প্রক্রিয়াজাতকরণ করা হয় অথচ বিশ্বের অন্য দেশে এর পরিমাণ ৭%। তাই আলু প্রক্রিয়াজাতকরণের ওপর আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। আর এজন্য প্রয়োজন প্রক্রিয়াজাত উপযোগী আলুর উত্তম জাত নির্বাচন ও তার চাষাবাদ।

উপদেষ্টা বলেন, আমদানিকৃত আলু বীজের প্যাকেটের নির্দিষ্ট দাম লিখে দিতে হবে। এতে কৃষকরা উপকৃত হবেন।

কৃষি উপদেষ্টা বলেন, এ বছর পর্যাপ্ত পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। তারপরও কারো কারো কারসাজিতে একদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৩৫ টাকা বেড়ে যাওয়ায় ভোক্তাদের স্বার্থে আমরা পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিতে বাধ্য হয়েছি। বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৭০-৮০ টাকা না আসা পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানি চলবে।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন- কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. একে ফজলুল হক, বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত জোরিস ভ্যান বোমেল, হ্যাংজু ফিমা এক্সপো কোং লিমিটেড.চায়নার জেনারেল ম্যানেজার টনি এলভি প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর/সংস্থা/অ্যাসোসিয়েশন/চেম্বারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা এবং দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত হিমাগার মালিক, আলুচাষি কৃষক, ব্যবসায়িক নেতা ও উদ্যোক্তারা অংশগ্রহণ করেন।