স্টাফ রিপোর্টার : যশোর জেলায় ২৫০ জন চিকিৎসকের মধ্যে ১৭৯জন চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন। শূন্য রয়েছে ৭১টি। আর ৩২৯জন নার্সের মধ্যে দায়িত্ব পালন করছেন ৩১৮ জন। আবার যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে মেডিকেল কলেজের ৭১জন ক্লিনিক্যাল শিক্ষক চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন। তারপরও যশোরে সাধারণ মানুষ উপযুক্ত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রশাসনের নজরদারি ও দায়িত্বহীনতার কারণে চিকিৎসকের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ রোগীরা।
যশোরের সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন জানান, যশোর জেলা ও উপজেলায় মোট ১৯৫টি চিকিৎসকের পদ রয়েছে। এর মধ্যে ১৩৯টি পদে চিকিৎসক রয়েছেন। খালী রয়েছে ৫৬টি পদ। পদগুলির মধ্যে জুনিয়র কনসালটেন্ট (বক্ষব্যাধি)১টি, উপজেলা পর্যায়ে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ৭টি পদের মধ্যে ৩টি শূন্য, জুনিয়র কন: (এ্যানেসথিয়া) ৮টি পদের মধ্যে ৬টি শূন্য, মেডিকেল অফিসার জেলা পর্যায়ে ৭টির মধ্যে ১টি শূন্য, উপজেলা পর্যায়ে ৩৭টি পদের মধ্যে ৭টি শূন্য, জুনিয়র কন: (সার্জারি) ৭টি পদের মধ্যে ৭টি শূন্য, জুনিয়র কন: (মেডিসিন) ৭টি পদের মধ্যে ৭টি শূন্য, জুনিয়র কন: (গাইনি) ৭টির মধ্যে ৩টি শূন্য, জুনিয়র কন: (শিশু) ৩টির মধ্যে ৩টি শূন্য, জুনিয়র কন : (অর্থো) ৩টির মধ্যে ৩টি শূন্য, জুনিয়র কন : (কার্ডিও) ৩টির মধ্যে ৩টি শূন্য, জুনিয়র কন : (চক্ষু) ৩টির মধ্যে ৩টি শূন্য, জুনিয়র কন : (ইএনটি) ৩টির মধ্যে ৩টি শূন্য, জুনিয়র কন: (চর্ম ও যৌন) ৩টির মধ্যে ৩টি শূন্য, মেডিকেল অফিসার (লেপ্রসী) জেলা পর্যায়ে ১টি পদ শূন্য, সহকারি সার্জন ৭০টির মধ্যে ১টি শূন্য, এমও (মেডিকেল অফিসার) ৩টির মধ্যে ১টি শূন্য, আইএমও (ইনডোর মেডিকেল অফিসার) ৩টি পদের মধ্যে ৩টি শূন্য, ইএমও (ইমার্জন্সি মেডিকেল অফিসার) ৩টির মধ্যে ৩টি শূন্য, প্যাথলজি ৩টি পদের মধ্যে ১টি শূন্য, এ্যানেসথেসিস্ট ৩টির মধ্যে ১টি শূন্য, মেডিকেল অফিসার ইউনানী/ হোমিও ৪টির মধ্যে ১টি শূন্য, ফিল্ড অফিসার জেলা পর্যায়ে ১টির মধ্যে ১টি শূন্য জেলা পর্যায়ে ১৪টির মধ্যে ৩টি শূন্য রয়েছে।
হাসপাতালের দ্বিতীয় শ্রেণির জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পদ রয়েছে ২১৪টি। এর মধ্যে শূন্য রয়েছে ২৬টি। জেলার একমাত্র স্বাস্থ্য তত্বাধায়ক একটি পদ। সেটিও রয়েছে শূন্য। একমাত্র পুষ্টিবিদ (ঝিকরগাছা উপজেলা) সেটিও শূন্য। সিনিয়র স্টাফ নার্স ১৪০টি পদের মধ্যে ৬টি শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে জেলা পর্যায়ে ৫টি পদের কোনটিও শূন্য নেই। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ৩ শ্রেণির পদ রয়েছে ১১০৩টি। এর মধ্যে শূন্য রয়েছে ৩৬৮টি, ৪র্থ শ্রেণির ২৩৮টি পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ৮৭টি।
যশোরের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ৫৫টি চিকিৎসকের বিপরীতে শূন্য আছে ১৫টি। এছাড়া ১৮৯টি সিনিয়র স্টাফ নার্সের মধ্যে ৫ জন নেই। ৩ শ্রেণির ৩৭টি পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ৭টি, ৪র্থ শ্রেণির ১০৪টি পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ৮টি। এর মধ্যে দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ শ্রেণিতে ৬০জন স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন।
যশোর মেডিকেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন জানিয়েছেন, যশোর মেডিকেল কলেজের বর্তমান কর্মরত রয়েছেন ১০৯জন শিক্ষক। শূন্য রয়েছে ৩৬টি, এর মধ্যে প্রভাষক ২জন, অধ্যাপক ১৪জন, সহযোগী অধ্যাপক ১৬, সহকারি অধ্যাপক পদে ৪জন। এর মধ্যে ৭১জন ক্লিনিক্যাল শিক্ষক যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের রোগীর স্বজনরা জানান, হাসপাতালে ৫৫টি পদের মধ্যে বর্তমানে মেডিকেলের চিকিৎসকসহ কর্মরত রয়েছেন ১০৫জন। ৬০জন স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন অতিরিক্ত।
এর মধ্যে যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসলে ইন্টার্ণ ডাক্তার ছাড়া পাওয়া যায় না।
অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালের চিকিৎসকরা হাসপাতালের ডিউটির সময় বিভিন্ন ক্লিনিকে রোগী দেখেন। আর হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। ফলে সাধারণ মানুষ হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না। একই অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য সেবা কমপ্লেক্সে। দিনের অধিকাংশ সময় নিজস্ব ক্লিনিক বা বিভিন্ন ক্লিনিকে রোগী দেখেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে করোনার কারণে নামমাত্র রোগী দেখছেন চিকিৎসকরা। সরকারের কড়া নির্দেশনা থাকলেও তারা মানছেন না। তারপর যশোরের স্বাস্থ্য প্রশাসন চিকিৎসকদের প্রতি নজরদারি তেমন একটা নেই। ফলে চিকিৎসকদের খামখেয়ালিপনা বা স্বেচ্ছাচারিতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। যার ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনার কারনে যশোরের প্রায় অধিকাংশ ক্লিনিকে ডাক্তাররা রোগী দেখছেন না৷ ক্লিনিক মালিক সমিতি,বি এম এ,সিভিল সার্জন একাধিক বার অনুরোধ করে চিকিৎসক দেরকে বেসরকারী ক্লিনিকে রোগী রোগী দেখার জন্য বসাতে পারেনি এতে করে এই এলাকার অধিকাংশ সাধারন রোগী চিকিৎসা সেবা থেকে বন্চিত হচ্ছে।