কন্ঠ ডেস্ক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে তোফাজ্জল নামের মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আট শিক্ষার্থীর আবাসিক সিট গত শুক্রবারই বাতিল করেছে হল প্রশাসন। গতকাল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই আট জনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের আদেশ দিয়েছে। গতকাল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। অভিযুক্তরা হলো, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জালাল মিয়া; মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সুমন; একই শিক্ষাবর্ষের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মোত্তাকীন সাকিন; ভ‚গোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের আল হোসাইন সাজ্জাদ; গণিত বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আহসান উল্লাহ এবং অপর শিক্ষার্থী ওয়াজিবুল আলম। এরইমধ্যে এই ছয় জনকে থানায় সোপর্দ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অন্য দুজন হলো, ২০২০-২১ সেশনের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের মো. ফিরোজ কবির ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের মো. আবদুস সামাদ। এদিকে এ ঘটনায় হল প্রভোস্ট ড. শাহ মু. মাসুমকে অপসারণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াস আল-মামুনকে ওই হলের প্রভোস্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে অভিযুক্ত ৮ জন ছাত্রের আবাসিক সিট হল প্রশাসন বাতিল করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত ৮ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের আদেশ দিয়েছে। এ ছাড়া, ফজলুল হক মুসলিম হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শাহ্ মো. মাসুমকে পরিবর্তন করে ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াস আল-মামুনকে হলটির নতুন প্রভোস্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তোফাজ্জল নামের ওই যুবক গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে বঙ্গবাজার এলাকার পার্শ্ববর্তী ফজলুল হক মুসলিম হলের ফটক দিয়ে মাঠের ভেতরে যান। তখন কয়েকজন শিক্ষার্থী চোর সন্দেহে তাকে আটক করে হলের অতিথি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তাকে মারধর করা হয়। পরে তোফাজ্জলকে হলের ক্যানটিনে নিয়ে রাতের খাবার খাওয়ানো হয়। এরপর আবার তাকে হলের অতিথি কক্ষে এনে ব্যাপকভাবে মারধর করেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, এ সময় ওই যুবককে স্ট্যাম্প দিয়ে মারধর করা হয়েছিল। তারা জানান, ওই দিন দুপুরে হল থেকে কয়েকজন ছাত্রের মোবাইল ও মানি ব্যাগ চুরি হয়েছিল। সেই ঘটনায় তোফাজ্জলকে সন্দেহ করে এভাবে মারধর করা হয়। পরে রাত ১২টার দিকে হলের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষক তোফাজ্জলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।