মনিরুজ্জামান মিল্টন,অভয়নগর
জলাবদ্ধতা সমস্যার স্থায়ী সমাধানেকল্পে যশোরের দূঃখ নামে খ্যাত ভবদহ অঞ্চলের বিলে দ্রæত টি আরএম (টাই ডাল রিভার ম্যানেজমেন্টবা জোয়ারা ধার) চালুর দাবি জানানো হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার সময় ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটি মণিরামপুর উপজেলার মশিয়াহাটি ড়িগ্রী কলেজ মাঠে পানির মধ্যে দাঁড়িয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিন দফা দাবি জানান।অপর দুদফা দাবির মধ্যে রয়েছে, আমডাঙ্গা খাল দ্রæত সংস্কার এবং সাবেক স্থানীয় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব কবীর বিন আনোয়ার ও সিন্ডিকেটের বিচার দাবি। সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম আহবায়ক মুক্তিযোদ্ধা আ. হামিদ গাজী লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। লিখিত বক্তব্যে দাবি করা হয় দীর্ঘ ৪৪ বছর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এই জনপদের মানুষ স্থায়ী জলাবদ্ধতার শিকার। ভবদহ ¯øুইস গেট প্রস্তাব সহ নদী ও পানি ব্যবস্থাপনার প্রাকৃতিক ব্যবস্থার উপর অযাচিত হস্তক্ষেপ এ জলাবদ্ধতা রকারণ। এই জনপদে ভবদহ ¯øুইসগেট একটি মরণ ফাঁদ। পাম্পের মাধ্যমে সেচ প্রকল্প গ্রহন করে ২০০ থেকে ৩০০ ফিট প্রশস্ত ও সুগভীর নদী হত্যা করা হয়েছে। ওই সময়ে সংস্কারের নামে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় পানি উন্নয়ন বোডর্, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক ও ঠিকাদার চক্রের সিন্ডিকেট লুটপাটের সুবিধার্থেই তা করা হয়েছে বলে প্রমানিত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ভবদহ এলাকার জনগণের ফসল, বসতবাড়ি, স্কুল , কলেজ, রাস্তাঘাট, ব্যবসা-বাণিজ্য যার পরিমান হাজার হাজার কোটি টাকা সবই পানিতে ডুবে গেছে। অতীতে অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন। এলাকা প্রাণ প্রকৃতি জীব বৈচিত্র হারিয়েছে। অনেকেই এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। জনগণ উদ্ভাবিত টিআর এম প্রকল্প আন্দোলনের চাপে গৃহীত হলেও বিগত সরকার ২০১২ সালে সরকারি কর্মকর্তাদের উপর হামলার অজুহাতে তা বাতিল করে দেয়। এই হামলা সংগঠিত হয় স্বপনভট্টাচার্যের প্রত্যক্ষ সহায়তায় সশস্ত্র গুন্ডা ও ঘের মালিকদের নেতৃত্বে। সম্মেলনে বলা হয়, ভবদহ এলাকার মনিরামপুর, কেশবপুর ও অভয়নগর উপজেলার অন্তত ৬০ টি গ্রাম ইতি মধ্যে ডুবে গেছে। জলাবদ্ধতা বিস্তৃত হয়েছে খুলনার ডুমুরিয়া ও যশোর শহর পর্যন্ত। শুধু তাই নয়এভাবে চলতে থাকলে যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে মোহনা পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার নদী অববাহিকার ৪ শতাধিক গ্রাম আবাদ ফসল, বসতবাড়ী ঘর,রাস্তা-ঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কবর খানা, শ্মশান, ব্যবসা-বানিজ্য পানির তলে চলে যাবে। সম্মেলনে বলা হয়, গত ৮ সেপ্টেম্বর বর্তমান সরকারের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারক লিপি প্রদানকরা হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনো ব্যাবস্থা নেওয়া হয়নি। সম্মেলনে দাবির বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ না করা হলে আগামী পাঁচ অক্টোবর ভবদহ দিবসে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের হুসিয়ারী দেওয়া হয়।এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগ্রাম কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ, সংগ্রাম কমিটির নেতা শিবপদ বিশ্বাস, অনিল বিশ্বাস, উৎপল বিশ্বাস,শেখর বিশ্বাস, নাজিম উদ্দিন, পলাশ বিশ্বাস, সুকৃতি বিশ্বাস, মহির উদ্দিন, রাজু আহমেদ, আজিজুর প্রমুখ।