রাজধানী টোকিওতে শুক্রবারের ২০১টি নতুন সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর উদ্বিগ্ন জাপান এখন পরপর দুদিন নতুন ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার সংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় কিছুটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে। তবে জাপান সরকার কিংবা সংক্রমণবিশেষজ্ঞরা অবশ্য এটাকে সাফল্য হিসেবে ধরে নিতে নারাজ। কেননা করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ওঠানামা নতুন কিছু নয়। চীন ও দক্ষিণ কোরিয়াতেও সাফল্য আসার আগে এমনটা লক্ষ করা গেছে।
টোকিওতে আজ ১০৭টি নতুন সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়। গতকাল শনিবার এই সংখ্যা ছিল ১৮১। এর ফলে সংখ্যাগত দিকের এই পতন রাজধানীবাসীদের মনে স্বস্তি নিয়ে এলেও আগামী কয়েক দিনে সংক্রমণ কোন পথে যায়, তা দেখার অপেক্ষায় তাঁরা আছেন। তবে দিনের হিসাবে সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার সংখ্যা হ্রাস পেলেও এটা টোকিওর সার্বিক হিসাব ৩ হাজারের ওপরে ঠেলে দিয়েছে। এদিকে উত্তরের হোক্কাইডো জেলায় ২৬টি নতুন সংক্রমণ আজ রোববার শনাক্ত হওয়ায় সেখানে আবারও করোনাভাইরাস আঘাত হানা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। হোক্কাইডোতে গত মাসে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার পর একসময় তা যথেষ্ট নিচে নেমে এসেছিল।
জাপান সরকার অবশ্য করোনার সংক্রমণ সামাল দেওয়ায় নেওয়া পদক্ষেপ জোরদার করা অব্যাহত রেখেছে। আজ এক ঘোষণায় জানানো হয়, করোনাভাইরাসের হালকা উপসর্গ দেখা দেওয়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য সরকার সারা দেশে ২ লাখের বেশি হোটেলকক্ষ নিশ্চিত করেছে। কিছু কিছু হোটেলে ইতিমধ্যে রোগীদের সমাগম শুরু হয়েছে। হালকা উপসর্গের রোগীদের দুই সপ্তাহ এসব হোটেলে রেখে তাদের প্রচলিত চিকিৎসা দেওয়া হবে এবং অবস্থার উন্নতি লক্ষ করা গেলে দুই সপ্তাহ পর ছেড়ে দেওয়া হবে। অন্যদিকে অবস্থার অবনতি যাদের বেলায় দেখা যাবে, তাদেরই শুধু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে। হাসপাতালের ওপর মাত্রাতিরিক্ত চাপ হ্রাস করার লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ সরকার গ্রহণ করে।
এদিকে জরুরি অবস্থা ঘোষণার পর সপ্তাহান্তের ছুটি শেষ হয়ে আসার মুখে জাপানের অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত শ্রমজীবী মানুষের আয় ব্যাপক হ্রাস পাওয়ার খবর দিয়েছে জাপানের সংবাদমাধ্যম। এঁদের অনেকেই রেস্তোরাঁ, পানশালা, দোকান এবং এ রকম অন্যান্য ছোট ব্যবসায় কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন। এ ছাড়া এই দলে বিদেশিদের সংখ্যাও একেবারে কম নয়। এঁরা প্রায় সবাই যেহেতু খণ্ডকালীন কর্মী হিসেবে সেই সব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত, তাই কাজ না থাকা অবস্থায় এঁদের বেতনও বন্ধ হয়ে যায়।
জরুরি অবস্থার মধ্যে সরকারের ঘরে থাকার আহ্বানে সারা দিয়ে জাপানের লোকজন এখন রেস্তোরাঁ কিংবা পানশালা এড়িয়ে চলতে থাকায় বিপদের মুখে পড়তে হচ্ছে সেই সব জায়গায় কাজ করা বেশ বড় এক জনগোষ্ঠীকে। অনেকেই তাকিয়ে আছেন সরকারের ঘোষিত মাথাপিছু ১ লাখ ইয়েন প্রণোদনা সাহায্য পাওয়ার অপেক্ষায় এবং আশা করছেন পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হলে আবারও তাঁরা কাজে ফিরে যেতে পারবেন।