বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর আওয়ামী লীগ এবং দলটির সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের দফায় দফায় হামলার ঘটনা ঘটে। আবার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলিও চালিয়েছে ছাত্র-জনতার ওপর। এতে কয়েক হাজারের অধিক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিনোদন জগতের তারকাদের একটি অংশ প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং রাজপথে নেমেও আন্দোলনে শরিক হয়েছেন। আবার তারকাদের অপর একটি অংশ হোয়াটসঅ্যাপের ‘আলো আসবেই’ নামক একটি গ্রæপ খুলে আন্দোলনের বিরোধিতা করেছেন। এমনকি চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে নিয়েও সমালোচনা করেছেন গ্রæপ সদস্যরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের নেত্রী দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর দলটির অনেক নেতাকর্মীও দেশছাড়ার চেষ্টা করেন। কেউ কেউ আবার আত্মগোপনেও চলে যান। এর মধ্যে আবার আওয়ামীপন্থি কয়েকজন তারকা রয়েছেন, যারা আন্দোলনের সময় বিরোধিতা করেছিলেন। এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার সোশ্যাল মিডিয়া হোয়াটসঅ্যাপের ‘আলো আসবেই’ নামক একটি গ্রæপের কথোপকথনের শতাধিক স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়ে পড়ে সামাজিকমাধ্যমে, যা ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয়েছে সমালোচনার ঝড়। স্ক্রিনশটে দেখা যায়, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত ও সাবেক সংসদ সদস্য চিত্রনায়ক ফেরদৌসের নেতৃত্বে ‘আলো আসবেই’ নামক গ্রæপে কথোপকথন চালিয়েছেন আওয়ামী সমর্থিত শিল্পীরা। গ্রæপটিতে দেখা যায়, ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিতে দেখা গেছে তাদের। এতে অরুণা বিশ্বাস শিক্ষার্থীদের ওপর গরম পানি ঢালার পরামর্শ দেন। আবার অন্য একটি স্ক্রিনশটে দেখা যায় নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে নিয়েও সমালোচনা করেছেন গ্রæপ সদস্যরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে নিজের মতামত জানালেন নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুক ভেরিফায়েডে গত মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে একটি পোস্টে এ নির্মাতা লিখেছেন-সহকর্মী ও ইন্ডাস্ট্রির মানুষদের ফাঁস হওয়া স্ক্রিনশটগুলো উল্লেখ করে যে, তারা অত্যাচারী শাসকের সহযোগী হিসেবে কাজ করছিল এবং আমাকে নিয়ে বিভিন্ন নোংরা শব্দ ব্যবহার করেছে, অত্যাচারী থাকলে তারা হয়তো আমার এবং তিশার কোনো না কোনো ক্ষতি করত। আমার ব্যক্তিগত নিরাময়ের উপায় ভুলে যাচ্ছে। ভালো থাকতে দাও, আমিন। তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের উচিত-আলোচনার মাধ্যমে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা। ১৪৬টি স্ক্রিনশট পাওয়া গেছে। যারা এই আন্দোলনের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে উসকানি দিয়েছে, তাদের সবারই তদন্ত সাপেক্ষে বিচার করা উচিত।’