বেনাপোল প্রতিনিধিঃ যশোর জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন বেনাপোল পৌর মেয়র আশরাফুল আলম লিটন বলেন, আজ বিশ্বমানবতার মা, ডিজিটাল দেশের রুপকার, বিশ্বনন্দিনী প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ৭৪ তম জন্মদিন। ১৯৪৭ সালের এই দিনে তিনি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহন করেন। শেখ হাসিনা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের বড় সন্তান। রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হিসেব ছাত্রজীবন থেকে প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েট ডিগ্রি অর্জনকারী শেখ হাসিনা তৎকালীন ছাত্রলীগের অন্যতম নেতা ছিলেন। গ্রাম বাংলার আনাচে কানাচে পথে প্রান্তরে শত শত মাইল হেটে ১৯৭৫ পর বিধ্বস্ত আওয়ামীলীগকে সু-সংগঠিত করেছিলেন আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা অন্ধকারে আলোর প্রদীপ জ্বেলেছেন।
সোমবার (২৮সেপ্টেম্বর)সকাল১১টার সময় প্রধানমন্ত্রীর ৭৪ তম জন্মদিন উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনা অনুষ্ঠানে শার্শা অডিটরিয়মে দলের নেতাকর্মী সমর্থক শুভানুধ্যায়ীদের নিয়ে আনন্দ উৎসবের মধ্যে দিয়ে পালিত হয়।
নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, কৃষকলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামীলীগ, মহিলা যুবলীগ এর আয়োজনে দলীয় সভাপতি ও প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪ তম জন্মদিন উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনা অনুষ্ঠান অনুষ্টিত হয়।
এ সময় সভাপতিত্ব করেন শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি সাবেক উলাশি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিদুল আলম । অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল কেক কাটা, আনন্দ শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল , দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ ও ৩হাজার গাছের চারা বিতরণ করা হয়।
প্রধান অতিথি মেয়র লিটন বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির জনককে যখন স্ব-পরিবারে হত্যা করা হয়েছিল;তখন আজকের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা ছিলেন জার্মানে। তিনি এদেশের দুঃখী মানুষের কথা ভেবে তার পিতার স্বপন্ন বাস্তবায়ন করার জন্য দেশে ফিরেছিলেন। যে দেশ দীর্ঘ নয়মাস রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষে যুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছে; সেই দেশের মুক্তিযোদ্ধারা যখন রাস্তায় ভ্যান রিক্স্র চালাচ্ছে, রাস্তায় জুতায় কালি করছে। সেই মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য প্রধান মন্ত্রীর প্রান ঁেকদে উঠে। তাই তিনি অসহায় পঙ্গু জামাত বিএনপি দ্বারা নির্যাতিত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য চালু করলেন মুক্তিযোদ্ধা ভাতা। এবং মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যদায় দাফন নিশ্চিত করেছেন মুক্তিয্দ্ধোাদের। আজ সেই নেত্রীর জন্মদিন। আপনারা আজ যে দুঃখ কষ্ট বেদনা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তার সমাপ্তি ঘটবে। আজকের প্রকৃত আওয়ামীলীগ এই শার্শায় নির্য়াতিত হচ্ছে। আপনারা মনে রাখবেন শার্শার মালিক কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তি নয়। শার্শার মালিক শার্শার মানুষ। আপনারা কারো গোলাম নন। আপনারা রাজনীতি করেন জননেত্রীর শেখ হাসিনার রাজনীতি। বঙ্গবন্ধুর ্আদর্শের রাজনীতি। তাই কোন ব্যক্তির হুমকি ধামকিতে ভয় না পেয়ে আপনারা সাহসের সাথে ধর্যৈর সাথে, আদবের সাথে রাজনীতি করেন। যদি কেউ এরপর থেকে আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের অত্যাচার নির্যাতন নিপিড়ন করে তাকে আর ছাড় দেওয়া হবে না। তাকে দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেওয়ার জন্য সকলে প্রস্তুত থাকুন। আপনারা মনে রাখবেন যে ব্যক্তি আজ শার্শার মাটিতে জামাত বিএনপিকে দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নেতৃত্ব দিচ্ছে. বিভাজন বিভেদ সৃষ্টি করছে তাতে আওয়ামীলীগ এর এই শার্শায় ভোট কমছে। বাড়ছে জামাত বিএনপির ভোট। আর চাপের মুখে আছে প্রকৃত ত্যাগী আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীরা।
প্রধান অতিথি মেয়র লিটন বলেন ১৯৭৫ সালের পটপরিবর্তনের পর ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে দলীয় প্রধানের দায়িত্ব নেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। এরপর থেকে ৩৯ বছর ধরে নিজ রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও আপসহীন নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশের অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক রাজনীতির মূল স্রোতধারার প্রধান নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন তিনি। তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও অন্য রাজনৈতিক জোট-দলগুলো ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারবিরোধী গণআন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে বিজয়ী হয়।
১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই তৎকালীন বিএনপি সরকারের পতন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বিজয় অর্জন করে আওয়ামী লীগ। গত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় প্রধান বিরোধী দলের নেতা হিসেবে তার নেতৃত্বে অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে প্রথমে ১৪ দলীয় জোট এবং পরে মহাজোট গড়ে ওঠে। ১৪ দল ও মহাজোটের তীব্র আন্দোলনের মুখে অধ্যাপক ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ২২ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচন করার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি জরুরি অবস্থা জারি করে ড. ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এলে ওই বছরের ১৬ জুলাই অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয় শেখ হাসিনাকে। ওই সময় সংসদ ভবন চত্বরের বিশেষ কারাগারে দীর্ঘ প্রায় ১১ মাস বন্দি ছিলেন তিনি। গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে গিয়ে এর আগেও কয়েক দফা গৃহবন্দিত্ব কেটেছে তার।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এই পর্যন্ত চার মেয়াদে ক্ষমতাসীন হয়েছে। ১৯৯৬ সালে তার নেতৃত্বে দীর্ঘ ২১ বছর পর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দলটি। ওই বছরের ১২ জুনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হয়ে ২৩ জুন সরকার গঠন করে ।
এরপর ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের ঐতিহাসিক নির্বাচনে চার-তৃতীয়াংশ আসনে বিশাল বিজয় অর্জনের মাধ্যমে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গঠিত হয়। দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। ২০১৪ এর ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিজয়ের পর ১২ জানুয়ারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা দ্বিতীয় এবং ২০১৮ এর নির্বাচনে বিজয়ের পর টানা তৃতীয় মেয়াদের তার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়েছে। এছাড়া ১৯৮৬ সালের তৃতীয়, ১৯৯১ সালের পঞ্চম এবং ২০০১ সালের অষ্টম সংসদে অর্থাৎ মোট তিন দফা বিরোধী দলের নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন শেখ হাসিনা।