তাসনিমুল হাসান,ইবিঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের(ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারীর অপসারণের দাবিতে সংগঠিত মানববন্ধনের প্রতিবাদে বিবৃতি প্রদান করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সংগঠন।
রবিবার (২৬ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু পরিষদ, কর্মকর্তাদের সংগঠন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, বঙ্গবন্ধু পরিষদ (অফিসার ইউনিট) ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা পৃথকভাবে মানববন্ধন সম্পর্কে বিবৃতি প্রদান করেছেন ।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রগতিশীল শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু পরিষদ পৃথক এক বিবৃতিতে জানায়, ২৫/০৭/২০ তারিখ কুষ্টিয়া শহরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এর অপসারণ চেয়ে একটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে বঙ্গবন্ধু পরিষদ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ব্যবহার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করছি যে, এই ঘটনার সাথে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত বঙ্গবন্ধু পরিষদ কোনভাবেই সম্পৃক্ত নয় এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদ একটি আদর্শিক সংগঠন,এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে ইবি বঙ্গবন্ধু পরিষদ সমর্থনও করেনা। আশা করি,এই ঘটনার পর সৃষ্ট বিভ্রান্তির অবসান হবে।
অফিসার্স এসোসিয়েশন এর বিবৃতিতে বলা হয়, কুষ্টিয়াতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এর অপসারণ চেয়ে একটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে কর্মকর্তা সমিতি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ব্যবহার করা হয়েছে। প্রকৃত তথ্য হচ্ছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ‘অফিসার এসোসিয়েশনের’ নামে একটি বৃহৎ সংগঠন রয়েছে। মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক হারুন-উর-রশিদ আসকারী এর সততা স্বচ্ছতায় উন্নয়নমূলক ও প্রগতিশীল কর্মকাণ্ডে নজর রাখছি এবং সন্তোষ প্রকাশ করে ইতোপূর্বে বিবৃতি দিয়েছি। এ ব্যাপারে আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করছি যে, অসত্য তথ্য উপস্থাপন করে উপাচার্যকে বিতর্কিত করার মতো কোনো কর্মকাণ্ডের সাথে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অফিসারএসোসিয়েশন’ কোনভাবেই সম্পৃক্ত নয় এবং এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে আমরা সমর্থন করি না। আশাকরি এই ঘোষণার পর সৃষ্ট বিভ্রান্তির অবসান হবে।
বঙ্গবন্ধু পরিষদ অফিসার ইউনিটের সভাপতি আব্দুল হান্নান স্বাক্ষরিত আরেকটি বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৫/০৭/২০ তারিখ কুষ্টিয়াতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর এর অপসারণ চেয়ে একটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে বঙ্গবন্ধু পরিষদ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ব্যবহার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করছি যে, এই কর্মকান্ডের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত বঙ্গবন্ধু পরিষদ কোনভাবেই সম্পৃক্ত নয় এবং এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে ইবি বঙ্গবন্ধু পরিষদ সমর্থন করেনা।
বাংলা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু পরিষদ অফিসার ইউনিট মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডঃ হারুন-উর-রশিদ আসকারী স্যারের প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ে অভূতপূর্ব উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা ধারা অব্যাহত রেখেছে তার জন্য (ইবি) পরিবারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই। শুধু তাই নয় (ইবি) ইতিহাসে এই প্রথম একজন ভাইস চ্যান্সেলর সফলতার সাথে সরকারের পবিত্র অর্পিত দায়িত্বের মেয়াদ পূর্ণ করতে যাচ্ছে। সেই মুহূর্তে একটি ষড়যন্ত্রকারী মহল মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর এর বিরুদ্ধে অসত্য মিথ্যা ভিত্তিহীন ও বানোয়াট গল্প সাজিয়ে দুর্নীতিবাজ বলে মানববন্ধনে কুরুচিসম্পন্ন বক্তব্য প্রদান করেন। বক্তব্যের প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু পরিষদ অফিসার ইউনিট কিনা ও তীব্র নিন্দা জানাই। আশা করি, এই ঘটনার পর সৃষ্ট বিভ্রান্তির অবসান হবে।
এদিকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় , বাংলাদেশ ছাত্রলীগ,ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার জরুরী সিদ্ধান্ত মোতাবেক কে জানানো যাচ্ছে যে, ছাত্রলীগ সবসময় ইতিবাচক কাজের ধারক এবং বাহক। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ইতিবাচক কাজের অংশিদার হতে চায়। ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ বা কোন ব্যক্তিকে হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কথাটি ব্যবহার না করার জন্য সকলকে অনুরোধ করা যাচ্ছে। আমরা জানি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ডক্টর রশিদ আসকারী একজন সৎ, নির্লোভ এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শের আদর্শবান একজন ব্যক্তি তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন এর নামে কতিপয় বিতর্কিত ব্যক্তিরা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে সাবেক শিবির কর্মীর হাতে ব্যানার তুলে দিয়েছেন এবং তা নিয়ে কিছু সংবাদমাধ্যমে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে আমরা মনে করি। তাই পরবর্তীতে এই সমস্ত কাজ থেকে সকলকে বিরত থাকার নির্দেশ প্রদান করা হলো।
উল্লেখ্য, গত ২৫/০৭/২০ তারিখ কুষ্টিয়াতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অপসারণ চেয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও কর্মকর্তা সমিতির ব্যানারে একটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অপসারণ দাবি করে। সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদ জানিয়ে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করে একই সাথে তারা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারীকে পুনরায় নিয়োগের দাবি জানায়।