হাবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে স্বপ্ন ছোয়ার প্রত্যয়ে শত শত মাইল পাড়ি জমিয়ে শিক্ষার্থীরা জায়গা করে নেয় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। একটা পরিচয় তৈরী করার জন্য, একটা জায়গা খুঁজে নেওয়ার জন্য তাদের কতইনা যুদ্ধ করতে হয়!
অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা শিক্ষার্থীদের কিছু সংখ্যক ছাড়া বাকিদের সবাইই আসে মফস্বল গ্রামাঞ্চল থেকে যারা হয় গরীব মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান, দুবেলা খাবার যোগাড় করা তাদের পরিবারের বাবার জন্য যেখানে দুরূহ ব্যাপার।
তবুও স্বপ্ন থেমে থাকেনা, একদিন দেশসেরা হয়ে অনেক বড় সম্মান অর্জন করে বাবার দুঃখ মুছে দেওয়ার প্রত্যয় নিয়ে তাই মফস্বলের ছেলেটিও ঝড় বাদল সমস্ত প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে টিউশন করে নিজের খরচ যোগায়। কখনও আবার অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার জন্যেও তাকে বাড়িতে উল্টে টাকা পাঠাতে হয়। ইচ্ছে হলেও তারা ধনীর আদুরে ছেলের মতো বাড়িতে যেতে পারেনা, একবেলা না খেয়ে থেকেও হাসি মুখে বলতে শিখে নেয় ‘ভাল আছি’।
করোনা প্রদূর্ভাবের দরূণ প্রায় তিন মাস দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে আছে৷ এমন অবস্থাতে দেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলি অনলাইনে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে অনলাইন ক্লাস শুরু করার এবং বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাস শুরুও করে দিয়েছে।
দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই দরিদ্র ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেনির এবং প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের যেখানে কথা বলার মতো নেটওয়ার্কই পাওয়া যায় না ঠিকমত সেখানে তারা অনলাইন ক্লাস কিভাবে করতে পারবে! তাছাড়া অনলাইন ক্লাস চালানোর জন্য যে ধরণের ডিভাইস প্রয়োজন তা কেনার মত সামর্থ অনেকেরই থাকেনা। সুতরাং শিক্ষার্থীদের একটা অংশ কোনভাবে ক্লাস করার ব্যবস্থা করে নিলেও অধিকাংশই তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
প্রধানত, মফস্বলে বাস করার কারণে তারা প্রয়োজনীয় নেট সার্ভিস পাচ্ছেনা, তারপর প্রয়োজনীয় ডিভাইস ও উচ্চমূল্যে ডাটা প্যাক কেনার মতো সামর্থ তাদের হচ্ছেনা।
এমনভাবে চলতে থাকলে একটা সময় এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বৈষম্যগুলো যোগ্যতার বিচারে অনেক বড় ফারাক হয়ে দাড়াবে। ঝরে পড়বে মফস্বল থেকে লড়াই করে বাবার দুঃখ মুছে দেওয়ার স্বপ্ন দেখা শিক্ষার্থীরা।