আজিজুর রহমান, কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধিঃ
কেশবপুরে প্রভাবশালী এক ব্যক্তি মঙ্গলবার রাতে উপজেলার খতিয়াখালি বিলের একটি মাছের ঘের জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে। এসময় বাধা দিতে গেলে ঘেরের ম্যানেজারসহ ৪ জন আহত হয়। এঘটনায় ঘের মালিক সেলিমুজ্জামান আসাদ থানায় অভিযোগ করেছেন।
খবর পেয়ে বুধবার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ৪ বছর আগে উপজেলার খতিয়াখালি বিলের ৩৫ বিঘা জমি কৃষকের কাছ থেকে লিজ নিয়ে মাছের ঘের করেন শহরের আলতাপোল এলাকার মেসার্স রাহেলা ফিসারিজের স্বত্ত¡াধিকারী মো. সেলিমুজ্জামান আসাদ। বিগত ৪ বছরের মেয়াদ পূর্ণ হবার পর তিনি কৃষকের নিকট থেকে প্রতি বিঘা সাদা জমি ১৩ হাজার ও খাল ভেড়ির বার্ষিক হারি ৩৬ হাজার টাকা চুক্তিতে পুনরায় চলতি বছরের ১ জুন লিজ হিসেবে গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে কৃষকের দাবি অনুযায়ী সেলিমুজ্জামান আসাদ বিঘা প্রতি সাদা জমির হারি ১৬ হাজার টাকা বাড়িয়ে দেন।
৫৫ জন জমির মালিকের মধ্যে ১০/১১ জন ওই চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর না করে উপজেলার খতিয়াখালি গ্রামের মিঠু দত্তের নামে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন। সেলিমুজ্জামান আসাদ হারির টাকা পরিশোধ করেন না মর্মে জমির মালিকগণের পক্ষে খতিয়াখালি গ্রামের আনিছুর রহমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
পরবর্তীতে তিনি নিজের ভুল বুঝতে পেরে তার অভিযোগটি লিখিতভাবে প্রত্যাহার করে নেন। এ ব্যাপারে মিঠু দত্ত জানান, এলাকার কৃষকরা নিজ নিজ উদ্যোগেই তাদের জমি আমার নামে লিজ দিয়ে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করে দিয়েছেন। ঘেরের টংঘর ভাঙ্গার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। কে বা কারা টংঘর ভেঙ্গেছে তাও আমি জানি না।
সেলিমুজ্জামান আসাদ বলেন, ওই ঘেরে আমার ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকার মাছ রয়েছে। গত ৪ বছর যাবত ওই ঘেরটি করে আসছি।
কোন কৃষকের সাথে হারির টাকা নিয়ে এখনও পর্যন্ত সমস্যা হয়নি। এবারও জমির মালিকদের সাথে চুক্তিপত্র হয়েছে। মোট ৫৫ জন জমির মালিকের মধ্যে ১০/১১ জন জমির মালিক ওই চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর না করে উপজেলার খতিয়াখালি গ্রামের মিঠু দত্তের নামে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন। তার ইন্দন ও উপস্থিতিতে আমার ঘেরটি দখল করে নিয়েছে।এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মৃনাল কান্তি দাস বলেন, ঘেরকে কেন্দ্র করে যে ঘটনা ঘটেছে তা অনাকাঙ্খিত।
উভয়পক্ষ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিলে কোন সমস্যা হতো না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।কেশবপুর নাগরিক সমাজের সভাপতি ও ওই ঘেরের জমির মালিক এডভোকেট আবু বক্কর সিদ্দিকী জানান, গত ৪ বছর যাবত সেলিমুজ্জামান আসাদ এলাকার জমির মালিকদের কাছ থেকে হারির টাকা দিয়ে লিজ নিয়ে মাছ চাষ করে আসছেন। ঘেরের ভিতর থাকা আমার চাষকৃত জমিও চুক্তি মোতাবেক হারির টাকা নিয়ে লিচ দিয়েছি।
মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন চুক্তি পত্রে আমিসহ ৯০ শতাংশ জমির মালিক স্বাক্ষর করেছি। জোরপূর্বক কিছু ব্যক্তি ঘেরটি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করাতে অরাজকতা সৃষ্টি হয়েছে। এটা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায়না।এ ব্যপারে কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জসিম উদ্দীন বলেন, সেলিমুজ্জামান আসাদ বুধবার সকালে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পায়নি। বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।