1. jitsolution24@gmail.com : admin :
  2. shantokh@gmail.com : Sharif Azibur Rahman : Sharif Azibur Rahman

প্রাচীন সভ্যতার স্বাক্ষী সেন্ট্রাল রেলওয়ে চট্টগ্রাম

  • প্রকাশের সময় মঙ্গলবার, ১৬ জুন, ২০২০
  • ২৫৬ বার সংবাদটি পাঠিত

শুভ আকবর-চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ চট্টগ্রাম শহরের অতি প্রাচীনতম স্থাপনার নাম সেন্ট্রাল রেলওয়ে বিল্ডিং (সি.আর.বি)। চট্টগ্রাম শহরের গৌরবময় ইতিহাস ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে সি.আর.বি ভবন দাঁড়িয়ে আছে আমাদের সামনে। কালজয়ী ইতিহাসের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী এ ভবন। দেশের কম মানুষ এ ভবন সম্পর্কে জানে।
প্রত্যেক জাতির এমন কিছু সম্পদ থাকে যা নিয়ে সে জাতি গর্ব করে বলতে পারে তার গৌরবময় অতীতের কথা। বলতে পারে আমাদের বর্তমানই শুধু সমৃদ্ধ নয় অতীত ও গৌরবের। সি.আর.বি (সেন্ট্রাল রেলওয়ে বিল্ডিং) এমনি একটি প্রতিষ্ঠান শতাব্দীর সাক্ষী হয়ে স্বীয় অস্তিত্বের উপর দাঁড়িয়ে আছে ১৮৯৯ সাল থেকে। পাহাড় আর অরণ্যরাজি ঘেরা শতায়ু পেরুনো বিরাট বিরাট মহিরূহ সদৃশ শাল, সেগুন, গর্জন, রেইনট্রির ছায়া ঢাকা সাত রাস্তার সংযোগস্থল অনেকগুলো পাহাড়ের একটাতে প্রায় ১০ একর জমির উপর সি.আর.বির বিস্তৃত অবস্থান।
চট্টগ্রামের ভৌগোলিক অবস্থান ও চট্টগ্রাম বন্দরের পরিবহন সুবিধাকে রেলওয়ের সাথে সমন্বিত করার প্রয়াসেই ১৮৯৯ইং সালে সি.আর.বি প্রতিষ্ঠা করা হয়। বৃটিশরা এদেশ দখলে নেওয়ার পর চট্টগ্রামের ভৌগোলিক অবস্থানের গুরুত্ব বিবেচনা করে বৃটিশ সরকারের প্রতিরক্ষা ও পরিবহন মন্ত্রণালয় যা ১৮৮৬ সাল পর্যন্ত একীভূত ছিল, কদমতলী থেকে টাইগারপাস হয়ে পাহাড়তলীর বিস্তীর্ণ এলাকাসহ কমিশনারের বাংলোটিলা, সার্কিট হাউস, জমিয়াতুল ফালাহ, স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম ক্লাব, নেভাল এভিন্যু, লালখান বাজার ও অন্যান্য স্থান সহ ২০৯ একর ভূমি নিয়ে পুরাতন ক্যান্টনমেন্ট এর আওতাভুক্ত করে সামরিক এলাকায় পরিণত করে ১৮৭০ সালের দিকে। রেলওয়ের প্রতিষ্ঠার পর ১৪/১১/১৮৯৩ তার গেজেট মূলে ঐ ভূমি থেকে ১৬০ একর জমি রেলওয়ের নিকট হস্তান্তর করা হয়। এই হস্তান্তরকৃত ভূমিতে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যকে প্রাধান্য দিয়ে এখানে প্রতিষ্ঠা করা হয় সি.আর.বি ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য স্থাপনা, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বাংলো, ক্লাব ইত্যাদি।
একদা সি.আর.বি ছিল এতদ্বাঞ্চলের সর্ববৃহৎ কর্মচঞ্চল ভবন, সরকরের লাট বাহাদুর, আমলা, পাইক পেয়াদা, কেরানী, চাপরাশি, মালী, কুলির পদচারণায় কর্মমুখর। আশা ভরসার স্থল ও সুখ দুঃখের কেন্দ্রবিন্দু। কালের বিবর্তনের লাখো মানুষের হাসি কান্নাকে বুকে ধারণ করে সি.আর.বি আজও দাঁড়িয়ে আছে অতীতের সাক্ষী হয়ে। কালের চাকার ঘূর্ণাবর্তে সি.আর.বি আজ শ্রীহীন পুরাতন ভবন মাত্র যা বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের আঞ্চলিক দপ্তর। সি.আর.বির কর্মযজ্ঞের উপর প্রথম আঘাত আসে ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর, অতপর ১৯৬০ সালে চট্টগ্রাম বন্দর প্রশাসন পৃথক হওয়ার পর, সর্বশেষ ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ রেলওয়েকে দুটি জোনে বিভক্ত করে ঢাকার সদর দপ্তর স্থাপন করার পর। এত কিছুর পরও সি.আর.বি আছে থাকবে আগামী প্রজন্মের জন্য গৌরব গাথা হয়ে।
সি.আর.বির সন্নিহিত এলাকায় আঁকা-বাঁকা, সর্পিল রাস্তা উঁচু নিচু পাহাড় টিলা, বন-বনানী ছায়া সুনিবিড় এই বিরাট এলাকা অঘোষিত পর্যটন স্পট হিসেবে যুগ যুগ ধরে মানুষকে দিয়ে আসছে বিনোদনের আস্বাদন। এছাড়াও পূ্র্বদিকে সিআরবি সড়ক জুড়ে রয়েছে রেলওয়ে হাসপাতাল যা ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়।তাছাড়া এখানে একটি ৫০ শয্যা বিশিষ্ট মেডিকেল কলেজ স্থাপনের প্রস্তাবনা ছিল এবং বর্তমানে যা ২৫০ শয্যায় উন্নীত হয়েছে।সিআরবির পার্শ্ববর্তী স্থানে রেল কর্মকর্তাদের জন্য একটি আবাসিক এলাকাও গড়ে উঠেছে। সিআরবি পাহাড়ে রয়েছে হাতির বাংলো।এছাড়াও কেন্দ্রের দিকে রয়েছে শিরীষতলা নামে একটি প্রশস্ত মাঠ,যেখানে প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ,পহেলা ফাল্গুন ইত্যাদি ঐতিহ্যগত উৎসব আয়োজিত হয়ে থাকে যাতে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের জামায়েত ঘটে, বলা যেতে পারে বর্তমান সময়ে চট্টগ্রামে সাহিত্য সাংস্কৃতিক প্রাণকেন্দ্র এই সি.আর.বি।

সংবাদটি সেয়ার করে পাশে থাকুন

একই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved  2024
Design by JIT SOLUTION