আজিজুর রহমান, কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি:
কেশবপুরে বিরল প্রজাতির কালোমুখো হনুমান বিভিন্ন এলাকায় আনন্দ উল্লাসে ছোটাছুটি করে চলছে বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে।বিরল প্রজাতির কালোমুখো হনুমান কেশবপুরের একটি ঐতিহ্য।
কেশবপুরে ৩/৪ শত কালোমুখো হনুমান কেশবপুর উপজেলা পরিষদের সামনে, বনবিভাগের মধ্যে, হাসপাতাল, পশুসম্পদ কার্যালয়ের পিছনে, কেশবপুর খাদ্যগুদাম এলাকা, রামচন্দ্রপুর, ব্রহ্মকাটি, বালিয়াডাঙ্গা, মধ্যকুল, সাহাপাড়া, মুজগুন্নি, ভোগতি গ্রাম-সহ বিভিন্ন এলাকায় ৯/১০ টি গ্রুপে ভাগ হয়ে চলাফেরা করে থাকে। প্রতিটি গ্রুপে রয়েছে একটি পুরুষ হনুমান। পুরুষ হনুমান অত্যন্ত বদমেজাজি। দলের মধ্যে যদি কোন মা হনুমান পুরুষ বাচ্চা প্রসব করে তাহলে আর রেহাই নেই। যে ভাবেই হোক সে বাচ্চাকে মেরে ফেলবে ওই পুরুষ হনুমানটি। দলনেতা পুরুষ হনুমানটির বধ্যমূল ধারনা পুরুষ শাবকটি বড় হয়ে তার কর্তৃত্ব নিয়ে নিতে পারে, আর সে আশঙ্কায় এ ধরনের আচরণে করে থাকে দলনেতা। কালোমুখো হনুমান ৫ বছর বয়স থেকে ৬ মাস অন্ত বাচ্চা প্রসব করে থাকে। এদের গড় আয়ু ২০ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। এক একটির ওজন ৫ থেকে ৩০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। হাত ও পায়ের পাতা মুখের মতোই কালো। শরীরে ধূসর বর্ণের রোম (লোম) দিয়ে আচ্ছাদিত। তবে পেটের দিকটা কিছুটা সাদা ও লালাভ। চলাফেরা করার সময় এরা লেজ উচু করে চলে। মানুষের সাথে তাদের রয়েছে সখ্যতা। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হনুমান দেখতে দর্শনার্থীরা এসে থাকেন কেশবপুরে। তারা নিজ হাতে এদের মাঝে খাদ্য বিতরণ করে থাকেন। মানুষের হাত থেকে খাদ্য চেয়ে নেওয়া, সুযোগ পেলে দোকান থেকে হাত বাড়িয়ে বিস্কুট, কলা, রুটি নিয়ে চলে যায়। তারপরও ব্যবসায়ীরা এদের উপর বিরক্ত হন না। সরকারী ভাবে যে খাদ্য দেওয়া হয় তা তাদের চাহিদার তুলনায় অপ্রত্যুল। যার কারণে কালোমুখো হনুমান খাদ্যের সন্ধানে দিগ-বিদিক ছুটাছুটি করে। যার ফলে বিদ্যুত স্পৃষ্ঠে প্রতিনিয়ত হনুমান মারা যায়। ২০১৯ সালের ১৭ অক্টোবর খাদ্য সংগ্রহ করতে যেয়ে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে ২টি কালোমুখো হনুমারের মৃত্যু হয়। এভাবে চলতে থাকলে কেশবপুরের ঐতিহ্য বিরল প্রজাতির কালোমুখো হনুমান একদিন বিলুপ্ত হয়ে যাবে।