1. jitsolution24@gmail.com : admin :
  2. shantokh@gmail.com : Sharif Azibur Rahman : Sharif Azibur Rahman

আগামী নির্বাচনে এখন পর্যন্ত আধিকাং নাগরিক কোন দলকে ভোট দিবেন তা অজানা!

  • প্রকাশের সময় মঙ্গলবার, ৮ জুলাই, ২০২৫
  • ১৬ বার সংবাদটি পাঠিত
  • প্রতিদিনের কন্ঠের একান্ত সাক্ষাৎকারে নির্বাচন নিয়ে জরীপে যা উঠে এসেছে”
  • ড. মির্জা হাসান ও সৈয়দা সেলিনা আজিজ ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টে (বিআইজিডি) কর্মরত।
  • ড. আসিফ মোহাম্মদ শাহান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের ভিজিটিং রিসার্চ ফেলো।

আক্তারুজ্জামান সুমন

আগামী নির্বাচনে নাগরিকেরা কোন দলকে ভোট দেবেন, দুটি জরীপ বিশ্লেষণে বিএনপি-১৬.১৭ জামায়াত-১২.৮৬ শতাংশ ভোটার সরাসরি তাদের পক্ষে। বাকি মত প্রকাশে অনিচ্ছুক ২১.৩ এবং সিদ্ধান্ত নেয়নি ২৯.৪ শতাংশ নাগরিক। এক এগারো কেয়ারটেকার সরকারের সময় ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে নির্বাচনের নামে যে প্রহসন চলেছে। সেটি ভোটারদের উরপ বিরুপ মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব ফেলেছে। এই নির্বাচনে অধিকাংশ ভোটার এখনো নির্বাচন সম্পর্কে তাদের মনোভাব প্রকাশে অনিহা দেখাচ্ছেন। ভোটারদের নির্বাচনী আচরণ গত ১৭ বছরে কীভাবে পরিবর্তিত হয়েছে এবং এই মুহূর্তে তা কোথায় দাঁড়িয়ে আছে, তা নিয়ে আমরা তেমন কিছুই জানি না বা ধারণাও করতে পারছি না।গণঅভ্যুত্থান পরিবর্তি রাজনৈতিক দলের ভাঙন নির্বাচনের পরিস্থিতি কঠিন পর্যায়ে নিয়ে গেছে, যেখানে রাজনীতির পট প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে এবং তেমন কোনো রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এখনো দৃশ্যমান হচ্ছে না। ভোটারদের পছন্দের পরিবর্তন বুঝতে বেশ কিছু জরিপ ইতিমধ্যেই পরিচালিত হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ জরিপটি পরিচালনা করেছে ইনোভিশন নামের একটি গবেষণা ও পরামর্শ সংস্থা।এই জরিপ থেকে প্রাপ্ত ফলাফল বিশ্লেষণ করলে তিনটি বিষয় উঠে আসে। #প্রথমত, ভোটের মাঠে কেবল বিএনপি ও আওয়ামী লীগকেন্দ্রিক যে দ্বিদলীয় পুরোনো আধিপত্য ছিল, তা এখন ভেঙে যাচ্ছে।#দ্বিতীয়ত, জামায়াতে ইসলামী ও অন্য ছোট ধর্মভিত্তিক দল এবং নতুন যুব নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দলের উত্থান এই ভাঙনের কারণ হতে পারে। তবে ভোটারদের পছন্দ এখনো পরিবর্তনশীল এবং এটি বেশ কিছু মাস পরেই স্পষ্ট হবে। এই পরিবর্তনশীলতা ভোটদান বা পছন্দের দল নির্ধারণে ভোটারদের সিদ্ধান্তহীনতা এবং নিজেদের পছন্দ প্রকাশের অনীহার মধ্য দিয়ে প্রকাশ পাচ্ছে।
#তৃতীয়ত, পরিবার, বন্ধু ও সামাজিক বলয় মানুষের ভোটের সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করছে। এই ধরনের যৌথ ও কিছুটা বংশানুক্রমিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া পুরোনো দলগুলো, যেমন বিএনপি ও জামায়াতের জন্য সুবিধাজনক হলেও নতুন যুব নেতৃত্বাধীন দলের জন্য এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করা একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ হতে পারে।
৮ মার্চ ২০২৫–এ তাদের জরিপের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে, যা দেশের ৮টি বিভাগ এবং ৬৪টি জেলাতে পরিচালিত হয়েছিল। জরিপে মোট ১০ হাজার ৬৯৬ জন অংশগ্রহণ করেছেন।
এই জরিপের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হচ্ছে, “কাকে ভোট দিতে চান” যা ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং মূলধারার সংবাদমাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচনা হচ্ছে।
জরীপে অর্ধেকের বেশি ভোটারের পছন্দের ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না। আমরা যদি সিদ্ধান্ত না নেওয়া, প্রকাশ না করা এবং উত্তর দিতে অস্বীকার করা ভোটারদের যোগ করি, তা সব মিলিয়ে ৫৯ শতাংশে দাঁড়ায়।
তার মানে, এই জরিপের তথ্য অনুযায়ী, আমরা মাত্র ৪১ শতাংশ ভোটারদের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে কিছুটা ধারণা করতে পারি। বাকি যে বিশাল গ্রুপ, তাদের ব্যাপারে আমরা এখনো অন্ধকারে।
জরিপের প্রথম প্রশ্ন ছিল, ‘কাকে ভোট দেবেন, সেই সিদ্ধান্ত কি নিয়েছেন?’ এই প্রশ্নটি ১০ হাজার ৬৯৬ জন উত্তরদাতার মধ্যে সবাইকে করা হয়েছিল, যার মধ্যে ৬ হাজার ৬৩২ জন ইতিবাচক উত্তর দিয়েছিলেন।
এর পরের প্রশ্নটি শুধু এই ৬ হাজার ৬৩২ জনকে করা হয়েছিল, যেখানে তাঁদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল যে তাঁরা তাঁদের সিদ্ধান্ত প্রকাশ করবেন কি না। এর উত্তরে ৪ হাজার ৩৫৬ জন ইতিবাচক উত্তর দিয়েছেন এবং বাকিরা তা প্রকাশ করতে চাননি।
তৃতীয় প্রশ্নটি, অর্থাৎ ভোট কাকে দেবেন—শুধু এই ৪ হাজার ৩৫৬ জনকে করা হয়েছিল, যাঁরা তাঁদের ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং তা প্রকাশ করতে রাজি হয়েছেন।
ইনোভিশন জরিপ যেহেতু উত্তরদাতাদের অধিকাংশের পছন্দ জানতে পারেনি, তাই এই মুহূর্তে নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে কিছু বলাটা কঠিন। এই ভোটারদের, বিশেষ করে তারা কে, কোথা থেকে এসেছেন এবং ভোটের সিদ্ধান্ত নির্ধারণে তাঁরা কী কী বিষয় বিবেচনা করছেন, তা খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ করা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তাঁদের ভোটই ঠিক করবে যে বিএনপি নিরঙ্কুশ (অথবা সাধারণ) সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে, নাকি জামায়াত শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে আবির্ভূত হবে; অথবা ছাত্রদের নেতৃত্বাধীন নতুন রাজনৈতিক দলটি পুরোনো দলগুলোর আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করে একটি কার্যকর রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে উঠে আসবে।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, যদি সিদ্ধান্ত নেননি (২৯%) এমন ভোটারদের অবস্থান, বয়স বা লিঙ্গের ভিত্তিতে ভাগ করা হয়, তাহলে দেখা যায় শহুরে, জেনারেশন জি (জেন–জি, ১৮-২৮ বয়সী) এবং নারী ভোটারদের মধ্যে সিদ্ধান্তহীনতার হার বেশি এবং এই অংশটি ভোটের ফলাফলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
এই ২৯ শতাংশ, যাঁরা এখনো সিদ্ধান্ত নেননি, তাঁদের ‘সুইং ভোটার’ (একজন ভোটার যিনি যেকোনো দিকে ভোট দিতে পারেন) হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কারণ, তাঁদের কোনো নির্দিষ্ট দলের প্রতি আনুগত্য নেই। তাঁদের যখন জিজ্ঞেস করা হয়েছে কেন তাঁরা এখনো সিদ্ধান্ত নেননি, উত্তরে (একাধিক উত্তর প্রযোজ্য ছিল, যা আমরা সুবিধার জন্য একক উত্তরে বিশ্লেষণ করছি) প্রায় ৪০ শতাংশ অনির্ধারিত ভোটার জানিয়েছেন যে তাঁরা ভোট দেওয়ার আগে প্রার্থীদের সম্পর্কে জানতে চান।
আরও ২৭ শতাংশ তাঁদের সিদ্ধান্ত নির্বাচনের পূর্ববর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে নেবেন বলে জানিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বেশ কিছু ভোটার আওয়ামী লীগের সমর্থক, বিশেষ করে যে ৫ শতাংশ বলেছেন ভোটের সিদ্ধান্ত নেননি। কারণ, তাঁদের পছন্দের দল পরবর্তী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি না, তা অনিশ্চিত।
এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয় যে গত কয়েক মাসে ভোটারদের পছন্দের তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে বিআইজিডি পালস জরিপে দেখা গিয়েছিল, প্রায় ৩৮ শতাংশ ভোটার এখনো সিদ্ধান্তহীন এবং ১৩ শতাংশ মন্তব্য করতে রাজি হননি। বাকি ভোটারদের মধ্যে ১৬ শতাংশ বিএনপি, ১১ শতাংশ জামায়াত, ৯ শতাংশ আওয়ামী লীগ, ৩ শতাংশ কোনো ইসলামি দল এবং ২ শতাংশ নতুন রাজনৈতিক দলকে সমর্থন জানিয়েছিলেন। প্রায় ২ শতাংশ বলেছেন যে তাঁরা ভোট দেবেন না, বাকি ৬ শতাংশ অন্যান্য দলকে সমর্থন করেছেন।

সংবাদটি সেয়ার করে পাশে থাকুন

একই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved  2024
Design by JIT SOLUTION