আজিজুর রহমান, কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি:
কেশবপুরে অপরাধ জগতের ডন,অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ খ্যাত ও চরমপন্থি অধ্যাষিত এলাকাখ্যাত পূর্বাঞ্চলের ত্রাস মৃনাল কান্তি বৈরাগী ওরফে রানা প্রতাপ বাহিনীর বিরুদ্ধে যশোর পুলিশ সুপার বরাবর একটি অভিযোগ হয়েছে। গত ০৬ জুন-(২০২০) শনিবার মৎস্য ঘের ব্যবসায়ী আড়–য়া গ্রামের মৃত সুবান মোল্যার ছেলে আব্দুল খালেক বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেন।
আব্দুল খালেক তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, তিনি একজন মৎস্য ঘের ব্যবসায়ী এবং তার কেশবপুর কাটাখালি মাছ বাজারে ৪টি মাছের আড়ৎ ঘর আছে। ১নং আসামী আড়–য়া গ্রামের তুষার কান্তি বৈরাগীর ছেলে মৃনাল বৈরাগী ওরফে রানা প্রতাপ একজন কুখ্যাত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, তার একটি বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী আছে। এলাকার মানুষের কাছে এই বাহিনী “রানা বাহিনী” নামে পরিচিত। বাহিনী প্রধান রানা প্রতাপের অন্যতম ৩ জন সহযোগীর নাম অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলো নগেন বৈধ্যের ছেলে ইন্দ্রজিদ, গৌর মন্ডলের ছেলে দিপঙ্কর ও করিম সরদারের ছেলে শফিকুল। অভিযুক্ত রানা প্রতাপের কাটাখালি বাজারে একটি মাছের আড়ৎ আছে। তার যোগসাজসে অধিকাংশ সময় বিভিন্ন এলাকার ঘেরর চুরি হওয়া মাছ এই আড়তে বিক্রয় করা হয়। শুধু তাই নয় বাদীর নিজের আড়ৎ থেকেও নিয়মিতভাবে তার কর্মচারী দিয়ে মাছ চুরি করে সে তার আড়তের মাধ্যমে বিক্রি করে থাকে।এমনকি মাছ চুরি করতে গিয়ে দুবার তার কর্মচারীরা হাতে নাতে ধরা পড়ে এবং জোরপূর্বক মৎস্য আড়তদারদের জিম্মি করে স্থানীয়ভাবে সেটি সে মিমাংসা করায়। এছাড়া রানা প্রতাপ তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে বাদীর বাড়ীতে ঢুকে তার স্ত্রী এবং বড় ছেলের স্ত্রীর মাথায় রিবলবার ঠেকিয়ে ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। অভিযোগে তিনি আরো উল্লেখ করেন, এই রানা প্রতাপ বাহিনী আড়–য়া গ্রামের রেজাউলের স্ত্রী আমেনা বেগমকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জোরপূর্বক ধর্ষন করে। মেম্বর আনিছুর রহমানের কাছে ৩ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করলে উক্ত মেম্বর চাঁদার টাকা দিতে অস্বিকার করায় এই বাহিনীর লোকজন প্রকাশ্যে কাটাখালি বাজারে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঐ মেম্বরকে ধাওয়া করে। রানা প্রতাপ কাটাখালি বাজারে সরকারী জায়গায় দোকান ঘর তৈরি করে সেখানে অধৈভাবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। চাঁদার টাকা না পেয়ে এলাকার মৃত মতিউল্যার ছেলে ওবাইদুল্লাহ গাজীর বসতবাড়ী ভাংচুর করে। এঘটনায় ওবাইদুল্লাহ বাদী হয়ে রানা প্রতাপসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মামলা করে। যার নং-সি.আর ৩৬৬/১৮। অভয়নগর থানায় তাসলিমা খাতুল ধর্ষন মামলার ৩ নং আসামী রানা প্রতাপ। মামলা নং-১১।তারিখ,১৬-০২-২০। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় ২৮-০৩-১৯ তারিখে নৌকার কর্মীদের উপর হামলা-মারপিটের ঘটনায় আওয়ামীলীগের নেতা নুরে আলম পলাশ বাদী হয়ে রানা প্রতাপকে ১নং আসামী করে কেশবপুর থানায় একটি অভিযোগ করেন। ২০১৬ সালে নাশকতা মামলায় গ্রেফতার হয় রানা প্রতাপ। যার মামলা নং-১৮। তারিখ,১৫-০৩-১৬। এছাড়া এলাকায় খাঁস জমি দখল,চাঁদাবাজি,ছিনতাই, ভাংচুর লুটপাট, ঘেরের মাছ লুট, অপহরন, চোরা চালান, বসতবাড়ীতে হামলা-মারপিট, নৌকার অফিস ভাংচুরসহ বাহিনী প্রধান রানা প্রতাপের বিরুদ্ধে সুফলাকাটি ইউনিয়ন পরিষদের ০৬ জন মেম্বর ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সাক্ষরিত যশোর র্যাব-০৬ পরিচালক বরাবর একটি অভিযোগ করেন। এছাড়া মার্ডার, ছিনতাই,চাঁদাবাজি,ধর্ষনসহ বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তার অপরাধ জগতের নানা গোপন তথ্য পর্যায়ক্রমে প্রকাশ করা হবে। এই বাহিনীর ভয়ে এলাকার নিরীহ মানুষ ঠিকমত ব্যবসা-বানিজ্য করতে পারছেনা এবং ভয়ে তাদের জান-মাল নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। নির্ভয়ে বসবাস ও ব্যবসা-বানিজ্যের স্বার্থে রানা বাহিনীর গ্রেফতারের জোর দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এব্যাপারে রানা প্রতাপের সাথে সরাসরি কথা হলে তিনি এই প্রতিনিধিকে জানান, যেহেতু আমার কোন বাহিনী নেই সেহেতু সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কোন প্রশ্নই ওঠে না। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে মাঝে মধ্যে আইন নিজের হাতে তুলে নিতে হয়। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলার কথা শিকার করে বলেন, এলাকায় তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে,প্রতিপক্ষরা ঈর্ষন্নিত হয়ে তার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ করছে।