আশাশুনি (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
আশাশুনিতে বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস উপলক্ষে স্থায়ীত্বশীল তামাক নিয়ন্ত্রণে বেসরকারী সংস্থাসমূহকে সম্পৃক্তকরণ জরুরী’- বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।মৌমাছি’র উদ্যোগে বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।শনিবার (১৭ মে) আশাশুনি উপজেলা পরিষদ হলরুমে সকাল ১০টায় সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান মৌমাছি, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এ্রর যৌথ উদ্যোগে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।সুন্দরবন প্রকল্প জেলা সমন্বয়কারী মোঃ গোলাম কিবরিয়ার সভাপতিত্ব সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আশাশুনি প্রেসক্লাবের সভাপতি জি এম আল ফারুক। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক সমীর রায়, রূপান্তর এর ডিস্ট্রিক্ট কো-অর্ডিনেটর মাসুদ রানা প্রমুখ।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুব ফোরামের সদস্য ধারাভাষ্যকার আশরাফুল ইসলাম, পিনাকী রায় প্রমুখ।
তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের কারণে বছরে ১ লক্ষ ৬১ হাজার লোক মৃত্যুবরণ এবং প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ পঙ্গুত্ববরণ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ক্যান্সার সোসাইটির গবেষণানুযায়ী, তামাক ব্যবহারজনিত কারণে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার কারণে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৩০ হাজার কোটি টাকার অধিক। তামাকের কারণে শুধু স্বাস্থ্য নয়, অর্থনীতি এবং পরিবেশও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনতে প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ।
কিন্তু দক্ষ এই সংগঠনগুলোর অধিকাংশেরই নিজস্ব তহবিল নেই, যার দরুন তারা পর্যাপ্ত কাজ করতে পারছেনা। বর্তমান প্রেক্ষাপটে তামাক নিয়ন্ত্রণে প্রত্যাশিত ফলাফল অর্জন করতে হলে স্থানীয় পর্যায়ে কার্যরত এ সংগঠনগুলোকে আর্থিক বরাদ্দ প্রদানের মাধ্যমে আইন বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত করে পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরী।
স্থানীয় পর্যায়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন কর্মসূচীকে গতিশীল করতে সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় “স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন নির্দেশিকা” প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। উক্ত নির্দেশিকার ৭.২ (৭.২.৭) ধারায় স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ কর্তৃক ‘‘তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের জন্য স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের বাৎসরিক বাজেটে অর্থ বরাদ্দ রাখা এবং বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন এবং এ সংক্রান্ত অগ্রগতির ত্রৈমাসিক/বাৎসরিক প্রতিবেদন স্থানীয় সরকার বিভাগের তামাক নিয়ন্ত্রণ ফোকাল পয়েন্ট ও মনিটরিং টিমের নিকট দাখিল করা” এর বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করতে এনআইএলজি কর্তৃক প্রণিত স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়নে অপারেশনাল গাইডলাইন, ২০২৪’ এর অনুচ্ছেদ ৯ এ বরাদ্দ প্রদান এবং অনুচ্ছেদ ১৬ এ স্থানীয় তামাক নিয়ন্ত্রণে কার্যরত সংগঠনের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। সম্প্রতি খুলনা, গাজীপুর, জামালপুর এবং সাতক্ষীরা জেলার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালকগণ জেলাসমূহের অন্তর্গত সকল স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহকে তামাক নিয়ন্ত্রণে অর্থ বরাদ্দ রাখার বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করেছে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে তামাক নিয়ন্ত্রণে প্রত্যাশিত ফলাফল অর্জন করতে হলে, উক্ত নির্দেশিকা অনুযায়ী সকল জেলা পরিষদ/উপজেলা পরিষদ/পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদের নির্ধারিত বাজেট থেকে তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য অনুদান প্রদান করে দক্ষ এই সংগঠনগুলোকে মনিটরিংয়ে যুক্ত করলে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের তামাক নিয়ন্ত্রণ নির্দেশিকাটি বাস্তবায়ন আরো গতিশীল ও সহজ হবে। স্থানীয় সংগঠনগুলোর দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে সার্বিক তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচীকে আরো শক্তিশালী করে তোলা সম্ভব বলে জানিয়েছেন বক্তারা।
সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন মৌমাছি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক সুশান্ত মল্লিক।