জহুরুল ইসলাম
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী যশোর জেলার শহর শাখার উদ্যোগে আওয়াামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় অন্তর্বর্তি সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে ‘শোকরানা সমাবেশ ও আনন্দ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১১ মে রবিবার বিকাল ৫টায় যশোর দড়াটানা ভৈরব চত্বরে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক গোলাম রসুল।এছাড়া জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ আবু জাফর সিদ্দিকী, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক গোলাম কুদ্দুস, মাওলানা রেজাউল করিম, অধ্যাপক মনিরুজ্জামান, প্রচার সেক্রেটারি শাহাবুদ্দিন বিশ্বাস, খন্দকার রশিদুজ্জামান রতন, অধ্যাপক আশরাফ আলী, মাওলানা ইসমাইল হোসেন, জামায়াত ও ইসলামী ছাত্রশিবির নেতৃবৃন্দ বক্তব্য প্রদান করেন। সভাপতিত্ব করেন শহর শাখা সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান। সঞ্চালনা করেন শহর সেক্রেটারি ইমরান হোসাইন।প্রধান অতিথি জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল বলেন, দেশের ইতিহাসে আওয়ামী লীগ যে দমন-পীড়ন চালিয়েছে, তার প্রতিবাদে এবং ইসলামী আন্দোলনের শহীদদের রক্তের ঋণ শোধের এই দিনটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। আওয়ামী লীগ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, ইসলামপন্থী রাজনীতি এবং আলেম সমাজের ওপর বারবার আঘাত হেনেছে। পতিত স্বৈরাচার সরকারের শাসনামলে জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন ইসলামী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের অন্যায়ভাবে হামলা, মামলা, খুন-গুম ফাঁসি, গ্রেপ্তার এবং হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছে। নন্দিত আলেমে দ্বীন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক বিচার ও ফাঁসির ঘটনা এদেশের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়।তিনি আরোও বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করেই থেমে থাকেনি। পতনের আগ মুহূর্তে জামায়াত এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করেছিল। আমাদের নেতাকর্মীদের রক্তাক্ত করেছে, আলেম-ওলামাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে। আজ আল্লাহর হুকুমে সেই আওয়ামী লীগ নিজেই বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত হয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত নিষিদ্ধ হয়েছে। অতিতের ইতিহাস উল্লেখ করে জেলা আমীর আরও বলেন, যেভাবে যুগে যুগে অত্যাচারী শাসকগোষ্ঠীকে আল্লাহ ধ্বংস করেছেন, ঠিক সেভাবেই আজ এই দেশে জুলুমবাজ সরকারের পতনের পথ সুগম করেছেন। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, হজরত মুসা (আ.) এর যুগে ফেরাউনের দম্ভ বেশি দিন টেকেনি। হজরত ইব্রাহিম (আ.) এর যুগে নমরুদের অমানবিক শাসন বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর যুগেও আবু জাহেল-আবু লাহাবদের পরিণতি হয়েছিল করুণ। আল্লাহ তাআলা তার দ্বীনের বিরোধীদের কখনো টিকিয়ে রাখেননি। তার সুন্নত অব্যাহত আছে এবং থাকবে। আমি এই সমাবেশ থেকে দ্বীনের পথের সকল কর্মীকে বলতে চাই ধৈর্য ধরো, সাহস রেখো। আমরা যে পথের মুসাফির, সে পথ মুসা (আ.)-এর, সে পথ মুহাম্মদ (সা.)-এর। অত্যাচারীর পতন হবেই। ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা হবেই ইনশাআল্লাহ। আসুন, সবাই এই আন্দোলনে শরিক হই। এদেশের শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না। আল্লাহর জমিনে আল্লাহর হুকুম প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা কাজ করে যাব, যতদিন না ইসলাম বিজয়ী হয়। সমাবেশে হাজারো নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। পরে সেখান থেকে আনন্দ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।