1. jitsolution24@gmail.com : admin :
  2. shantokh@gmail.com : Sharif Azibur Rahman : Sharif Azibur Rahman

দুর্নীতি পিছু ছাড়ছে না যশোর প্রধান ডাকঘরে

  • প্রকাশের সময় বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ৫১ বার সংবাদটি পাঠিত
দুর্নীতি পিছু ছাড়ছে না যশোর প্রধান ডাকঘরে

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক পোস্ট মাষ্টার বাকী কান্ডের পর আবারো যশোর প্রধান পোস্ট অফিসে শুরু হয়েছে অনিয়মের আরেক কান্ড। টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক পোস্ট মাষ্টারের বিদায়ের পরপরই অনিয়মের ভয়াবহ রূপ নিয়ে ফিরেছেন সহকারি পোস্ট মাষ্টার জেনারেল (শিক্ষানবিশ) নাসরুল্লাহ ইবনে হাকিম। কোনভাবেই যেন অনিয়মের বেড়াজাল থেকে বেরোতে পারছে না যশোরের ব্যস্ততম রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান যশোর প্রধান ডাক ঘর (পোষ্ট অফিস)। যেন শনির দশায় আটকে আছে। ভুয়া বিল-ভাইচার, পুরাতন কাগজপত্র বিক্রি, নারী কেলেঙ্কারী, সরকারি গাড়ির অপব্যবহার, ক্রয় কমিটি বাতিলসহ নানান অনিয়ম নিত্যদিনের রুটিনে পরিণত হয়েছে যশোর হেড পোস্ট অফিসে। আর এসব কাজের মহা নায়ক হিসেবে মূল ভূমিকায় আর্ভিভূত হয়েছেন সহকারী পোস্টমাস্টার জেনারেল (শিক্ষানবিশ) নাসরুল্লাহ ইবনে হাকিম। তিনি যোগদানের পরই সুকৌশলে নিয়মিত দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন বলে নানাভাবে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে,গত ২০২৪ সালের ৭ নভেম্বর তারিখে যশোর প্রধান ডাকঘরের প্রাক্তন ডেপুটি পোস্টমাস্টার মুকুল চন্দ্র বিশ্বাস পুরাতন স্টোর রুমে গচ্ছিত অনেক পুরাতন রেকর্ড ও কাগজপত্র নিলামের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। যার স্মারক নং-বাজেট/এমসিবিল/বিক্রয়- ২০২৪-২০২৫। এতে তিনটি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশ গ্রহন করে। এর মধ্যে পোস্ট অফিসপাড়ার মেসার্স সাবিক এন্টারপ্রাইজ,আরএন রোড এলাকার মাসুদ এন্টারপ্রাইজ ও বেজপাড়ার জিসান এন্টারপ্রাইজ অংশ গ্রহন করে। এরমধ্যে দাখিলকৃত দরদাতাদের মধ্যে সাকিব এন্টারপ্রাইজ প্রতিকেজি কাগজের মূল্য সর্বোচ্চ ১২ টাকা হওয়ায় ওই প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রির সিদ্বান্ত হয়। ওই নিমালে মোট কাগজপত্র বিক্রি হয় ৩ হাজার ৭শ ৯১ কেজি।ওই হিসাবে ৪৫ হাজার ৪৯২ টাকা বিক্রি হয়। অথচ ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে সরকারি কোষাগারে জমা পড়েছে ১২ হাজার ৭শথ ৮১ টাকা। জমাকৃত রশিদের নম্বর ছিল ১৫৭০২৭। ওই টাকা থেকে সহকারী পোস্টমাস্টার জেনারেল নাসরুল্লাহ ইবনে হাকিম বাকি ৩২ হাজার ৭শথ ৮১ টাকা পকেটেস্থ করেছেন। অধিনস্তদের অনেকেই মানা করলেও তিনি কোন সদস্যের কথায় কর্ণপাত করেননি। অন্যরা বার বার বলেছেন ৪৫ হাজার ৪৯২ টাকাই কোষাগারে জমা দিতে কিন্তু তিনি তা করেননি। এদিকে কাগজপত্র বিক্রির টাকা আত্মস্বাৎ করতে চাইলে কমিটির সদস্যরা রাজি না হওয়ায় পোস্টমাস্টার রেগে গিয়ে কমিটির সকল কাগজপত্র কেড়ে নেন এবং বিধিবর্হিভূতভাবে ভ্যাটসহ ১৫ হাজার টাকা ইউসিআর-এর মাধ্যমে জমা করেন। ওই টাকার বাকি অংশ তিনি নিজে আত্মস্বাৎ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই নিলাম কমিটিতে সদস্য পদে ছিলেন,জুনিয়র হিসাব রক্ষক দিলীপ মন্ডল,সহকারী পোস্টমাস্টার রবিউল হক, পরিদর্শক (শহর) পবিত্র কুমার বিশ্বাস, অভিযোগ শাখার পোস্টাল অপারেটর আবু সুফিয়ান,হিসাব শাখার অপারেটর আব্দুর রহমান মৃধা, অপারেটর জহির আলম, বাজেট শাখার অপারেটর রিয়াজ উদ্দিন ও শরিফুল ইসলাম। সম্প্রতি শামীম নামে এক দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারীকে বাদ দিয়ে ওই স্থলে তার অবৈধ সর্ম্পক গড়ে তোলা ওই নারী সোনিয়া সুলতানাকে নিয়্গো দিয়েছেন। তাছাড়া শামীমের যাওয়ার আগ পর্যন্ত তার নিকট থেকে মাসিক মজুরির ৪ হাজার টাকা হারে পোস্টমাস্টার উৎকোচ নিতেন প্রতিমাসে। পরে ওই মেয়েকে চাকরিতে বসানোর জন্য তাকে বাদ দেয়া হয়। শুধু ওই না নিয়মনীতি না মেনে পোস্টমাস্টর সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন। বর্তমানে টাউন সাব পোস্ট অফিসে কোন ক্যাশ লেনদেন নেই বললে চলে। সোনালী ব্যাংক থেকে কেবল ক্যাশ (নগদ টাকা) আনার কাজে গাড়ি ব্যবহার হয়। অথচ গাড়ীর পিছনে খরচ আকাশ ছোঁয়া। যশোর ডাকঘরে সহকারী পোস্টমাস্টার জেনারেল (শিক্ষানবিশ) নাসরুল্লাহ ইবনে হাকিম অভিযোগের বিষয়ে বলেন, আমাকে দমিয়ে রাখার জন্য এক শ্রেণীর মানুষ অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি কোন দুর্নীতি বা অনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত নেই। কেউ প্রমাণ করতে পারবে না।’ তিনি আরো জানান, যশোর প্রধান ডাকঘরে এক এলাকার ৩০/৩২ জন কর্মরত। একটি বংশের রয়েছে ১০/১২ জন। তারা সর্বদা নীতি নির্ধারকের ভূমিকায় থাকতে চায়। তাদের বাইরে কোন কথা বললেই নানা অভিযোগ আনা হয়। আমার ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয় নাই। এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। শুধু এই কাজ নয়। তিনি পূর্বে তৈরিকৃত ক্রয় কমিটিও বাতিল করেছেন। এবং তিনি নিজেই সকল প্রকার কেনাকাটা তার ব্যক্তিগত মর্জিতে বা তার ইচ্ছায় পরিচালিত হয়ে আসছে। যা আগে কখনো হয়নি। উল্লেখ্য, যশোর প্রধান ডাকঘরে আব্দুল বাকী ২০২২ সালের ২৫ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৭ জন গ্রাহকের সঞ্চয়ী হিসাব থেকে ১ কোটি ৭৮ লাখ ৫ হাজার টাকা তুলে নেন তিনি। ওই সব গ্রাহকের সঞ্চয়ী হিসাবে টাকা ছিল না। তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা না করেও তিনি অফিসের নথিতে টাকা জমা দেখান। এরপর ডেপুটি পোস্ট মাস্টার, দায়িত্বপ্রাপ্ত অপারেটর ও ১৭ আমানতকারীর নকল স্বাক্ষর করে তিনি টাকা তুলে নন। এক বছর ধরে কৌশলে গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে সরকারের টাকা সরিয়ে নেন পোস্ট মাস্টার আব্দুল বাকী।

সংবাদটি সেয়ার করে পাশে থাকুন

একই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved  2024
Design by JIT SOLUTION