জহুরুল ইসলাম
বীজতলা তৈরির প্রয়োজন নেই। গরু ছাগলের নষ্টের ভয় নেই। চারা রোপনে খরচও কম। সময়ও লাগে অল্প। বলছি জমিতে ধানের চারা রোপনের যন্ত্র ‘রাইস ট্রান্সপ্লান্টের’ কথা। আর এ কারণে ধানের চারা রোপনে এ যন্ত্রের দিকে ঝুঁকছেন যশোরের কৃষকরা। সোমবার (২৩ডিসেম্বর) ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বোরো মৌসুমে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় রাইস ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্রের মাধ্যমে বোরো (উফশী) ধানের সমলয় চাষাবাদে চারা রোপনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন যশোর জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম। উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন যশোর কৃষি বিভাগের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) সমরেন বিশ্বাস, কৃষি প্রকৌশলী মোঃ সুজাউল হক, সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ হাসান আলী, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার হুমায়ুন কবির, মোঃ জাহিদুর রহমান। যশোর সদর উপজেলার নওয়াপাড়া শালিয়াট গ্রামের জুয়েল হোসেন বলেন, ‘বিঘা প্রতি জমিতে বীজতলা থেকে ধানের চারা উঠানো এবং জমিতে চারা রোপণ করা পর্যন্ত কমপক্ষে পাঁচজন শ্রমিক লাগে। তাঁদের পারিশ্রমিক দিতে হয় ২ হাজার ৫শ টাকা। আর রাইস ট্রান্সপ্লান্টের মাধ্যমে প্রতি বিঘা জমিতে ধানের চারা রোপন করতে পেট্রোল লাগে ১৩০টাকার মতো। আর সর্বোচ্চ ৪০ মিনিটে এক বিঘা জমিতে এ যন্ত্র দিয়ে ধানের চারা রোপন করছি। কৃষক রাসেল ও রাজু আহমেদ, রুবেল হোসেন বলেন, এ পদ্ধতিতে জমিতে বীজতলা তৈরি করতে হয় না। ধানের বীজ চারা হয় ট্রেতে। প্রথমে ট্রেতে এক ইঞ্চি পরিমাণ ঝড়-ঝড়ে মাটি দিতে হবে। ধানের বীজ ফেলতে হবে ওই মাটির উপর। এরপর ওই ধানের বীজের উপর আবারও এক ইঞ্চি পরিমাণ ঝড়-ঝড়ে মাটি দিয়ে ধানের বীজগুলো ঢেকে রাখতে হবে। তারপর সেখানে পানি স্প্রে করতে হয়। ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে চারা রোপনে উপযোগী হয়ে উঠে। এরপর জমিতে ওই মেশিন দিয়ে চারা রোপন করতে হয়।’ যশোর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান আলী বলেন, জেলার দুটি উপজেলা যশোর সদর ও ঝিকরগাছায় এ প্রকল্পে মাধ্যমে চারা উৎপাদন ও রোপন করা হবে। যশোর সদর উপজেলার শালিয়াট গ্রামের ১৫০জন কৃষক তার জমিতে এ চারা রোপন করেছে। যশোর জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম বলেন, ২০১০ সাল থেকে এ প্রকল্প চালু রয়েছে। রাইস ট্রান্সপ্লান্টার’ যন্ত্রে মাধ্যমে ধান চাষে কৃষকের পাশাপাশি সরকারও লাভবান হচ্ছে। খরচ কম সে কারণে এ প্রযুক্তি ব্যবহারে কৃষিশ্রমিকের সংকট নিরসন এবং ব্যয়ভার নিয়ন্ত্রণ করাও সম্ভব। তুলনামূলক ফলনও বেশি এ পদ্ধতির চাষাবাদে। ১০ থেকে ১৫ দিন আগেই কাটার উপযোগী হয়ে থাকে এ ধান।’ তিনি আরও বলেন, দেশে দিনে দিনে শিক্ষিত বেকার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এজন্য শিক্ষিত যুবক আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে মাধ্যমে চাষাবাদ করতে পারে। এতে কৃষি আধুনিক হবে এবং বেকারত্ব কমবে বলে।মনে করি।