1. jitsolution24@gmail.com : admin :
  2. shantokh@gmail.com : Sharif Azibur Rahman : Sharif Azibur Rahman

বাজারে সয়াবিন তেল সংকট, মিলছে আরও পণ্য কেনার শর্তে

  • প্রকাশের সময় শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৯৭ বার সংবাদটি পাঠিত
বেশিরভাগ দোকানেই নেই সয়াবিন তেল (ছবি: প্রতিবেদক)

কণ্ঠ ডেস্ক

হঠাৎ করেই বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না সয়াবিন তেল। এলাকার মুদি দোকান থেকে পাইকারি বাজার; সবখানেই একই অবস্থা বিরাজমান। সয়াবিন তেল নেই। সয়াবিন তেলের এই সংকটে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই। এদিকে বাজারে যেসব দোকানে তেল পাওয়া যাচ্ছে, তারা বেশির ভাগই তা বিক্রি করছেন সঙ্গে অন্য কোনও পণ্য কেনার শর্তে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন ক্রেতারা। তারা অভিযোগ করছেন, আমাদের শুধু সয়াবিন তেলের প্রয়োজন থাকলেও সঙ্গে অন্যান্য পণ্য কিনতে বলছেন বিক্রেতারা। অন্য পণ্য না কিনলে তেল বিক্রি করছেন না। অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছেন, এমনিতেই তারা সয়াবিন তেল পাচ্ছেন না। কিছু কোম্পানি তেল দিলেও সঙ্গে ধরিয়ে দিচ্ছেন অন্যান্য পণ্য। এখন সেসব পণ্যের চাহিদা থাকুক আর না থাকুক, বাধ্য হয়ে রাখতে হচ্ছে। আর সেই শর্তই তারা দিচ্ছেন সাধারণ ক্রেতাদের ঘাড়ে।শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বরের কাঁচাবাজার ও মিরপুর ২ নম্বর মহল্লার মুদি দোকান ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। মিরপুর ১ নম্বরের কাঁচাবাজারের মুদি দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, সয়াবিন তেলের সংকটে ভুগছেন বিক্রেতারা। তেল রাখার জায়গাগুলোও ফাঁকা পড়ে আছে। হাতে গোনা কয়েক বোতল তেল আছে কোনও কোনও দোকানে। সয়াবিন তেলের তুলনায় বেশি রয়েছে সূর্যমুখী ও রাইস ব্র্যান তেল (চালের কুড়ার তেল)।বাজার করতে আসা অনেক ক্রেতাই তেল কিনতে এসে খালি হাতেই ফিরছেন। কেউ কেউ সয়াবিন তেল না পেয়ে কিনে নিচ্ছেন রাইস ব্র্যান তেল। এমনই একজন হচ্ছেন মারুফ ইবনে মান্নান। বেসরকারি এই চাকরিজীবী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বেশ কয়েক দিন ধরেই সয়াবিন তেল নিয়ে ভোগান্তির মধ্যে আছি। এলাকার দোকানেও তেল নেই, বাজারেও নেই। তাহলে আমরা কোথা থেকে কিনবো? দোকানদাররা বলছেন, সাপ্লাই নেই। হয়তো দাম বাড়াবে বলে কোম্পানিগুলো সাপ্লাই বন্ধ রেখেছে। আগের অভিজ্ঞতা থেকে এটাই ধারণা করতে পারি। সয়াবিন তেল না পেয়ে এখন রাইস ব্র্যান তেল নিয়ে যাচ্ছি।রফিকুল ইসলাম নামের আরেক ক্রেতা দোকানে দোকানে ঘুরছিলেন সয়াবিন তেল কেনার জন্য। এসময় কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি এক লিটার সয়াবিন তেল কেনার জন্য ঘুরছি; কিন্তু দোকানে তেল নেই। আর যেখানে পেলাম, সেখান থেকে শুধু সয়াবিন তেল বিক্রি করবে না। তার দোকান থেকে অন্য বাজার কিনতে হবে। অন্য কিছু তো আমার লাগবে না, তাহলে কেন শুধু শুধু অন্য কিছু কিনবো? আমার যা দরকার আমি তো সেটাই কিনবো নাকি…। আমি কোটিপতি না যে আমার টাকা খরচ করতে গায়ে লাগবে না। সবই হিসাবের টাকা।’আরেক বেসরকারি চাকরিজীবী আব্দুস সোবহান বলেন, ‘বাজারে তেলের সংকট, বেশিরভাগ দোকানই খালি। এক দোকানে গেলাম, দুই কেজি পোলাও চাল কিনেছি, পরে দুই লিটার সয়াবিন তেল কিনতে পারলাম। তেল বিক্রিটা এখন অনেকটা প্যাকেজ সিস্টেমের মতো হয়ে গেছে—একটা পণ্য কিনলে তেল পাওয়া যাবে, সেরকম। ‘অন্যান্য পণ্য না কিনলে সয়াবিন তেল বিক্রি করা হচ্ছে না’, ভোক্তাদের এমন অভিযোগের ভিত্তিতে দোকানে গেলে ‘নিউ সোনিয়া জেনারেল স্টোরের’ বিক্রেতা মো. নয়ন মাঝি বলেন, ‘আমি টাকা দিলেও কোম্পানি থেকে মাল পাই না। বিক্রি করতে পারলে তো আমারই ভালো। এখন তেলের সংকট, আর এখন মানুষ শুধু আসে তেল নিতে। আমি তাদের বলি, তেলের সঙ্গে অন্য কিছু নেন। কিন্তু তারা শুধুই তেল নিতে চায়।’ তিনি দাবি বলেন, ‘আমাকে ডিস্ট্রিবিউটরের থেকে সয়াবিন তেলের সঙ্গে সরিষার তেল নিতে হয়েছে। ৩৬ লিটার সয়াবিন তেল কেনার জন্য আমাকে ৪০ লিটার সরিষার তেল কিনতে হয়েছে। অথচ আমার দোকানে কিন্তু সরিষার তেল আছে। কিন্তু এটা না কিনলে তারা আমার কাছে সয়াবিন তেল বিক্রি করতো না। এর জন্য আমি সয়াবিন তেল বিক্রি করার সময় অন্য পণ্য কিনতে বলি, যাতে আমার লাভটা কিছুটা উঠে আসে। আশা করি কয়েক দিনের মধ্যে এই পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে।’ সেলিম জেনারেল স্টোরের বিক্রেতা মো. সেলিম বলেন, ‘আমার কাছে সয়াবিন তেল নেই। যা ছিল বিক্রি করে দিয়েছি। কোম্পানি থেকে সয়াবিন তেল নিলে তাদের পোলাও চাল নিতে হয়। সব কোম্পানিই এটি করছে। আমি দুই কার্টন তেল কিনেছি ৬ হাজার ৪২৪ টাকা দিয়ে। এর সঙ্গে আমাকে ৬ হাজার টাকার চাল কিনতে হয়েছে। এই হচ্ছে অবস্থা। তবে আমি অন্য মাল না কিনলে সয়াবিন তেল বিক্রি করবো না,এটি করি না। যার যা লাগে সেটাই কিনতে পারে।’ এদিকে মিরপুর দুই নম্বর এলাকার মুদি দোকানগুলো ঘুরেও একই চিত্র দেখা যায়। দোকানগুলোতে সয়াবিন তেল নেই। খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি করছেন অনেকে। সেখানকার ‘মোল্লা জেনারেল স্টোরের’ বিক্রেতা মো. জনি বলেন, ‘আমরা কোম্পানি থেকে তেল পাচ্ছি না। মাঝে দুই লিটারের বোতলের কিছু তেল দিয়েছিল। কিন্তু তেলের সঙ্গে পোলাও চাল কিনতে হয়েছে। এখন খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি করছি। প্রতি কেজি ১৯০ টাকা করে বিক্রি করছি।’ জিসান জেনারেল স্টোরের বিক্রেতা বলেন, ‘কোম্পানি থেকে সয়াবিন তেল দেয় না, তাই বিক্রিও করি না। মানুষ এসে ফিরে যায়। কী আর করার! আমার হাতে তো আর কিছু নাই।‘

সংবাদটি সেয়ার করে পাশে থাকুন

একই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved  2024
Design by JIT SOLUTION