স্টাফ রিপোর্টার
রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী ও ধর্মীয় সংগঠনের সহযোগিতা থাকায় এবারের দুর্গোৎসব বিগত বছরের চেয়ে আরও বর্ণিল আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে উদ্যাপিত হবে এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন যশোর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ নেতৃবৃন্দ। সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় সভায় যশোর জেলা পূজা উপদযাপন পরিষদ নেতৃবৃন্দ এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সোমবার শহরের লালদীঘিপাড়স্থ হরিসভা মন্দিরে এ এ মতবিনিমিয়সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পূজা পরিষদ নেতৃবৃন্দ জানান, বিগত বছরে দুর্গোৎসবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে এক ধরণের ভীতি কাজ করতো। কিন্তু এবারের দুর্গোৎসবে ভয়ের কোন কারণ নেই। কারণ রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী, ধর্মীয়, সামাজিক সংগঠনগুলো যে যার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক বিএনপি সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী ধর্মীয় সংগঠনের পক্ষ থেকেও সহযোগিতা করা হচ্ছে। জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি দীপংকর দাস রতনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় বক্তব্য রাখেন দৈনিক লোকসমাজ পত্রিকার প্রকাশক শান্তনু ইসলাম সুমিত, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবু মোর্তজা ছোট, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, সম্পাদক এস এম তৌহিদুর রহমান, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য হাবিবা শেফা, বাঁচতে শেখার নির্বাহী পরিচালক অ্যাঞ্জেলা গোমেজ, যশোর কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তাক হোসেন শিম্বা, উদীচী যশোরের সহ-সভাপতি অ্যাড. আমিনুর রহমান হিরু, সচেতন নাগরিক কমিটি যশোরের সভাপতি অধ্যক্ষ শাহীন ইকবাল, জেলা বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদক তসলিম-উর-রহমান, নতুন পাবলিক কলেজের অধ্যক্ষ মোয়াজ্জম হোসেন, জয়তী সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক অর্চনা বিশ্বাস, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হারুন অর রশীদ প্রমুখ। সভায় বক্তারা বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশ। যে দেশে হিন্দু মুসলিম বিভাজন বলে কিছু নেই। এই দেশ সকলের। এই দেশে এক সাথে মিলেমিশে আমরা বড় হয়েছি। একে অপারের ধর্মীয় উৎসবে অংশ নেওয়া এটা আমাদের সংস্কৃতি। পরিকল্পিতভাবে কেউ যদি এই সংস্কৃতির আবহাওয়াকে পরিবর্তন করতে চায় হিন্দু সম্প্রদায় যশোরবাসীকে সাথে নিয়ে সেটা প্রতিহত করবে। তারপরও বিচ্ছিন্নভাবে কোন ঘটনা যদি ঘটেও থাকে সেটা যেন বড় কোন ইস্যু না হয় এ বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। এখন বিভেদের সময় না, সবাই মিলে উৎসব উদ্যাপনের সময়। বক্তারা আরো বলেন, এবারের দুর্গা উৎসব সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণভাবে উদ্যাপনে প্রশাসনের চেয়ে রাজনৈতিক শক্তির সহযোগিতায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ গেল ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর বেশ কয়েকদিন কোথায় পুলিশ প্রশাসন মাঠে ছিল না। তারপরও জননিরাপত্তায় নিরপদ ছিল হিন্দু সম্প্রদায়। বিশেষ করে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্বোচ্চ সুরক্ষা দিয়েছেন। তিনি নিজে মাঠে থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উপাসনালয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তাদের বাড়ি-ঘর পাহারা দিয়েছেন। সেই সাথে অন্যান্যা রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, সাধারণ মানুষের বাড়ি-ঘর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সুরক্ষা দিয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত যশোরের পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে দলীয় নেতাকর্মীদেরও ছাড় দেননি। শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে তিনি সর্বোচ্চ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছেন। আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসব নিñিদ্র নিরাপত্তা আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে উদ্যাপন নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। জেলা থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যায়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মন্দির পাহারা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। অথচ বিগত শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে যশোরেই সংখ্যালঘু নির্যাতনের অনেক ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে।