নিঃস্ব হচ্ছে মধ্য ও নিন্ম শ্রেণীর মানুষ
বিশেষ প্রতিবেদক
সাংসারিক ও ব্যবসায়ের প্রয়োজনে চেকে অগ্রীম স্বাক্ষর দিয়ে সুদে কারবারিদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় টাকা নেয়। আবার অনেকে স্বর্ণালংকার রেখে বা বাড়ির দলিল ও সাদা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে টাকা নেয়। অভিযোগ রয়েছে প্রভাবশালী সুদখোর তাদের কারবার নির্বিঘেœ চালাতে নিজ নিজ এলাকার দালাল, ক্যাডার ও সন্ত্রাসীদের মাসোহারা দিয়ে থাকে। প্রভাবশালীদের মত অন্যান্য সুদে ব্যবসায়ীরা একই প্রথা অবলম্বন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সুদে কারবারিরা কর ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে রাতারাতি লাখোপতি বনে যাচ্ছে। এলাকার হত দরিদ্র সাধারণ মানুষ এদের নির্মম নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, যশোরের মণিরামপুর উপজেলা ১৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এ উপজেলার অধিকাংশ মানুষ দিনমজুরীর কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। তারপরও ভবদহের স্থায়ী জলাবদ্ধতার কারণে উপায়ন্তর না পেয়ে সুদে মহাজনদের কাছ থেকে অধিক মুনাফায় টাকা নিয়ে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। এক শ্রেণীর মানুষ এটাকে পুঁজি করে চালাচ্ছে রমরমা সুদের কারবার। চড়া সুদে টাকা খাটিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সুদ কারবারিরা। তাদের দৌরাত্ম্য উপজেলার এক শ্রেণীর মানুষ দিন দিন নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে ফুলে ফেঁপে বড় হচ্ছে আরেক শ্রেণীর মানুষ। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে সুদে কারবারিরা এমন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সুদখোরদের তালিকা তৈরি ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি সচেতন এলাকাবাসীর। ভূক্তভোগীরা জানিয়েছেন, মণিরামপুর পৌরসভাসহ ১৭টি ইউনিয়নে একাধিক ব্যক্তি সুদের কারবার চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া মুদি, দর্জি, চাল ও কাপড় ব্যবসায়ীরাও সুদকারবারের সাথে জড়িত। স্বল্প বেতনে সরকারি ও বেসরকারী বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং খেটে খাওয়া দিনমজুরী মানুষেরা চড়া সুদের ফাঁদে পড়েন। সুদকারবারীরা অধিক মুনাফায় টাকা ধার দেন এবং মাসের পর মাস এর সুদ নিয়ে থাকেন। একজন ঋণ গ্রহীতা আসল টাকার দ্বিগুণ তিনগুন টাকা পরিশোধ করেও দেনা মুক্ত হতে পারে না। সুদের টাকা পরিশোধ করতে অনেকেই সহায় সম্বল বিক্রি করে পথে বসেছে। মণিরামপুর পৌরসভার এক ব্যবসায়ী সুদ কারবারিদের সুদের টাকা পরিশোধ করতে পেরে এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন। অনেকে সুদ কারবারিদের খপ্পরে পড়ে আত্মহত্যাও করেছেন। আবার অনেকে সুদের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে সহায় সম্বল বিক্রি করে এলাকা ছেড়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, এক সুদে কারবারির কাছ থেকে টাকা সুদে নিয়েছিলাম। কিন্তু সমস্যার কারণে সুদের টাকা বাকি পড়ায় আমার জমিজমা ও বসতভিটা দখল করতে চলে আসে। এবিষয়ে মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ এবি এম মেহেদী মাসুদ বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।