নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে গত দুইদিনে ১৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ভারি বর্ষণে তলিয়ে গেছে যশোর শহরের নিম্নাঞ্চল। বাসাবাড়ি থেকে শুরু করে রান্নাঘর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ভিতরে হাঁটু সমান পানি। বিশেষ করে ৫, ৬, ৭, ৮ ও ৯ নাম্বার ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতায় জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। বাসাবাড়ি ও রান্নাঘরে জলাবদ্ধতার কারণে রান্না করার কোনো ব্যবস্থা নেই। যার কারণে আধাপেটে বা না খেয়ে দিন পার করছেন ওয়ার্ড পাঁচটির নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা।এমন পরিস্থিতিতে এসব পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে যশোর বিএনপির নেতাকর্মীরা। রোববার রাতে ওয়ার্ডগুলোতে ঘুরে ঘুরে রান্নাকরা খাবার বিতরণ করেছেন তারা। বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতার মধ্যে এসব খাবার পেয়ে খুশি জলমগ্ন এসব বাসিন্দা। ঘোষণা দিয়েছেন যতদিন জলাবদ্ধতা থাকবে, ততদিন এই কর্মসূচি চলমান থাকবে।ওইদিন রাতে সরেজমিনে দেখা গেছে, যশোর ৭ নাম্বার ওয়ার্ডে শংকরপুর এলাকায় বাসাবাড়ি, সড়কে হাটু সমান পানি জমে আছে। জলাবদ্ধতার কারণে পরিবার-পরিজন নিয়ে খাটের উপরে অবস্থান করছেন। রান্নাঘর, ঘরের মেঝেতে হাঁটুসমান পানি থাকাতে রান্না করার কোন ব্যবস্থা নেই। অনেকেই শুকনা খাবার খেয়ে দিন পার করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে বড় বড় ডেক্সিতে বা হাঁড়িতে রান্না করে খাবার বিতরণ করতে দেখা গেছে।শহরের শংকরপুর গোলপাতা মোড়ের বাসিন্দা জমিরন বেগম নামে এক মহিলা বলেন, গত দুইদিন ধরে সারাদিন বৃষ্টি। বৃষ্টিতে ঘরে রান্নাঘরে পানি উঠেছে। ঘরবাড়িতে হাঁটু পানি। ছেলে মেয়েরা সব না খেয়ে। রোববার রাতে বিএনপির নেতাকর্মীরা রান্না করা খাবার দিয়েছেন। তিনি ও তাঁর পরিবারের পাঁচ সদস্য খাবার পেয়েছেন।নজরুল ইসলাম নামে এক বাসিন্দা বলেন, আমার ঘরেও পানি উঠেছে। হাঁটুপানি সব জায়গায়। বাসাবাড়িতে চাউল আছে, তবে রান্না করার কোন জায়গা নাই। এমন পরিস্থিতির মধ্যে এখন খাবারের সংকট। রাতে রান্না করা খাবার পেয়ে খুব ভালো লাগছে। বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, যশোরে গত দুইদিন ধরে বৃষ্টিতে শহরের নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা। তাছাড়া দিনভর বৃষ্টিতে অনেক খেটে-খাওয়া মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। একদিকে জলাবদ্ধতা আরেকদিকে কর্মহীন মানুষ। ফলে শহরের নিম্নাঞ্চলে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে রান্না করে খাবার দেওয়া হচ্ছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে জেলা যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা কাজ করছে। এসব নেতাকর্মীরা রান্না করে তারাই আবার শহরের নিম্নাঞ্চলে বাসিন্দাদের মাঝে খাবার বিতরণ করে বেড়াচ্ছে। যতদিন এই জলাবদ্ধতা থাকবে,ততদিন এই কার্যক্রম চলমান থাকবে। তিনি বলেন, শুধু খাবার দিলে হবে না। এসব ওয়ার্ডগুলোতে পানি নিষ্কাশনের জন্য স্থায়ী সমাধান করতে পৌরকর্তৃপক্ষের সঙ্গে বসা হবে।