সাবেক তথ্যপ্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত ও সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদের নেতৃত্বে ‘আলো আসবেই’ নামক একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রæপের কিছু স্ক্রিনশট সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল হওয়া কিছু স্ক্রিনশটে দেখা গেছে দলীয় ট্যাগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে কথা বলেছেন বেশ কয়েকজন শিল্পী। ‘আলো আসবেই’ নামক সেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রæপে সাবেক তথ্যপ্রতিমন্ত্রী এ আরাফাত ও সংসদ সদস্য ফেরদৌসসহ ছিলেন অভিনেত্রী শামীমা তুষ্টি, চিত্রনায়ক রিয়াজ, সাজু খাদেমসহ অনেকেই। তবে প্রকাশিত স্ক্রিনশটে সক্রিয় ছিলেন অভিনেত্রী তানভীন সুইটি, সোহানা সাবা, অরুণা বিশ্বাসসহ কয়েকজন। গ্রæপটিতে যাদের নিয়ে নানারকম মন্তব্য করা হয়েছে, তাদের মধ্যে অন্যতম অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান। বিয়য়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন সাদিয়া। তিনি বলেন, ‘গত মঙ্গলবার কয়েকঘণ্টা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছিলাম না। রাতে দেখতে পাই, কয়েকজন আমাকে কথোপকথনগুলো পাঠিয়েছেন। সেগুলো পড়ি। তবে, খুব বেশি অবাক হইনি। এসব লিখে তারা তাদের মানসিক অবস্থার জানান দিয়েছেন।’ এসময় সাদিয়া আরও বলেন, ‘আন্দোলনের সময় আমি ফেসবুকে সরব ছিলাম। আমার লেখাগুলো মানুষের কাছে গেছে। ক্ষমতার পালাবদল না হলে তারা আমার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিতেন, তা আমি বুঝতে পারি। আরও অনেকের বিরুদ্ধেই নিতেন।’ আন্দোলনকারীদের ওপর ‘গরম জল দিলেই হবে’ বলে আলোচিত গ্রæপটিতে মন্তব্য করেছেন চিত্রনায়িকা অরুণা বিশ্বাস।
তার এই মন্তব্য সম্পর্কে সাদিয়া বলেন, ‘একজন সিনিয়র শিল্পী লিখেছেন, গরম জল দিলেই হবে। আমি আশ্চর্য হয়েছি। এসব লিখে ছোট মনের পরিচয় দিয়েছেন।’ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া অভিনেতা মিলন ভট্টাচার্য সাদিয়ার ছবি ‘আলো আসবেই’ গ্রæপে দিয়েছেন। এ বিষয়ে সাদিয়া বলেন, ‘দেখুন, মিলন দার সঙ্গে আমি অভিনয় করেছি। একটি সিরিজ করেছি। শুটিংয়ে তাকে অনেক আন্তরিক মনে হয়েছে। অনেক সময় আমার স্ট্যাটাসে তিনি মন্তব্যও করেছেন। দেখা হলে আন্তরিকতা নিয়ে কথা বলেছেন সবসময়। অথচ তিনিই আমার কথা গ্রæপে লিখেছেন। তাহলে কাকে বিশ্বাস করব?’ ওই গ্রæপটিতে আন্দোলনের পক্ষে থাকা শিল্পীদের নিয়ে নানারকম মন্তব্য করা হয়েছে, ভয়-ভীতি দেখানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সাদিয়ার ভাষ্য, ‘শিল্পীদের এমন আচরণে কষ্ট পেয়েছি। শিল্পীদের এসব মন্তব্যেও কষ্ট পেয়েছি। কোথায় তারা গণহত্যাকে ঘৃণা করবেন, শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াবেন-অথচ উল্টো অন্যায়কে প্রশ্রয় দিয়েছেন।’ মিলন সম্পর্কে সাদিয়া আরও বলেন, ‘মিলন দা আমাকে রাতে সরি লিখেছেন, ভয়েস মেসেজ পাঠিয়েছেন। আমি জবাব দিইনি। কষ্টটা এখনো রয়ে গেছে।’ আন্দোলনের সময়গুলোর কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘সেই সময়ে লেখালেখি করায় আমার রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড কী, আমি কে, এসব জানতে চাওয়া হয়েছে। সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া যে সেই সরকারের পতন হয়েছে। তা না হলে আমিসহ আরও অনেককেই বিপদে ফেলত ওরা।’ এক প্রশ্নের জবাবে সাদিয়া বলেন, ‘মানুষ তাদের চিনতে পেরেছে। কিছু শিল্পীর মুখোশ উন্মোচন হয়েছে। তাদের আসল চেহারা প্রকাশ পেয়েছে। গণহত্যার বিরুদ্ধে যদি তারা কথা বলতো, তাহলে মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হতো। তাদের মানসিকতা দেখে লজ্জা পাচ্ছি।’ ‘আমি সত্যর পক্ষে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে। যারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে, তাদের সঙ্গে আমি নেই। এ জন্যই আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের পক্ষে ছিলাম। আমার জায়গা থেকে প্রতিবাদ জানিয়েছি,’। আগামীতে ইফতেখার আহমেদ ফাহমির ‘পুতুল পুতুল খেলা’ নাটকে দেখা যাবে এ অভিনেত্রী। এতে তার বিপরীতে রয়েছেন জোভান।