স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর)
যশোরের মনিরামপুরে বাজার কমিটি ও পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি তুলসি বসুসহ দুই ব্যবসায়ীর কাছে মোবাইল ফোনে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় হৈচৈ পড়ে যায়। ফলে নড়েচড়ে বসে বিএনপির নেতৃবৃন্দ। পরে অনুসন্ধান করে চাঁদা দাবি করা মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে প্রকৃত দোষি ব্যক্তিকে সনাক্ত করা হয়। দোষি ব্যক্তিরা হলেন পৌরশহরের ব্যবসায়ী আওয়ামী লীগ কর্মী প্রভাত কুন্ডু ও তার বেয়াই চিত্তরঞ্জন কুন্ডু। তারা দুজনে চাঁদাবাজির ঘটনায় জড়িত থাকার সত্যতা স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এ ব্যাপারে বিএনপির পক্ষ থেকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ ও বাজার কমিটির সভাপতি তুলসি বসু জানান, কয়েকদিন আগে তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে অপরপ্রান্ত ০১৯৭৪-৯৩১৬৬৩ নম্বর থেকে কল করা হয়। এ সময় তুলসি বসুকে বড় ব্যবসায়ী উল্লেখ করে খরচ বাবদ তার কাছে পাঁচলাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। বিষয়টি তুলসি বসু তার কয়েকজন ঘনিষ্ট ব্যক্তিকে জানিয়ে রাখেন। পরবর্তিতে পৌরসভার অপর ব্যবসায়ী হাকোবা গ্রামের প্রভাত কুন্ডুর কাছেও ওই নম্বর থেকে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। প্রভাত কুন্ডু বিষয়টি জেলা বিএনপির এক নেতার মাধ্যমে খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক(ভারপ্রাপ্ত) অনিন্দ্য ইসলাম অমিতকে অবহিত করেন। কেন্দ্রীয় নেতা অমিতের নির্দেশে জেলা ও থানা বিএনপির নেতৃবৃন্দ বিষয়টি উদঘাটনে বেশ নড়েচড়ে বসেন।
থানা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল হোসেন জানান, চাঁদা দাবি করা মোবাইল নম্বর যাচাই বাছাই করে দেখা যায় ওই মোবাইল ফোনের মালিক প্রভাত কুন্ডুর বেয়াই(ভাইয়ের বেয়াই) চিত্ত রঞ্জন কুন্ডুর। চিত্ত রঞ্জন কুন্ডু অরফে তপন কুমার নন্দী খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার মধুগ্রামের মৃত পঞ্চানন কুন্ডুর ছেলে।
গত সোমবার রাত নয়টার দিকে খবর দিয়ে প্রভাত কুন্ডু ও চিত্ত রঞ্জন কুন্ডুকে মনিরামপুরে আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে প্রভাত কুন্ডু এবং চিত্ত রঞ্জন কুন্ডু তাদের অপকর্মের (চাঁদাবাজি)কথা স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। প্রভাত কুন্ডু জানান, সম্প্রতি তার বাড়িতে দূর্বৃত্তরা ভাংচুর করলে পরিত্রান পেতে স্থানীয় দুইজন সাংবাদিকের পরামর্শে তিনি বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতকে মোবাইল ফোনে অবহিত করেন। শহীদ ইকবাল হোসেন জানান, আ’লীগ কর্মী প্রভাত কুন্ডু একজন চিহ্নিত চোরাচালানী। ফলে নিজে চাঁদাবাজির নাটক করে তার দায়ভার বিএনপির ওপর চাপানোর চেষ্টা করেছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) এবিএম মেহেদী মাসুদ জানান, অভিযোগ করা মাত্রই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।