মাগুরা প্রতিনিধি
ভালো কাজে স্বীকৃতি হিসেবে মাগুড়া জেলা প্রশাসন সম্মাননা পেয়েছেন পেঁয়াজ চাষে সফল খাঁন মো. আশরাফুল ইসলাম নামে এক কৃষক। ধান, পাট ও সবজি চাষের পাশাপাশি পেঁয়াজ চাষের মাধ্যমে স্থানীয় বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনে অবদান রাখায় তাকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়।সোমবার (৮ জুলাই) জেলা প্রশাসকের চাঁদের হাট সম্মেলন কক্ষে মাগুরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ সভাপতিত্ব করেন। সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মাগুরা-২ আসনের সংসদ সদস্য ড. বীরেন শিকদার।‘ভালো কাজের নাগরিক অনুশীলন, স্বীকৃতি দেবে মাগুরা জেলা প্রশাসন’ প্রতিপাদ্য সামনে নিয়ে পেঁয়াজ চাষি মো. আশরাফুল ইসলামের পাশাপাশি সেচ্ছাসেবকমূলক সংগঠনসহ ৩২ জনকে সম্মাননা প্রদান করে জেলা প্রশাসন।খাঁন মো. আশরাফুল ইসলাম মাগুড়ার শ্রীপুর উপজেলার ছোট উদাস গ্রামের খাঁন মো. আইয়ুব আলীর ছেলে।জানা গেছে, মো. আশরাফুল ইসলাম ধান, পাট ও সবজি চাষের পাশাপাশি লাভজনক ফসল হিসেবে তিনি পেঁয়াজ চাষ করে থাকেন। তিনি বর্তমানে বছরে প্রায় ৭ একর জমিতে পেঁয়াজ চাষের সঙ্গে পেঁয়াজের বীজও সংরক্ষণ করেন। যেখানে নিজে লাভবান হওয়াসহ প্রায় ৫ শত নারী-পুরুষ কাজ করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। পেঁয়াজ চাষে তার এ উদ্যোগ অনেক বেকার যুবককে পেঁয়াজ চাষসহ অন্যান্য কৃষিকাজের প্রতি উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করছে।সম্মাননা পেয়ে অনুভূতি জানাতে গিয়ে মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্মননা দেওয়ায় আমি অভিভূত, আনন্দিত। এ স্বীকৃতি আমার কাজকে আরও বেগবান করবে। পাশাপাশি আগামীতে আমি পেঁয়াজসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদনে আরও বেশি উৎসাহিত হবো। ভবিষ্যতে কৃষিকে আরও সমৃদ্ধ করতে চাই। প্রশাসনের এমন উদ্যোগ জেলার কৃষিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস।ভালো কাজে স্বীকৃতি হিসেবে সংবর্ধনা পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন সঞ্জিবন কুমার বিশ্বাস, মো. আমিরুল হক, মো. শাহিন ফকির (নিজ উদ্যোগে রাস্তা নির্মাণ), অর্পিতা বিশ্বাস, উম্মে কুলসুম, ড. নজরুল ইসলাম (লেখক), মোহাম্মদ নূর ইসলাম (ফলজ), ব্রজেন্দ্রনাথ বালা (ক্যাপসিকাম চাষি), মো. নাছির হোসেন (ড্রাগন ও বরই চাষি), মো. তৈয়বুর রহমান (পাট বীজ উৎপাদনকারী), গোপাল চন্দ্র পাল (ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্পী), কবিতা বিশ্বাস (নারী কৃষি উদ্যোক্তা), আরিফ হাসান (ক্রীড়া সাংবাদিক), মোছা. তাসলিমা খাতুন (সবজি ও হাঁস মুরগি পালন), মো. মোহন বিশ্বাস (মিষ্টি উৎপাদনকারী), হরশিত বিশ্বাস (তালগাছি), খাঁন মো. আশরাফুল ইসলাম (পেঁয়াজ চাষি), নওশের পরামানিক, দারাসার বেগম, সাদ্দাম হোসেন গোকি (ক্রিকেট কোচ), সাব্বির আহমেদ, শ্রীবাস রায় (বেহালাবাদক), ডা. পঙ্কজ কান্তি মণ্ডল (অর্থোপেডিক সার্জন), মো. মাহমুদুর রহমান সজীব (সফল খামারি), মো. সুমন পারভেজ (মুরগি খামার) মো. আলমগীর হোসেন (খামারি), অছিউজ্জামান বুলবুল (শিক্ষক), পংকজ কান্তি আইচ, কিশোর কান্তি বিশ্বাস, শেখ হাবিবুল দেশ, সোহানুজ্জামান খান। এ ছাড়া মহকুমা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে ভালো কাজের নাগরিক অনুশীলনের স্বীকৃতি হিসেবে ফুলের তোড়া, মেডেল ও শুভেচ্ছা স্মারক তুলে দেওয়া হয়।জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ২০২৩ সালের ২৬ মার্চ থেকে শিক্ষা, শিল্প, সাহিত্য-সংস্কৃতি, উদ্ভাবন, কৃষি, ক্রীড়া, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ পর্যন্ত জেলার মোট ১১৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে ভালো কাজের নাগরিক অনুশীলনের জন্য সম্মাননা প্রদান করেছে।জেলা প্রশাসক অফিস সূত্রে জানা যায়, বর্তমান জেলা প্রশাসক আবু নাসের বেগ ২০২২ সালে যোগদান করার পর এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে ২০২৩ সালে ২৬ মার্চ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষা, শিল্প, সাহিত্য-সংস্কৃতি, উদ্ভাবন, কৃষি, ক্রীড়া, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিশেষ অবদানে নাগরিক স্বীকৃতি প্রদানের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।জেলায় বিভিন্ন ভালো কাজে স্বীকৃতি হিসেবে নিয়মিত জেলা প্রশাসন লিখিত স্বীকৃতি পত্র ও শুভেচ্ছা স্মারক বিতরণ করে আসছে। এ পর্যন্ত জেলার মোট ১১৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে ভালো কাজের স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে।বিশেষ অতিথি ছিলেন মাগুরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আব্দুল কাদের, মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ফ ম আব্দুল ফাত্তাহ, মাগুরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ মন্ডল, শালিখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হরেকৃষ্ণ অধিকারী, শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ মহল, জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জাকির হোসেন, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. ইয়াছিন আলী প্রমুখ।