ইব্রাহিম খলিল
সাতক্ষীরা কলারোয়া “সরসকাটি ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়” ১৭ লক্ষ টাকায় মনোনীত, করা সেই প্রার্থীকে অবশেষে একটি সাজানো পাতানো নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তীর্ণ করার অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, মেধা নয় শুধুমাত্র টাকার বিনিময়ে নিয়োগ কমিটির সদস্যদের কে ম্যানেজ করে নিয়োগ বানিজ্য অপকর্মে পার পাচ্ছে দূর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। এর আগে ২৮ জুন শুক্রবার অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কর্তৃক তাদের মনোনীত ও চুড়ান্ত করা প্রার্থীর মাঝে প্রশ্নপত্র ফাঁস করা হয়। এর পর ২৯ জুন শনিবার একটি সাজানো পাতানো নিয়োগ বোর্ডের মাধ্যমে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী অফিস সহায়ক পদে মনোনীত ও চুড়ান্ত করা প্রার্থী সুশান্ত গুপ্ত কে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করানো হয়। আর এসব প্রশ্নপত্র ফাঁস করা থেকে শুরু করে প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির ১৭ লক্ষ টাকা উৎকোচ বানিজ্য সহ প্রার্থী চুড়ান্ত অপকর্মে সহযোগিতা করেন নিয়োগ কমিটির সদস্য ডিজি প্রতিনিধি ও তালা “শহীদ আলী আহম্মদ সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়” এর প্রধান শিক্ষক অলোক কুমার তরফদার, কলারোয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জয়নাল আবদীন, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি কলারোয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল ইমরান। গত ২৮ ও ২৯ জুন “সরসকাটি ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়” এর প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দীন ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শামসুদ্দীন আল মাসুদ কর্তৃক নিয়োগ বোর্ডের আগে কলারোয়া উপজেলার জয়নগর ইউনিয়ন এর খোদ্দবাটরা গ্রামের সুশান্ত গুপ্ত কে ১৭ লক্ষ টাকার বিনিময়ে অফিস সহায়ক পদে চুড়ান্ত এবং পরীক্ষার আগে নিয়োগ কমিটির সদস্যদের ম্যানেজ করে প্রশ্নপত্র ফাঁস করার মধ্য দিয়ে যে কোন মুল্যে তাকে নেওয়া হবে মর্মে সংবাদটি বিভিন্ন প্রিন্ট পত্রিকা, পত্রিকার অনলাইন পোর্টাল সহ একাধিক অনলাইন পোর্টালে প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশ করা সত্বেও কলারোয়া সরসকাটি ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিয়োগ কমিটির দায়িত্বশীল সদস্যরা কোন প্রকার ভ্রুপক্ষেপ না করে সুশান্ত গুপ্ত কে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করেন অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ প্রদান করার লক্ষ্যে। গত ২৮ জুন উল্লেখিত নিয়োগ কমিটির সদস্যরা সাংবাদিকদের কাছে দেওয়া বক্তব্যে তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে নিজেদের ইমেজ বাড়ানোর তাগিদে স্বচ্ছতার বাণী শোনালেও প্রকৃতপক্ষে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের জারিকৃত নতুন পরিপত্রের নীতিমালা নির্দেশনা থাকলেও টাকার মোহে আকৃষ্ট হয়ে নিজেদের নীতি নৈতিকতা আদর্শকে বিসর্জন দিয়ে দায়িত্বশীল বাক্তিরা নিয়োগ বানিজ্য অপকর্মে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করছে। তাই বলা চলে যারাই রক্ষক তারাই এখন ভক্ষক। জাতি এদের থেকে কি আশা করবে এমন অভিমত ব্যক্ত করেন সুশীল সমাজ সহ সচেতন মহল।
প্রসঙ্গত “সরসকাটি ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়” অফিস সহায়ক পদে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দীন ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শামসুদ্দীন আল মাসুদ পরস্পর যোগসাজশে নিয়োগ বোর্ডের আগে একজন প্রার্থীকে টাকার বিনিময়ে মনোনীত ও চুড়ান্ত করেন। স্থানীয়রা জানান, নিয়োগ বোর্ডের পূর্বে অফিস সহায়ক পদে চুড়ান্ত করা প্রার্থী সুশান্ত গুপ্তর নিকট থেকে ১৭ লক্ষ টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেন অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দীন ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শামসুদ্দীন আল মাসুদ। কলারোয়া উপজেলার ১ নং জয়নগর ইউনিয়ন এর খোদ্দবাটরা গ্রামের বিজয় গুপ্তর ছেলে সুশান্ত গুপ্ত। অফিস সহায়ক পদে চাকরির নিমিত্তে প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দাবিকৃত ১৭ লক্ষ টাকার যোগান দিতেই সুশান্ত গুপ্তর বাবা বিজয় গুপ্ত তার ভাইপো সঞ্জিত গুপ্তর নিকট জমি বিক্রয় করেন। জমি বিক্রির তথ্যটি একাধিক ব্যক্তি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে টাকার জন্য বেপরোয়া হয়ে উঠেছে নিয়োগ কমিটির সদস্যরা। তারা নিয়োগ প্রতি ১ লক্ষ থেকে শুরু করে ২ লক্ষ টাকায় ম্যানেজ হয়ে পরীক্ষার আগে বিধিবহির্ভূত ভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস করছে। এ ছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কর্তৃক টাকায় মনোনীত প্রার্থীকে পাতানো নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তীর্ণ করছে বলে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৯ জুন শনিবার নিয়োগ বোর্ডের আগে নিয়োগ কমিটির সদস্যদের কে ম্যানেজ করে প্রশ্নপত্র ফাঁস, সাজানো পাতানো নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে ১৭ লক্ষ টাকায় চুড়ান্ত করা প্রার্থী সুশান্ত কে উত্তীর্ণ করায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বইছে।
এ বিষয় “সরসকাটি ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়” এর প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দীন এর সাথে মুঠো ফোনে একাধিক বার আলাপের চেষ্টাকালে আলাপ কলটি গ্রহণ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয় “সরসকাটি ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়” এর ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও পদাধিকারবলে নিয়োগ কমিটির সভাপতি শামসুদ্দীন আল মাসুদ এর সাথে মুঠো ফোনে আলাপকালে নিয়োগ বোর্ডের আগে ১৭ লক্ষ টাকায় সুশান্ত গুপ্ত কে অফিস সহায়ক পদে মনোনীত ও চুড়ান্ত করার ব্যাপারে গত ২৮ জুন বক্তব্য কালে তিনি অস্বীকার করেন। পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর সুশান্ত গুপ্ত কে অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ কমিটির সদস্যদের ম্যানেজ করে প্রশ্ন ফাঁস করা এবং চুড়ান্ত করা প্রার্থীকে পাতানো নিয়োগ বোর্ডের মাধ্যমে উত্তীর্ণ করার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করে বলেন, নিয়োগ বোর্ড স্বচ্ছ হয়েছে। এসিল্যান্ড সব কিছু নিজেই তদারকি করেছেন।
এ বিষয় ডিজি প্রতিনিধি তালা “শহীদ আলী আহম্মদ সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়” এর প্রধান শিক্ষক ও পদাধিকারবলে নিয়োগ কমিটির সদস্য অলোক কুমার তরফদার এর সাথে মুঠো ফোনে একাধিকবার আলাপের চেষ্টা কালে আলাপ কলটি গ্রহণ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ বিষয় কলারোয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জয়নাল আবদীন এর সাথে মুঠো ফোনে একাধিকবার আলাপের চেষ্টা কালে আলাপ কলটি গ্রহণ না করার তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি কলারোয়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নিয়োগ কমিটির সদস্য আব্দুল্লাহ আল ইমরান এর সাথে মুঠো ফোনে আলাপকালে কলারোয়া সরসকাটি ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কর্তৃক ১৭ লক্ষ টাকায় চুড়ান্ত করা অফিস সহায়ক পদে সুশান্ত গুপ্ত কে নিয়োগ প্রদান করা হবে মর্মে ২৮ জুন বক্তব্যে অবহিত করা স্বত্তেও তাকে উত্তীর্ণ করার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি শতভাগ ফেয়ার পরীক্ষা নিয়েছি। প্রশ্নপত্র ফাঁস করার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি নিজেই প্রশ্ন তৈরি করেছি ফাঁস হওয়ার কোন সুযোগ নেই। তবে ম্যানেজ হওয়ার ব্যাপারে তিনি অস্বীকার করেন।