সোহাগ হোসেন:যশোরের বেনাপোল পৈারসভার ব্যবহারের জন্য রাষ্টী সম্পদ ট্রাক,পিকআপ,রোলার সহ বিভিন্ন গাড়ির যন্ত্রাংশ দেয়া হলেও দীঘদনি ধরে ময়লার মধ্যে ফেলে রাখায় গাড়ি ও যন্ত্রাংশ গুলো ময়লা আবজনায় নষ্ট হচ্ছে দেখার কেউ নাই।পৌর ভবনের পেছনে অরক্ষিত ভাবে পড়ে আছে। সম্পদ অর্জনের মোহ নেই এই রকম মানুষ বর্তমান পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া দুর্বিষহ। শুধু অর্জন নয় সম্পদ রক্ষা বা বৃদ্ধির জন্য আপ্রাণ চেষ্টা যেন সবার ভেতর বিরাজ করে। ব্যক্তিগতভাবে সম্পদের পাহাড় গড়ার স্বপ্ন প্রত্যেকের মধ্যেই বিরাজ করে।মানুষের জীবন পরিচালনা করার জন্য সম্পদ একটি অপরিহার্য উপকরণ। রাষ্ট্রীয় সম্পদ ছাড়া কখনো ব্যক্তি বা রাষ্ট্রের উন্নয়ন কল্পনা করা যায় না। যে দেশের রাষ্ট্রীয় সম্পদের ব্যবহার যত যথাযথ, সে দেশের অর্থনৈতিক চাকা তত বেশি সমৃদ্ধ।দেশের অর্থনৈতিক গতিশীলতা অনেকটাই নির্ভর করে দেশের সকল সম্পদের সুষ্ঠু ও যথার্থ ব্যবহারের উপর। আমাদের দেশের রাষ্ট্রীয় সম্পদের ব্যবহার কীভাবে হচ্ছে তা বলা বাহুল্য। সবাই যখন পাহাড় পরিমাণ সম্পদ অর্জন আর সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণে ব্যস্ত তখন আমাদের দেশে যত্রতত্র নষ্ট হচ্ছে জাতীয় সম্পদ। যেগুলোর নেই কোনো ব্যবহার, নেই কোনো রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থা। অযত্নে, অবহেলায় পড়ে আছে প্রচুর পরিমাণ রাষ্ট্রীয় সম্পদ। রবিবার(২৫শে অক্টোবর)সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ট্রাক ও অন্যান্য গাড়ির যন্ত্রাংশ খোলা আকাশের নিচে অযত্নে অরক্ষিত ভাবে ময়লার মধ্যে পড়ে আছে। রোদ বৃষ্টি ধোলা ময়লা সঠিক ভাবে রক্ষনাবেক্ষণ না হওয়ার ফলে গাড়ি গুলো নষ্ট হয়ে জরাজির্ণ হয়ে গেছে।নেই কোন গাড়ি রাখার গ্যারেজের ব্যাবস্থা। কিছু গাড়ি মেরামত করলে চলাচলের উপযোগী হয়ে যাবে। কিন্তু পৌর কতৃপক্ষের কোন সজাগ দৃষ্টি সেদিকে পড়ে না।ছোট বড় মিলে ৫টি পিকআপ গাড়ি গুলোর ভেতর আবজনা গাছ বাসা বেঁধেছে।দেখে বোঝা যাচ্ছে যে কোন মুঘল আমলে গাড়ি গুলা রাখা হয়েছে। গাড়ির সংখ্যা বেশি হলেও ড্রাইভারের সংখ্যা ২ জন,ক্রেন ফরক্লিপের জন্য ২ জন ড্রাইভার ।যখন গাড়ির প্রয়োজন হয় তখন ড্রাইভার আসে।কাজ শেষ হলে যেখানে সেখানে গাড়ি রেখে চলে যায়।প্রতি মাসে সরকার নিধারিত বেতন নিতে ভুলে না গেলেও গাড়ি পরিচ্ছন্ন রাখতে ভুলে যায়।গাড়ি ধোঁয়া মোছা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন না করায় দ্রুত নষ্ট হচ্ছে।রাষ্ট্র যেমন নাগরিক হিসেবে আমাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয়, তেমনি নাগরিক হিসেবে আমাদেরও দায়িত্ব দেশের বা রাষ্ট্রের সম্পদের সুরক্ষা করা। কোনো অবস্থাতেই রাষ্ট্রীয় ক্ষতি করা যাবে না। দেশের প্রচলিত বিভিন্ন আইন রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিনষ্টকারীদের অপরাধী হিসেবে গণ্য করেছে। রাষ্ট্রীয় সম্পদের অনিষ্ট বা ক্ষতি করলে পেতে হবে কঠিন শাস্তি।দণ্ডবিধিতে কোনো সরকারি সম্পদের ক্ষতি করলে এর শাস্তির বিধান নিশ্চিত করা আছে। দণ্ডবিধির ৪৩১ থেকে ৪৩৮ পর্যন্ত ধারাগুলোতে রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিনষ্টকারীদের শাস্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে।রাষ্টীয় সম্পদ ব্যবহারে মানা হচ্ছে না কোনো বিধি নিষেধ। শুল্ক অফিসেও দেখা যায় পরিত্যাক্ত অবস্থায় বিভিন্ন যানবাহন ও আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে যেতে। এইভাবে দেশের বিভিন্ন সরকারি স্থাপনাসমূহতে কোটি কোটি টাকা সমমূল্যের রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় হচ্ছে নিরবিচ্ছিন্নভাবে। এসব দেখার জন্য যেন কেউ নেই। অবিলম্বে নষ্ট হতে যাওয়া এইসব সম্পদের মেরামতের মাধ্যমে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য করা উচিত। রাষ্ট্রের উন্নয়ন মানেই নাগরিকের উন্নয়ন।জনগনের অর্থ দিয়েই রাষ্টীয় সম্পদ ক্রয় হয়। বেনাপোল পৌর সচিব রফিকুল ইসলাম জানান,গাড়ির বিষয় সঠিক কিছু বলতে পারবো না।গ্যারেজের বিষয়ে কোন LGRD মন্ত্রালয় থেকে বরাদ্ধ নাই সে জন্য গ্যারেজ নাই।তিনি বলেন বেশি কিছু তথ্য সম্পর্কে জানতে পৌর ইজ্ঞিনিয়ারের সাথে কথা বলেন।গাড়ি গুলো পৌর সভার নিজের টাকায় কেনা না।এগুলো LGRD মন্ত্রালয়ের বরাদ্ধকৃত দেয়া। পৌর সিভিল ইজ্ঞিনিয়ার আবু সাঈদ জানান,এখানে কোন ম্যাকানিক্যাল ইজ্ঞিনিয়ার নাই এ সমস্থ তার কাজ।আমি এ বিষয়ে কোন তথ্য দিতে পারবো না। নাম না প্রকাশে একজন অভিযোগ করে বলেন, বছরের পর বছর এসব গাড়ি রোদে-বৃষ্টিতে রেখে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।নতুন২টি গাড়ি আসার পর পুরাতন গাড়ি চালানো হয় না।সরকার যদি নিলাম করে তাহলে নিলামে বিক্রয় হবে।ড্রাইভারা ১০থেকে ১৫ হাজারের বেশি বেতন পাই।এছাড়া গাড়ি গুলো সঠিক ভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করায় নষ্ট হচ্ছে।দ্রুত এসব গাড়ির চলাচলের জন্য মেরামত করা না হলে নিলামে দেয়ার জন্য দ্রুত LGRDমন্ত্রালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।