স্টাফ রিপোর্টার: যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তিন কিশোর খুন ও ১৫জন আহতের ঘটনায় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।মঙ্গলবার রাতে ই-মেইলে ২৭ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে।মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তদন্ত কমিটির প্রধান যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আবুল লাইছ। তবে তদন্তের বিষয়টি গণমাধ্যমে বলতে রাজি হননি তিনি।
তদন্ত কমিটির প্রধান যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আবুল লাইছ জানান, ২৭ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনে দিয়েছি। এতে ৮টি পর্যবেক্ষণ ও ১০টি সুপারিশ দিয়েছি। এছাড়াও কর্মকর্তাদের দায় দায়িত্ব নিরুপণ করেছি। ঘটনার কারণ উল্লেখ করেছি। ঘটনা পরবর্তী গৃহীত পদক্ষেপ যথাযথ ছিল কিনা সেটি উল্লেখ করেছি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১৪ আগস্ট যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আবুল লাইছকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। বাকি দুই সদস্য হলেন পুলিশ সুপারের একজন প্রতিনিধি ও সমাজসেবা অধিদফতর যশোরের উপপরিচালক।
কমিটিকে পাঁচ কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। গত ১৯ আগস্ট তদন্ত কমিটি আরও সাত দিন সময় চেয়ে আবেদন করে। সোমবার নাগাদ কমিটির প্রতিবেদন জমা হতে পারে বলে জানা গেছে।
অপরদিকে সমাজসেবা অধিদফতর গঠিত দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সেখানে কর্মকর্তাদের দায়িত্ব অবহেলা ও গাফিলতির প্রমাণ পেয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ আগস্ট যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে কিশোর ‘বন্দিদের’ অমানুষিক মারপিট করা হলে তিন কিশোর নিহত ও অন্তত ১৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনায় ১৪ আগস্ট রাতে নিহত কিশোর পারভেজ হাসান রাব্বির বাবা রোকা মিয়া যশোর কোতয়ালী থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলায় যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে কর্তৃপক্ষকে আসামি করা হয়। এ মামলায় কেন্দ্রের সহকারী পরিচালকসহ পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেফতার করা হয়।
তারা হলেন- যশোরের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহাদী হাসান কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক (সহকারী পরিচালক) আব্দুল্যা আল মাসুদ, সহকারী তত্ত্বাধায়ক (প্রবেশন অফিসার) মাসুম বিল্লাহ, ফিজিক্যাল ইন্সট্রাক্টর একেএম শাহানুর আলম, সাইকো সোস্যাল কাউন্সিলর মো. মুশফিকুর রহমান ও কারিগরি প্রশিক্ষক (ওয়েল্ডিং) ওমর ফারুক।
রিমান্ড শেষে ওই পাঁচ কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতারের পর পাঁচ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। রিমান্ড শেষে তারা কারাগারে রয়েছে।
একই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আদালতের নির্দেশে গত ১৬ ও ১৭ আগস্ট কেন্দ্রের বন্দি ৮ কিশোরকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়। তারা হলেন- গাইবান্ধার খালিদুর রহমান তুহিন, নাটোরের হুমাইদ হোসেন ও মোহাম্মদ আলী, পাবনার ইমরান হোসেন ও মনোয়ার হোসেন, রাজশাহীর পলাশ ওরফে শিমুল ওরফে পলান, কুড়িগ্রামের রিফাত আহমেদ ও চুয়াডাঙ্গার আনিছুজ্জামান।
আদালতে তাদেরকে চারদিন করে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে পুলিশকে। মঙ্গলবার তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হয়েছে। এছাড়াও পাঁচ সাক্ষী আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। তিন কিশোর বন্দি হত্যার ঘটনায় কর্মকর্তা ও বন্দিসহ মোট ১৩জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।