স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর) : যশোরের মনিরামপুর পৌরশহরে শিশু সন্তানের সামনে নেশাখোর স্বামীর হাতে জীবন দিতে হলো চুমকি চন্দ্র(২৪) নামে এক গৃহবধুকে। চুমকি চন্দ্র পৌরশহরের হাকোবা এলাকার মৃত্যুঞ্জয় দত্তের স্ত্রী। অভিযোগ রয়েছে পারিবারিক কলহের জেরে রোববার রাতে নেশাখোর স্বামীর সাথে চুমকি চন্দ্রের ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে স্ত্রীকে মারপিটের পর মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার পর স্বামী পালিয়ে যায়। আর এসব ঘটে তাদের একমাত্র সন্তান চার বছর বয়সী মেয়ে নেহা দত্তের সামনে। একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী শিশু নেহা তার মায়ের হত্যাকান্ডের দৃশ্য পুলিশসহ সকলের সামনে বর্ননা করেছে। পুলিশ সোমবার সকালে গৃহবধু চুমকির মৃতদেহ উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের মর্গে প্রেরন করে। পরে পুলিশ ঘাতক স্বামীকে আটক করে।
জানাযায়, পৌরশহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী তরুন চন্দ্রের এক মাত্র মেয়ে চুমকি চন্দ্রের সাথে হাকোবা এলাকার ট্রাক চালক কৃঞ্চ দত্তের ছেলে মৃত্যুঞ্জয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মৃত্যুঞ্জয় বেকার থাকায় চুমকির অভিভাবকরা এ সম্পর্ক মেনে নেয়নি। ফলে তারা ২০১১ সালে গোপনে বিয়ে করে। এক পর্যায়ে মৃত্যুঞ্জয় চুমকিকে নিজের(বাবার) বাড়িতে উঠিয়ে সংসার শুরু করে। ২০১৬ সালে তাদের একমাত্র মেয়ে সন্তান নেহার জন্ম হয়। এরই মধ্যে মৃত্যুঞ্জয় মাদকাসক্ত হয়ে ওঠে। চুমকির বাবা জানান, মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে মৃত্যুঞ্জয়কে যশোরে একটি কোম্পানীর এসআর(সেলস রিপ্রেজেনটেটিভ) পদে চাকুরির ব্যবস্থা করা হয়।চুমকির চাচাতো ভগ্নিপতি মিহির কুমারের অভিযোগ মৃত্যুঞ্জয় নেশা করে বাড়িতে এসে স্ত্রীর সাথে অহেতুক ঝগড়া করতো।এ নিয়ে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। এরই ধারাবাহিকতা হিসেবে রোববার রাতে মৃত্যুঞ্জয়ের সাথে চুমকির ঝগড়া হয়। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিল তাদের একমাত্র শিশু সন্তান নেহা দত্ত। ঝগড়ার এক পর্যায়ে মৃত্যুঞ্জয় চুমকিকে মারপিট করে।
একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী শিশু নেহা জানায়, মারপিটের পর বাবা তার মায়ের গলাটিপে ধরে এবং মাথা দেওয়ালের সাথে আঘাত করে। নেহা আরো জানায়, মা অজ্ঞান হয়ে পড়লে বাবা(মৃত্যুঞ্জয়) মায়ের মুখে বালিশ চাপা দেয়। রাত ১২ টার দিকে পরিবারের লোকজন টেরপেয়ে চুমকিকে উদ্ধারের পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরী বিভাগের ডা: সুমন নাগ তাকে মৃত ঘোষনা করেন। সোমবার সকালে পুলিশ সেখান থেকে চুমকির মরদেহ উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের মর্গে প্রেরন করে। পরে সহকারি পুলিশ সুপার(মনিরামপুর-সার্কেল) সোয়েব আহমেদ খান, ওসি(সার্বিক) রফিকুল ইসলাম, ওসি(তদন্ত) শিকদার মতিয়ার রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় নিহতের বাবা তরুন চন্দ্র বাদি হয়ে মামলা করেছেন। দুপুরে পুলিশ নিহতের স্বামী মৃত্যুঞ্জয়কে আটক করে।